ক্লাউড স্টোরেজ কি,ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস

ক্লাউড স্টোরেজ কি

Last Updated on: 26th নভেম্বর 2022, 04:30 অপরাহ্ন

হ্যালো বন্ধুরা আজকের এই পোস্টে আমরা ক্লাউড স্টোরেজ কি এবং ক্লাউড স্টোরেজের সুবিধা ,ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস সম্পর্কে আলোচনা করব।

মূলত আজকের এই পোস্টে আমরা এমন সব ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিসে কথা আলোচনা করব যে গুলি মূলত ফ্রি আপনি আপনার চাহিদামত ডেটা এবং সমস্ত ডকুমেন্ট ক্লাউড সার্ভিসে আপলোড করতে পারবেন।

তো আসুন এই ফ্রী ক্লাউড স্টোরেজ সম্পর্কে আলোচনা কর আগে আমরা জেনে নিই ক্লাউড স্টোরেজ আসলে কি।

ক্লাউড স্টোরেজ কি ?

ক্লাউড স্টোরেজ হলো এমন একটি অনলাইন ডাটা স্টোরেজ ব্যবস্থা যার মাধ্যমে আপনি আপনার সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ,ফাইল, পিকচার, স্প্রেডশিট ,অডিও সমস্তকিছুই আপনি এই অনলাইন ক্লাউড সার্ভিসে জমা রাখতে পারবেন এতে করে আপনি আপনার পার্সোনাল কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক এর উপর চাপ কমিয়ে ফেলতে পারবেন এবং পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে আপনি এই ক্লাউড স্টোরেজ এ আপনি আপনার ডাটা ডাউনলোড এবং আপলোড করতে পারবেন নিজের প্রয়োজনমতো।

এর জন্য দরকার হবে শুধুমাত্র একটি ইন্টারনেট কানেকশন ,একটি মোবাইল ,কম্পিউটার বা ল্যাপটপ আর কিছুই নয়।

ক্লাউড স্টোরেজ এর ইতিহাস :

এখনই ক্লাউড স্টোরেজ সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আসুন একটু বিস্তারিত ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করে নি। আসলে ক্লাউড স্টোরেজ মূলত ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং ক্লাউড কম্পিউটিং প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন Joseph Carl Robnett Licklider
১৯৬০ সালে আর্পানেট এ কাজ করার সময়।

আর্পানেট এর মাধ্যমে সেই সময়ে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের মানুষ একই অপারেশনের ডাক্তার সংযোগ করতে পারতেন এরপর ১৯৭০ IBM কম্পিউটার তাদের কাস্টমারদের Multics (on GE hardware)এর মাধ্যমে ক্লাউড স্টোরেজ দেয়া শুরু করে। ছোট্ট পরিমাণ ডাটা আপলোড করার জন্য কিছু সুবিধা এখানে পাওয়া যেত। টিপস পেজ দেওয়া শুরু করেছিল যেখানে কাস্টমার তাদের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আদর করতে পারতেন।

এরপর ১৯৯৪ সালে জেনারেল ম্যাজিক নাম একটি মার্কিন কোম্পানি একটি পার্সোনাল সার্ভিস অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করে ডাটা VIRTULIZATION এর কনসেপ্ট বা ধারণা প্রথম ভালো ভাবে প্রচলিত হয়।

তারপর ২০০২ সালে এর পরেই এল আমাজন ওয়েব সার্ভিস যেখানে পার্সোনাল এবং বিজনেস কমিউনিকেশনের জন্য সংরক্ষণ করা যেত এটিই প্রথম কমার্শিয়াল ক্লাউড স্টোরেজ হিসেবে পরিগণিত হয়। এর পর আমাজন তাদের Simple Storage Service (S3)আর Elastic Compute Cloud (EC2) সার্ভিস নিয়ে এলো যা ক্লাউড কম্পিউটিং এর বর্তমান জনপ্রিয়তার জন্য অনেক নেয়। বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় ক্লাউড স্টোরেজ এর মধ্যে ড্রপবক্স,গুগোল ড্রাইভ PCLOUD বেশ জনপ্রিয়।

ক্লাউড স্টোরেজের আর্কিটেকচার:

এবারে আসুন ক্লাউড স্টোরেজের আর্কিটেকচার সম্পর্কে একটু আলোচনা করে নেওয়া যাক। ক্লাউড কম্পিউটিং এর একটি অংশ এই ক্লাউড স্টোরেজ মূলত একটি হোস্টেড অব্জেট স্টোরেজ হিসাবে কাজ করে। তবে অবজেক্ট স্টোরেজ ছাড়াও ব্লক স্টোরেজ হিসাবেও ক্লাউড স্টোরেজ অনেক সময় কাজ করে।

IBM এর ডকুমেন্টেশন হিসাবে একটি আদর্শ ক্লাউড স্টোরেজ বেশ কয়েকটি বিভাগে ভাগ করা যায়। ক্লাউড স্টোরেজ এর পুরো আর্কিটেকচার এর এক প্রান্তে থাকে সাধারণ ব্যাবহারকারী আর একবারে শেষ ওপর প্রান্তে থাকে ব্যাকএন্ড স্টোরেজ। মাঝে থাকে নেটওয়ার্ক,স্টোরেজ লজিক ,ফ্রন্ট এন্ড ইউসার ইন্টারফেস।

সাধারণভাবে ক্লাউড স্টোরেজ আর্কিটেকচারে একটি ফ্রন্ট এন্ড থাকে যা স্টোরেজ অ্যাক্সেস করার জন্য একটি API ব্যাবহার করে । সাধারণ ভাবে স্টোরেজ সিস্টেমে, এই API হল SCSI প্রোটোকল; কিন্তু ক্লাউডে, এই প্রোটোকলগুলি ক্রমে পরিবর্তিত হতে থাকে।

ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস এর তালিকা :

এবার চলুন কিছু ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করে নেওয়া যাক।

১.Internxt

Internxt একটি ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস এর প্রধান বৈশিষ্ট্য এর প্রাইভেসি এবং সিকিউরিটি। এর বিভিন্ন ফিচার গুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন ডেডিকেটেড অ্যাপ যা সাবলীলভাবে আপনার সকল ডিভাইস এর সাথে ক্লাউড স্টোরেজ ব্যাবহার করার সুযোগ করে দেয়।

যখন খুশি ডাটা আপলোড-ডাউনলোড সুবিধা ,ডেডিকেটেড কাস্টমার সাপোর্ট এবং এটি আপনাকে ১০ জিবি পর্যন্ত ফ্রি ডাটা স্টোরেজ সুবিধা দেয়। সবমিলিয়ে একটি দারুন ক্লাউড স্টোরেজ সুবিধা। এছাড়া এদের নানা পেইড সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান ও আছে। আপনার Internxt এ থাকা সমস্ত ডাটা থাকে এনক্রিপ্টেড আর সুরক্ষিত।

২.আইসড্রাইভ

আইসড্রাইভ তালিকায় দ্বিতীয় নাম। আইসড্রাইভ মূলত একটি দারুন ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস যার সাহায্যে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত ডকুমেন্ট অডিও ভিডিও ফাইল এখানে সংরক্ষণ করতে পারবেন। এটি এমন একটি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিসযা ‘Twofish Encryption’ সাপোর্ট করে যার ফলে যেকোনো ডিটেইল আর ডাটা খুবই সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষিত হয়। এটি ১০ জিবি পর্যন্ত ফ্রি যেটা আপনাকে স্টোর করার সুবিধা দেয়। সহজ সরল এবং এটি বিভিন্ন স্ট্রিমিং মিডিয়া আপলোড সাপোর্ট করে যেতেই আপনি পরবর্তীকালে আপনি বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন।

৩.Sync

তালিকায় তিন নম্বরের নাম হল Sync. Sync একটি দারুন ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস। এর বড় সুবিধা হল এখানে আপনি ফাইল আপলোড ডাউনলোড এর জন্য আপনাকে কোন নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয় না আপনি কোন একাউন্ট ছাড়াই আপনার ডাটা স্টোর করতে পারবেন।

এটি উইন্ডোজ ,ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমঃ আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডের জন্য উপলব্ধ। স্টোরেজের মধ্যে আপনি ৫ জিবি স্টোরেজ ক্যাপাসিটি পেয়ে যাবেন এবং বেসিক শেয়ারিং অপশন এখানে পেয়ে যাবেন। এর কিছু পেইড অপশন রয়েছে যেমন এদের Solo Basic প্ল্যান এর মধ্যে আছে ৪ টিবি স্টোরেজ মাসিক ৮ মার্কিন ডলার ,Pro Solo Professional প্ল্যান এর মধ্যে আছে ৬ টিবি স্টোরেজ মূল্য মাসিক ২০ মার্কিন ডলার। Sync ইতিমধ্যে খুবই জনপ্রিয় ফ্রি স্টোরেজ হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে।

৪. Mega

এবার আসি তালিকায় ৪ নম্বর থাকাক্লাউড স্টোরেজ Megaএর কথা। মেগা মূলত নিউজিল্যান্ড এর একটি কোম্পানি। ২০ জিবি ফ্রি স্টোরেজ দেয় Mega যা অনেক বেশি ফ্রি প্ল্যান এর জন্য।

আপনি সিঙ্ক অপশন,এনক্রিপশন বিশ্বমানের। মেগা আপনাকে প্রতি 6 ঘন্টায় আপনাকে এক জিবি ডাটা আপলোড এবং ডাউনলোডের সুবিধা দিয়ে থাকে।এটি ড্রপবক্স বা গুগোল ড্রাইভ থেকে আপনাকে অনেক বেশি পরিমাণ ডেটা স্টোর করে সুবিধা যেখানে ড্রপবক্স আপনাকে ফ্রিতে ২ জিবি, গুগল ড্রাইভ আপনাকে ১৫ জিবি ডেটা সংরক্ষণের সুবিধা দেয় সেই তুলনায় এটি আপনাকে প্রায় 20 জিবি ফ্রি স্টোরেজ দিচ্ছে।

এছাড়াও এই মেগা আপনাকে ডাটা শেয়ারিং এর অনেক সহজ অপশন দিচ্ছে যাতে করে আপনি জেক আপনি লিংক এর মাধ্যমে ডাটা শেয়ার করছেন তারা কোনো মেগা একাউন্ট ছাড়াই তা ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। এই আর্টিকেল লেখার সময় মেগা এর রেজিস্টার্ড ব্যাবহারকারির সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি।

৫.pCloud

pCloud আমার ব্যক্তিগত পছন্দের একটি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস যেখানে আপনি খুব সহজেই আপনি আপনার সমস্ত কিছু তথ্য আপলোড করতে পারবেন খুব সহজে। pCloud এর নানা রকম পেইড প্ল্যান ও আছে। বর্তমানে পি ক্লাউড এর মধ্যে আপনি ফ্রিতে ৪ জিবি ডাটা স্টোরে করতে পারবেন।

মূলত সুইৎজার্ল্যান্ড এর কোম্পানি এর বর্তমান ব্যাবহারকারী সংখ্যা প্রায় ১৪ মিলিয়ন।ফাইল শেয়ারিং, কোলাবোরেশন অপশন এনক্রিপশন,ডাটা ব্যাকআপ এর জন্য pCloud বেশ ভালো। আপনি আপনার পুরানো ফাইল ভার্সন ৩০ দিন পর্যন্ত এখানে রিস্টোর করে নিতে পারবেন। এছাড়া আপনি pCloud Drive আপনার উইন্ডোস কম্পিউটার এ ইনস্টল করে সহজেই রিয়েল টাইম সিঙ্ক ব্যাবহার করে সব ডাটা নিরাপদে রেখে দিতে পারেন pCloud Drive এর ক্লাউড স্টোরেজ এ।

৬.Microsoft OneDrive (ওয়ানড্রাইভ মাইক্রোসফট )

এর পর তালিকাতে আমি আসে ওয়ানড্রাইভ যা মাইক্রোসফট ওয়ানড্রাইভ নামে বেশি পরিচিত। যেটি মূলত আপনাকে ফ্রিতে ফাইল আপলোড এবং ডাউন করতে দেয় খব সহজে। আপনি এখানে ফ্রিতে ৫ জিবি পর্যন্ত ফাইল আপলোড করতে পারবেন। আপনার উইন্ডোস ১০ কম্পিউটার এর সাথে এটি অনেক ভালো কাজ করে। এছাড়া এর পার্সোনাল ভল্ট ,ডকুমেন্ট স্ক্যান ,শেয়ারিং অপসন এটি অনেক ভালো ভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।

৭.গুগোল ড্রাইভ

এরপরের ক্লাউড স্টোরেজ নাম গুগোল ড্রাইভ। গুগোল ড্রাইভ হচ্ছে একটি বহুল প্রচলিত গুগলের ফ্রী ক্লাউড সার্ভিস যেখানে আপনি ফ্রিতে ১৫ জিবি পর্যন্ত আপনার ডাটা স্টোর করতে পারবেন। গুগলের প্রোডাক্ট বলে এটি সাপোর্ট বিশ্বমানের। এখানে আপনি গুগোল ডকস,গুগল স্প্রেডশী তৈরি করতে পারবেন। এটি ১.০২ মিলিয়ন অক্ষর পর্যন্ত নথি, ৫ মিলিয়ন সেল পর্যন্ত স্প্রেডশীট, ১০০ এমবি পর্যন্ত স্লাইড এবং প্রতি পৃষ্ঠায় 2000,000 অক্ষর পর্যন্ত Google সাইটগুলি সংরক্ষণ করার সুবিধা পাবেন ।

এছাড়া অন্যান্য বিষয়গুলির মধ্যে টিম কোলাবরেশন পেয়ে যাবেন। ইচ্ছে করলে আপনি আপনি ইচ্ছে করলে আপনি শেয়ারিং অপশন পেয়ে যাবেন। এছাড়া আপনি এডভান্স সার্চ ফিচার ড্রাগ এন্ড ড্রপ আউট এছাড়াও আপনি যদি ইচ্ছা করলে গুগল ড্রাইভের অ্যাপ ইনস্টল করে নেয় সেক্ষেত্রে আপনি যেকোনো ইমেজকে চাইলে স্ক্যান করে সেটি ইংরেজিতে বেস্ট সোজাসুজি গুগল ড্রাইভে রাখতে পারবে এটি একটি দারুণ আকর্ষণীয় বিষয়।

এছাড়া গুগল ওসিআর সাপোর্ট করে। এছাড়া সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি যখন জিমেইল সঙ্গে সঙ্গে আপনি একটি ফ্রি গুগোল ড্রাইভ একাউন্ট ভেজাবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আপনাকে আলাদা করে ওই জন্য আর নতুন করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে না এছাড়াও যদি ইচ্ছা করেন তখন পরবর্তী কোন ডকুমেন্ট আপলোড করেন।

আপনি চাইলে গুগল ডক্স থেকে ওয়ার্ড,এক্সেল,পাওয়ারপয়েন্ট কনভার্সন করে নিতে পারেন। আপনি চাইলে গুগল স্লাইড থেকেও মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট এ কনভার্সন করে নিতে পারবেন।

৮.ড্রপ বক্স

ড্রপ বক্স গুগোল ড্রাইভ এর মধ্যে খুব একটি জনপ্রিয় ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস যেখানে আপনি আপনার প্রয়োজন মত ডাটা স্টোর করতে পারবেন। এটি উইন্ডোস ছাড়াও , ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম এর জন্য উপলব্ধ।

এছাড়া ড্রপবক্সের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্যে ফাইলস রিকভারি এবং ভার্শন হিস্ট্রি ,সিঙ্ক কলাবোরেশন উল্লেখযোগ্য। ড্রপবক্স এর বেসিক ফ্রি ভার্সন এ আপনি একটি ইউজার ২ জিবি স্টোরেজ এবং তিনটি ডিভাইস একসাথে কানেকশন এ সুবিধা পাবেন। ড্রপবক্স এর সিকিউরিটি কথা আলাদা করে উল্লেখ করতেই হবে।

পিসি বা কম্পিউটার এর সাথে সাথে এটি এন্ড্রোইড আর iOS এর জন্য পেয়ে যাবেন।ড্রপ বাক্স এ আপনি ১৭৫টি টাইপ এর ফাইল অনলাইন এ প্রিভিউ করে নিতে পারবেন। একটিভ ওয়েব সেশন ,লিংকড ডিভাইস আর কি কি থার্ড পার্টি এপ্লিকেশন আপনার ড্রপবক্স কে ব্যাবহার করতে চাইছে তার তালিকা সম্পূর্ণভাবে আপনি পরীক্ষা করে নিতে পারেন।

৯.আইড্রাইভ

আপনি যদি একটি সরল ক্লাউড স্টোরেজ চা তবে আইড্রাইভ বেশ ভালো। এটি উইন্ডোস,ম্যাক,লিনাক্স,এন্ড্রোইড, iOS সব জায়গাতেই ব্যাবহার করা যায়। আপলোড সাইজের পরিমাণ ২ জিবি পর্যন্ত। আর আইড্রাইভ আপাকে ফ্রি টি ৫ জিবি স্টোরেজ এর সুবিধা দেয়। ক্লাউড স্টোরেজ ফটো প্রিন্টিং ফাইল ব্যাকআপ এর জন্য এটি খুবই উল্লেখযোগ্য। আইড্রাইভ এর অন্যান্য বিষয় গুলির মধ্যে ক্লোন বা কম্পিউটার ব্যাকআপ অপশন বেশ ভালো। এখানে আপনি চাইলে আপনার পুরো কম্পিউটার এর ব্যাকাপ করে রাখতে পারেন পুরো সেক্টর লেভেল পর্যন্ত তাই ডাটা হারাবার ভয় থাকে না। তাছাড়া ডাটা ট্রান্সফার আর প্রটেকশন এর জন্য এটি 256-bit AES এনক্রিপশন ব্যাবহার করে।

১০.আমাজন ড্রাইভ

আমাজন ড্রাইভ ও একটি ভালো ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস যেখানে আপনি সহজেই আপনি আপনার ফাইল ফোল্ডার স্টোরে করে রাখতে পারবেন। ফটো স্টোরেজ এর জন্য অনেকে এটি ব্যাবহার করেন।

১১.বক্স


ক্লাউড স্টোরেজ হিসেবে বক্স তুই ভালো একটি সার্ভিস। ইন্ডিভিজুয়াল ফ্রি প্ল্যান এর মধ্যে আপনি পেয়ে যাবেন ১০ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ। ২৫০ মেগা BYTE পর্যন্ত ফাইল আপলোড লিমিট। সিকিওর শেয়ারিং সেটিং, মোবাইল বক্স অ্যাপ কোলাবরেশন, কমিউনিটি অ্যাক্সেস, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট নোট চেকিং অপসন। তাই অনায়াসে আপনার যদি পার্সোনাল ডাটা স্টোরেজের তারপরে আপনি বক্স ব্যাবহার করতে পারেন।

১২.আইক্লাউড

আইক্লাউড মূলত অ্যাপলের তৈরি একটি ক্লাউড সার্ভিস যেখানে আপনি সহজেই আপনি আপনার ডাটা স্টোরে করতে পারবেন। এটি ফ্রিতে আপনাকে ৫ জিবি স্টোরেজ দেয়। নম্বর ,কী নোট ,পেজ এর মাধ্যমে আপনি সহজেই অন্যের সাথে কলাবোরেশন করে নিতে পারবেন। আপলোড ফাইল সাইজও লিমিট ১৫ জিবি।

১৩.ইয়ান্ডেক্স ডিস্ক

ইয়ান্ডেক্স ডিস্ক এর একটি ফ্রি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস। ইয়ান্ডেক্স রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন ও বটে। আপনাকে ইয়ান্ডেক্স ডিস্ক সুবিধা দেয় উইন্ডোজ, ম্যাক,লিনাক্স এর প্লাটফর্ম ব্যাবহার করে ডাটা স্টোর করে রাখার।ইয়ান্ডেক্স ডিস্ক বিনামূল্যের ক্লাউড স্টোরেজ সর্বাধিক ৫০ জিবি ফাইলের আকার আপলোড করার সুযোগ দেয়৷ ব্যবহারকারী বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যে ডেটা সিঙ্ক করতে পারেন। এটি একটি বৃহত্তম বিনামূল্যের ক্লাউড স্টোরেজ যা Microsoft Word, Excel এবং PowerPoint-এ বিনামূল্যে অ্যাক্সেস প্রদান করে।

১৪.মিডিয়া ফায়ার

মিডিয়া ফায়ার তালিকাতে থাকা আর একটি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস যেখানে আপনি বেসিক,বিসনেস আর প্রো এই তিনটি ভাবে ডাটা স্টোর করতে পারবেন।যার মধ্যে বেসিক প্ল্যান ফ্রি আর আপনি এখানে ১০ জিবি পর্যন্ত ডাটা স্টোরে করে রাখতে পারবেন।অনলাইন ফ্রি স্টোরেজ হিসাবে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন মানুষ মিডিয়া ফায়ার ব্যাবহার করেন।

বার আসুন ক্লাউড স্টোরেজ এর কিছু সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করে নেয়া যাক।

ক্লাউড স্টোরেজ এর সুবিধা :

১.যেকোনো জায়গা থেকে ক্লাউড স্টোরেজ ব্যাবহার এর সুবিধা

বেশিরভাগ ক্লাউড স্টোরেজ এ আপনি সহজ ইউসার ইন্টারফেস এর মাধ্যমে আপনি আপনার ফাইল ক্লাউড স্টোরেজ এ রেখে দিতে পারেন। আপনাকে কোনো এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ এর দরকার পড়ে না আপনি ধরুন ধরুন মোবাইল এর মাধ্যমে ডাটা তুলে রাখলেন পরবর্তী কালে আপনি ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ থেকে তা ডাউনলোড করে নিতে পারেন আপনার সুবিধা মতো।

২.দারুন সিকিউরিটি ,সস্তা ,,ডিসাস্টার রিকভারি

ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস প্রোভাইডার সাধারণত আপনার ডাটা তাদের অনেক ডাটা সেন্টার এ স্টোরে করে রাখে ডিস্ট্রিবিউটেড কম্পিউটিং এর কথা মাথায় রেখে যার ফলে কোনো একটি ডাটা সেন্টার বা সার্ভার এ সমস্যা হলে আপনার ডাটা অন্য ডাটা সেন্টার এ সুরক্ষিত থাকে। তাই ডাটা হারাবার ভয় থাকে না। অনেক বিসনেস এর জন্য নিজের সমস্ত স্টোরেজ এর অনলাইন ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস এর মাধ্যমে আউটসোর্স করে দেয় যার ফলে সংস্থার খরচ বাঁচে আর ডাটা নিরাপদে থাকে।

৩. অটোমেশন আর বহু ইউসার সাপোর্ট

ক্লাউড স্টোরেজ অনেকটা হার্ডডিস্ক এর মতো কাজ করে কিন্তু তার কার্যক্ষমতা আর প্রযুক্তি অনেক উন্নত যার ফলে একসাথে অনেক ইউসার এখানে একসাথে কাজ করতে পারে।

ক্লাউড স্টোরেজ ব্যাবহারের কিছু অসুবিধা:

ক্লাউড স্টোরেজ এর ওয়ান সুবিধা থাকলেও এর কিছু অসুবিধাও আছে। সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো ডাটা প্রাইভেসী।যদিও সকল ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস প্রাইভেসী এর বিষয়ে অনেক সতর্ক তবু মনে রাখতে হবে আপনি কিন্তু আপনার সমস্ত ডাটা একটি থার্ড পার্টি কোম্পানি এর জিম্মায় রাখছেন। তাই অনেক সময় ডাটা প্রাইভেসী বিষয়টি একটু ভাবে নেয়া দরকার।আপনার ক্লাউড স্টোরেজ প্রোভাইডার ঠিক কি কি ভাবে আপনার প্রাইভেসী রক্ষা করছে তার সম্পর্কে বিশদে জেনে নেয়া অব্যশই দরকার।

শেষ কথা :আশা করি ক্লাউড স্টোরেজ কি এই সম্পর্কে আপনার পোস্ট ভালো লাগলো। ভালো লাগলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না ধণ্যবাদ।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১২ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা।

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।