কৃষক বন্ধু প্রকল্প চেক করার নিয়ম

Last Updated on: 8th মে 2022, 06:14 পূর্বাহ্ন

হ্যালো বন্ধুরা আজ আমরা বাংলার চাষীভাইদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষক বন্ধু প্রকল্প ও কৃষক বন্ধু প্রকল্প চেক করার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করবো।

হ্যাঁ, আমাদের আজকের বিষয় কৃষক বন্ধু প্রকল্প। বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটি প্রকল্প হয়ে উঠেছে কৃষক বন্ধু প্রকল্প। দরিদ্র কৃষকদের জন্য প্রকল্পটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। যারা এই প্রকল্পের আওতায় আসার জন্য আবেদন করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তীতে আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করার


প্রয়োজন হতে পারে। এই সকল কারণে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করার বিষয়টি অনেকেরই জানা
প্রয়োজন। তাই আপনি যদি এই বিষয়ে আগ্রহী হন, তবে আজকে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই উপকারী
হতে চলেছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কৃষক বন্ধু প্রকল্প কি এবং কিভাবে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের
উপভোক্তারা তাদের আবেদনের স্ট্যাটাস বা বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন, সে বিষয়ে বিশদে
আলোচনা করব।

কৃষক বন্ধু প্রকল্প চেক করার নিয়ম (How to check Krishak Bondhu Status)

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মহতী উদ্যোগে চালু হয়েছে কৃষক বন্ধু প্রকল্প। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৭২ লক্ষ কৃষক পরিবার আছে যাদের মধ্যে ৯৬% কৃষক পরিবার হত দরিদ্র বা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া গোত্রের। এই বিশাল পরিমান কৃষক পরিবার কে আর্থিকভাবে সাহায্য করতেই এই কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সূচনা।

জমি থাকা সত্ত্বেও, অর্থের অভাবে যারা চাষবাস করতে পারেননা, তাদের সকলকে বছরে দুই কিস্তিতে ১০০০০ টাকা দেওয়া হবে এবং কোনো কৃষকের মৃত্যু হলে বীমা স্বরুপ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিচালিত কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নথিভুক্ত কৃষক (ROR) এবং ভাগচাষী
(recorded Bhagchasi) এক একর বা তার অধিক কৃষিযোগ্য জমির জন্য বছরে ১০০০০ /- টাকা (আগে ছিল ৫০০০
টাকা) সহায়তা পেতে পারেন। এক একরের কম জমির ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে সহায়তা পাবেন। তবে বছরে
নূন্যতম ৪০০০/- টাকা (আগে ছিল ২০০০ টাকা) পাবেন।

এই টাকা মূলত দুই কিস্তিতে পাওয়া যায়। প্রথম কিস্তি খরিফ (Kharif) শস্যের মরশুমে এবং দ্বিতীয় কিস্তি রবি (Rabi) শস্যের মরশুমে। এছাড়া, এই প্রকল্পের আওতায় 18 থেকে 60 বছর বয়সের কৃষকদের আত্মহত্যা সহ দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে 2 লক্ষ টাকা বীমা হিসেবে প্রদান করা হবে।

তবে পশ্চিমবঙ্গের অনেক কৃষক-ই এখনও এই প্রকল্পের সুবিধা পাননা, নানাবিধ সমস্যার কারণে। তবে কৃষকরা
চাইলে ঘরে বসে নিজেদের কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন, আপনাদের টাকা ঢুকবে কি না
সেটাও চেক করতে পারবেন। একে বলা হয় krishak bandhu status check online। এর মাধ্যমে আপনি ঘরে
বসেই এক ক্লিকে চেক করতে পারবেন আপনার কৃষক বন্ধু ফর্ম সাবমিট হয়েছে কিনা এবং সেটা অ্যাপ্রুভ হয়েছে
কিনা।

কৃষক বন্ধু স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি:

  1. কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করার জন্য বা আইডি নম্বর দেখার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে কৃষক বন্ধু
    অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
  2. আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ব্রাউজার থেকে krishakbandhu.net ওয়েবসাইট ওপেন করতে হবে।
  3. এরপর “নথিভুক্ত কৃষকের তথ্য” নামাঙ্কিত অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।
  4. ক্লিক করার পর একটি সম্পূর্ণ নতুন পেজ আপনার সামনে ওপেন হয়ে যাবে।
  5. উল্লিখিত নতুন পেজটিতে আপনার ভোটার আইডি নম্বর চাওয়া হবে। সেটি আপনাকে নির্দিষ্ট বক্সে টাইপ করে
    দিতে হবে।
  6. এরপর ক্যাপচা কোড এন্ট্রি করতে হবে।
  7. তারপর সার্চ বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে।
  8. এরপরই আপনার সমস্ত তথ্য স্ক্রীনের উপর চলে আসবে।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করার পরবর্তী ধাপ:

  1. পূর্ববর্তী ধাপগুলো ফলো করলেই, আপনার অ্যাপ্লিকেশন আইডি, কৃষক বন্ধু আইডি, অ্যাপ্লিকেশন স্ট্যাটাস,
    ট্রানস্যাকশন স্ট্যাটাস ইত্যাদি সমস্ত তথ্য আপনি আপনার ফোনের স্ক্রিনে দেখতে পাবেন।
    2. এখান থেকেই আপনি কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আপনার আবেদনের বিষয়ে বিশদে জানতে পারবেন।
    3. এর পাশাপাশি আপনি আপনার কৃষক বন্ধু আইডি জানতে পারবেন। পরবর্তীকালে সুবিধার জন্য এর একটি
    প্রিন্ট আউট বার করেও রাখতে পারেন।
    উপরে লেখা ধাপগুলো ঠিকঠাক ভাবে অনুসরণ করলেই আপনি আপনার কৃষক বন্ধু প্রকল্পের স্ট্যাটাস
    সঠিকভাবে জানতে পারবেন।
    1.যদি আপনার আবেদনের স্ট্যাটাসে “approved” শব্দটি লেখা থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার আবেদনটি
    গৃহীত হয়েছে।
    2. যদি আপনার আবেদনের স্ট্যাটাসে “transaction success” লেখা থাকে, তাহলে বুঝতে হবে প্রকল্পের টাকা
    আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকে গেছে।
    3. যদি আপনার আবেদনের স্ট্যাটাসে “No Data Found” লেখা থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার আবেদনের
    স্ট্যাটাস এখনও সার্ভারে আপলোড করা হয়নি।
    ওয়েবসাইট খোলার পর স্ট্যাটাস যদি “No Data found” শো করে, আপনি আপনার আবেদন সম্পর্কে বিশদ
    বিবরণের জন্য আপনার ব্লকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অফ এগ্রিকালচার এর অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদনের পদ্ধতি (How to apply for Krishak Bondhu):


এই প্রকল্পে আবেদন করতে গেলে, আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। এই ফর্ম দুয়ারে
সরকার শিবিরে পাওয়া যাবে কিংবা নিকটবর্তী কৃষি দপ্তর অফিসে পাওয়া যাবে।

এছাড়াও অনলাইন থেকেও ডাউনলোড করা যাবে www.matirkatha.gov.in ও www.matirkatha. net এই দুটো ওয়েবসাইট থেকে কিংবা উপরের ডাউনলোড লিংক থেকেও। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই উদ্যোগে রাজ্যের অসংখ্য কৃষক উপকৃত হয়েছেন,বিশেষত গ্রামের দরিদ্র কৃষকরা

এই প্রকল্পের সাহায্যে চাষাবাদ থেকে আর্থিক উন্নয়ন করেছেন সাথে তাদের জীবনযাত্রাতেও এসেছে আমূল পরিবর্তন।

তাই যে বা যারা এখনও এই প্রকল্পের আওতায় নাম নথিভুক্ত করাননি অবিলম্বে আমাদের এই আর্টিকেলের সাহায্যে সহজেই বিষয়টি বোধগম্য করে আজই ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করান এবং আপনার ভবিষ্যৎকে আলোকিত করুন।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১২ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা।

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।