ছবি এডিট করার ১০টি সেরা সফটওয়্যার ও অ্যাপ

Last Updated on: 3rd জুলাই 2022, 04:53 অপরাহ্ন

ছবি এডিট করার সফটওয়্যার: ফটো তুলতে কে না ভালোবাসে? আর সেই ছবি এডিট করে আরো সুন্দর করে তোলার জন্য আজকাল প্রচুর ফটো এডিটিং অ্যাপ রয়েছে।


আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েডের জন্য বেশ কিছু সেরা ছবি এডিট করার ফ্রি সফটওয়্যার/অ্যাপ , যা ব্যবহার করে আপনি আপনার ফটোগুলিকে নানারকম ভাবে রূপান্তরিত করতে পারেন, এমনকি আপনার ইনস্টাগ্রাম ফিডের চেহারাও বদলে যেতে পারে। আপনার বন্ধু বান্ধব বা পরিবারের লোকজনের কাছে বাহবা পেতে পারেন আপনি। কাজেই আপনি যদি, বিনামূল্যের কিছু ফটো এডিটিং অ্যাপ ইনস্টল করতে চান আর সঠিক অ্যাপ খুঁজে পেতে অসুবিধে বোধ
করেন, তবে আজকের আর্টিকেলটি আপনারই জন্য।

আপনি হয়তো আপনার অ্যান্ড্রয়েড বা আইফোনের জন্য সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপটি চাইছেন কিন্তু পছন্দমত
অ্যাপ বেছে নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় আপনার কাছে নেই। আসুন, আমরা আপনাকে সাহায্য করব, আপনার জন্য
পারফেক্ট মোবাইল ফটো এডিটিং অ্যাপ বেছে নিতে।

এখন আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন, যে সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপ কোনটি?
এখানে আমরা ১০টি সেরা ছবি এডিট করার ফ্রি সফটওয়্যার/অ্যাপ এবং তাদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।

ছবি এডিট করার সফটওয়্যার

১. PhotoDirector (ফটো ডিরেক্টর)


মূল বৈশিষ্ট্য:


✓লাইটিং এবং কালার টুলস
✓ফিল্টার
✓অ্যানিমেশন টুলস
✓বিল্ট ইন স্টক লাইব্রেরী
✓AI টেকনোলজি


আপনি ফটো এডিটিংয়ের কৌশলগুলি যদি শিখে থাকেন বা নাও থাকেন, বা হয়তো আপনি এই প্রথম ফটো
এডিটিং শুরু করেছেন, PhotoDirector-এর পেশাদার-মানের ফিচারগুলো আপনার হঠাৎ তোলা একটা ছবিকেও
দুর্দান্ত একটি ছবিতে পরিণত করতে পারে। বেসিক এডিটিং টুল ছাড়াও, আপনি আপনার ছবিগুলোতে কালার
গ্রেডিং, কোলাজ বা এআই-চালিত নানারকম পরিবর্তন আনতে পারেন। এই অ্যাপটি ব্যবহারকারীরা সহজেই
ব্যবহার করতে পারেন কারণ এখানে ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস ব্যবহার করা হয়েছে। তাই PhotoDirector
ফটো এডিটিং করতে অন্যতম সেরা একটি অ্যাপ।

২.Pixlr

মূল বৈশিষ্ট্য:


✓ নানারকম ফিল্টার
✓ কোলাজ তৈরির সুবিধা
✓ বিগিনার ফ্রেন্ডলী ইন্টারফেস

Pixlr ছবি এডিট করার সফটওয়্যার
Pixlr ছবি এডিট করার সফটওয়্যার


Pixlr অ্যাপটিতে ব্যবহারকারীদের জন্য পর্যাপ্ত ভ্যারাইটি রয়েছে। আপনি আপনার ফটোগুলিকে কালো-সাদা,
ফিল্ম বা সেপিয়া টোনে চেঞ্জ করতে পারবেন এবং এর পাশাপাশি প্রিসেট এফেক্ট, ওভারলে এবং স্টাইল ফিল্টার
ব্যবহার করতে পারবেন।

৩. Snapseed (স্নাপসীড)


মূল বৈশিষ্ট্য:


✓30 টিরও বেশি এডিটিং টুল
✓ওয়ান ট্যাপ এডিটিংয়ের জন্য প্রিসেট এবং ফিল্টার


পেশাদার-মানের এডিটিং টুলের লাইন-আপ, কালার এবং এক্সপোজার ব্যালান্স করার অপশন এবং প্রতিটি
ছবিকে নিখুঁত করার জন্য সিলেক্টেড এডিটিং টুলস Snapseed অ্যাপকে বেশ জনপ্রিয় করে তুলেছে। প্রফেশনাল
ফটোগ্রাফাররাও এই অ্যাপের মাধ্যমে ফোন থেকে ফটো এডিট করতে পারবেন।

৪. Adobe Photoshop Camera (অ্যাডোব ফটোশপ ক্যামেরা)


মূল বৈশিষ্ট্য:


✓অ্যাপটি নিয়মিতভাবে নতুন লেন্স এবং প্রয়োজনীয় অপশনস অ্যাড করে
✓Adobe Sensei ছবির প্রকারের উপর ভিত্তি করে মাস্ক এবং ফিল্টার তৈরি করেছে
✓এডিটিংয়ের সহজ, পয়েন্ট-এন্ড-শুট স্টাইল অনভিজ্ঞ ব্যবহারকারীদের জন্য বেশ সুবিধাজনক।

ফটোশপ ক্যামেরা Adobe Sensei নামক একটি AI ফাংশন ব্যবহার করে, যা আপনি ছবি তোলার আগে বা পরে
ফটোগুলিতে মাস্ক, স্পেশাল এফেক্ট এবং কিছু ফটো কারেকশন প্রয়োগ করার অপশন দেয়। অ্যাপের
ফিল্টারগুলি – “লেন্স” নামে পরিচিত এবং একটি সিংগেল ক্লিকে আপনার ফটোকে এডিট করতে বিভিন্ন ধরণের
কালার, লাইটিং অপশন, এবং স্পেশাল এফেক্ট অফার করে এই অ্যাপটি।

৫.Canva


মূল বৈশিষ্ট্য:

✓নানারকম টেমপ্লেট
✓টেক্সট ইফেক্ট
✓ফটো ফিল্টার
✓বেস লেভেল ফটোগ্রাফি এফেক্ট

ক্যানভা
ক্যানভা এর প্রাথমিক বিশেষত্ব হল এর বহুমুখী, কাস্টমাইজেবল টেমপ্লেটের লাইব্রেরি


ক্যানভা এর প্রাথমিক বিশেষত্ব হল এর বহুমুখী, কাস্টমাইজেবল টেমপ্লেটের লাইব্রেরি।
আপনি ক্যানভা অ্যাপে থাকা টেমপ্লেটগুলির মাধ্যমে আপনার ইচ্ছেমত স্টাইল বাছাই করতে পারেন। বিভিন্ন
রকম ফিল্টার থাকায় আপনার পছন্দসই এডিটিং অপশনটি পেতে অসুবিধে হবে না।
অ্যাপটির মাধ্যমে গ্রাফিক্স এডিটিং সম্ভব। তাই, আপনি আপনার ইনস্টাগ্রাম স্টোরি তৈরি করতেও অ্যাপটি
ব্যবহার করতে পারেন।


আপনি যদি অ্যাপের টেমপ্লেটগুলির থেকে স্টোরি তৈরি করতে না চান, তাহলে আপনি আপনার নিজের সৃষ্টির
একটি পোস্ট তৈরি করতে ক্যানভা লাইব্রেরির বিভিন্ন অপশন অ্যাক্সেস করতে পারেন৷

তবে Canva ফটো ইফেক্টের একটি সীমিত লেআউট অফার করে। আপনি যদি কোনও পেশাদার-স্তরের
ফটোগ্রাফি এডিটিং করতে চান তবে আপনাকে আরও উন্নত অ্যাপ খুঁজতে হবে।
ক্যানভা-এর ফটো ইফেক্ট সীমিত আকার পরিবর্তন করা, কালার অ্যাডজাস্ট করা এবং আপনার ছবির উপর
ফিল্টার ওভারলে করা ইত্যাদি কাজে লাগানো যায়। নানারকম ফটো ইফেক্ট দিয়ে ছবিকে রূপান্তরিত করতে
canva একটি সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপ।

৬. Fotor


মূল বৈশিষ্ট্য:


✓10টারও বেশি ফটো এডিটিং ফাংশন
✓নানারকম এফেক্ট এবং ফিল্টার
✓অটোমেটেড ফটো এডিটিং প্রসেস


Fotor ফটো এডিটরকে প্রায়শই ফটোশপের সরলীকৃত সংস্করণ বলা হয় কারণ এটি আপনাকে ফটোশপের
ফাংশনগুলির সলিড রেঞ্জ অফার করে।
আপনি আপনার ফটোগ্রাফগুলিকে প্রয়োজন মত এডিট করতে পারেন, বিভিন্ন প্যারামিটার যেমন ব্রাইটনেস,
টিন্ট ইত্যাদি পরিবর্তন করতে পারেন।

এটি অ্যান্ড্রয়েডের জন্য বিনামূল্যের সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপগুলির মধ্যে একটি যা একটি রঙিন ছবিকে সাদা-
কালো ছবিতে রূপান্তর করতে পারে, ফিল্ম বা রেট্রো স্টাইলের নস্টালজিক এফেক্ট ব্যবহার করতে পারে। তাছাড়া,
আপনার প্রয়োজন হলে, শুধুমাত্র ফটোগ্রাফের বিশেষ কিছু অংশ এডিট করে পরিবর্তন করা যেতে পারে।

৭. Instasize (ইনস্টাসাইজ)


মূল বৈশিষ্ট্য:


✓ প্রফেশনাল ফটো প্রসেসিং টুল
✓ ইউনিক ফিল্টার
✓ প্রচুর থিমেটিক ফটো ফ্রেম
✓ টেক্সট অ্যাডিং ফিচার


Instasize হল একটি প্রফেশনাল অ্যান্ড্রয়েড ফটো এডিটিং অ্যাপ যা বিভিন্ন ফিল্টার, ইফেক্ট, লেয়ার, টেক্সট অ্যাড
করার ফিচার অফার করে।


কনট্রাস্ট, গ্রেইন এবং স্যাচুরেশনের মতো প্রফেশনাল এডিটিং টুল ব্যবহার করে আপনি আপনার ছবিতে তীক্ষ্ণতা,
উজ্জ্বলতা, এক্সপোজার, কনট্রাস্ট এবং আরও অনেক কিছু ব্যালান্স করতে পারেন।


আপনি আপনার ছবিকে সুন্দর করতে নানারকম ফিল্টার ব্যবহার করতে পারেন। প্রচুর সংখ্যক লেআউট থাকায়
আপনি কোলাজ তৈরি করতে পারেন এবং সেগুলিতে টেক্সট, ফ্রেম এবং কালার বা লাইটিং এফেক্ট অ্যাড করতে
পারেন। আপনি যদি আপনার সাধারণ ফটোগুলিকে রেডিমেড সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে পরিণত করতে চান তবে
এটি অ্যান্ড্রয়েড-এর জন্য সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপ।

৮. PicsArt


মূল বৈশিষ্ট্য:


✓ অসাধারণ কোয়ালিটির ইমেজ এডিটিং টুল
✓ টেক্সট অ্যাড করার অপশন
✓ কাস্টোমাইজেবল কোলাজ


PicsArt হল আমাদের সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপ্লিকেশানগুলির মধ্যে বেস্ট, কারণ এটি মজাদার, ব্যবহার করা
সহজ, এবং ইউজারের মোবাইল ফটোগ্রাফির প্রায় সমস্ত বেস কভার করে৷
এটি প্রচুর ক্রিয়েটিভ কন্ট্রোল ফিচার, চমৎকার ইমেজ-এডিটিং টুল এবং বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় ফিল্টার
অফার করে।

এছাড়াও, আপনি দ্রুত স্টিকার অপশনগুলির মধ্যে থেকে ইচ্ছেমত স্টাইল বেছে নিতে পারেন বা মজাদার
স্টিকার তৈরি করতে পারেন, আপনার ছবিগুলিকে কাস্টমাইজযোগ্য কোলাজে একত্রিত করতে পারেন,
আর্টিস্টিক টেক্সট অ্যাড করতে পারেন এবং শেয়ার করতে পারেন৷ ফুল ফিচার্ড ক্যামেরা মডিউল অপশনটিতে
প্রি-ক্যাপচার এফেক্ট এবং ফটো টুলস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ক্রিয়েটিভ কন্ট্রোল ফিচার ব্যবহারের মাধ্যমে
ছবিগুলোকে খুব সুন্দরভাবে এডিট করা যায়।

৯.Photo Lab


মূল বৈশিষ্ট্য:


✓ ফটো ফ্রেমের ভ্যারাইটি
✓ ফটো ফিল্টার
✓ ফেস ফিল্টার এবং এফেক্ট
ফটোল্যাব গত কয়েক মাসে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে
এবং 100 মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী এটি ডাউনলোড করেছে।
এটি মুখের ছবির মন্টেজ, ফটো ফ্রেম, অ্যানিমেটেড ইফেক্ট এবং ফটো ফিল্টার ইত্যাদি বিভিন্ন রকম টুল অফার
করে। বর্তমানে অ্যাপের লাইব্রেরিটি 900+ ফিল্টার এবং এফেক্ট ইউজ করার অপশন প্রদান করে। যারা
ইনস্টাগ্রামে তাদের ছবি পোস্ট করতে চান বা যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের জন্য গুড-লুকিং প্রোফাইল
পিকচার তৈরি করতে চান তাদের জন্য এটি বেস্ট ফটো এডিটিং অ্যাপ।

১০. LightX Photo Editor

মূল বৈশিষ্ট্য:


✓ স্টিকার এবং টেক্সট অ্যাড করার অপশন
✓ রং ও টোন চেঞ্জিং টুল
✓ কোলাজ মেকিং টুল
✓ ফ্লিপ এবং ক্রপ করার অপশন


এটিতে প্রচুর ফিল্টার রয়েছে, সেইসাথে ফটোগুলিকে তীক্ষ্ণ করার জন্য এবং দাগগুলি দূর করার জন্য নানারকম
টুল এবং আরও অনেক ফিচার রয়েছে৷ আপনি রঙ, স্যাচুরেশন এবং টোন পরিবর্তন করতে পারেন, ফোকাস
অ্যাডজাস্ট করতে পারেন, ফ্রেম, স্টিকার বা টেক্সট অ্যাড করতে পারেন, ছবিগুলিকে একত্রিত করতে পারেন,
কোলাজ তৈরি করতে পারেন, ফ্লিপ করতে পারেন, ক্রপ করতে পারেন এবং ফটো রোটেট করতে বা ঘোরাতে
পারেন, ছবি আঁকতে এবং ফটোর পার্সপেক্টিভ পরিবর্তন করতে পারেন এই অ্যাপটির মাধ্যমে। অ্যান্ড্রয়েড বা
আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত ফটো এডিটিং অ্যাপ।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১২ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা।

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।