কম্পিউটারের জনক কে ,বিজ্ঞানের জনক কে,অর্থনীতির জনক কে ?

Last Updated on: 10th জুলাই 2022, 03:38 অপরাহ্ন

হ্যালো আজকের এই পোস্ট এ আমরা আধুনিক সময় এর কিছু জনক কে যেমন কম্পিউটারের জনক কে ,বিজ্ঞানের জনক কে,অর্থনীতির জনক কেতার কথা আলোচনা করবো। শুরু করা যাক।

১.কম্পিউটারের জনক কে ?

কম্পিউটারের জনক হলো হাওয়ার্ড অ্যাইকন(Howard Hathaway Aiken) .

হাওয়ার্ড অ্যাইকন ছিলেন এক জন আমেরিকান পদার্থবিদ যিনি IBM’s Harvard Mark I computer এর design তৈরী করেছিলেন। Charles Babbage এর ডিফারেন্স ইঞ্জিন ব্যাবহার করে যিনি একটি ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক কম্পিউটিং ডিভাইস তৈরি করেছিলেন যার পোশাকি নাম ছিল ASCC বা IBM’s Harvard Mark I এর পর ১৯৪৪ সালে হার্ভার্ড এ ইনস্টল করা হয়.

হাওয়ার্ড অ্যাইকন এর পরে Harvard Mark II ,Harvard Mark III ,Harvard Mark IV কম্পিউটার মডেল এর উপরেও কাজ করেছিলেন।উল্লেখ করা যেতে পারে Harvard Mark III ম্যাগনেটিক ড্রাম মেমরি ব্যাবহার করতো আর Harvard Mark IV ম্যাগনেটিক কোর মেমরি ব্যাবহার করতো।

এর পর এক এক করে কম্পিউটার এর পাঁচটি জেনারেশন এলো।

প্রথম জেনারেশন এ কম্পিউটার গুলি (১৯৪০-১৯৫)Vacuum tube এর তৈরী হতো ,দ্বিতীয় জেনারেশন (১৯৫০-১৯৫৬০) এ এলো ট্রান্সিস্টর ভিত্তিক কম্পিউটার ,তৃতীয় জেনারেশন (১৯৬০-১৯৭০) এ এলো ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট ভিত্তিক কম্পিউটার ,চতুর্থ জেনারেশন(১৯৭০- বর্তমান) এর কম্পিউটার গুলি হলো মাইক্রোপ্রসেসর ভিত্তিক যা আধুনিক কালে আমরা ব্যাবহার করছি। শেষ পর্যায়ে ( বর্তমান-ভবিষৎতের কম্পিউটার) আসছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তি করে কম্পিউটার যা ভবিষৎতের কম্পিউটার বলে মনে করা হচ্ছে।

২.ফেসবুকের জনক কে?

ফেসবুকের জনক হলো মার্ক জুকেরবার্গ।

মার্ক জুকেরবার্গ এর পুরো নাম হলো মার্ক এলিয়ট জুকেরবার্গ।তিনি ২০০৪ সালে ,ফেব্রুয়ারি এর ৪ তারিখে প্রথম ফেসবুকের প্রকাশ করেন পরীক্ষামূলক ভাবে।

ফেসবুক প্রথমে একটি ডিরেক্টরি ভিত্তিক সাইট হিসাবে তৈরী হয় যেখানে মার্ক জুকেরবার্গ এর আরো দুজন রুম মেট তাদের একাউন্ট তৈরী করে ছবি ,নিজস্ব ডকুমেন্ট শেয়ার করেন তাদের মধ্যে নাম ছিল Dustin Moskovitz and Chris Hughes.এর পর দ্রুত ফেসবুক জনপ্রিয়তা লাভঃ করে আর ফেসবুক তাদের হেড অফিস ক্যালিফর্নিয়া পল আল্টো তে চলে যায়। এর পর আর পিছনে তাকাতে হয়নি ফেসবুক কে। ২০০৬ সালে ইয়াহু এর ১ বিলিয়ন ডলার এর অধিগ্রহণ প্রস্তাব নাকোচ করে দেন জুকেরবার্গ ফেসবুকের উজ্জ্বল ভবিষৎতের কথা চিন্তা করে।

পরে মাইক্রোসফট ২০০৭ সালে প্রায় ২৪০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে ফেসবুকের ১.৬% শেয়ার কিনে নেয় । এর পর যেন বিনিয়োগ এর বন্যা আসতে থাকে। ২০০৯ সালে ডিজিটাল স্কাই টেকনোলজি প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার এ ফেসবুকের ১.৯% শেয়ার কিনে নেয়। বর্তমানে জুকেরবার্গ নেট worth প্রায় ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

৩.ইতিহাসের জনক কে?

গ্রিক দার্শনিক হেরোডোটাস কে ইতিহাসের জনক বলা হয়।

হেরোডোটাস জন্মগ্রহণ করেন তৎকালীন এশিয়া মাইনর এখন তুরস্ক এর বদরুম এ ৪৮৪ bc তে। Greco-Persian Wars হলো প্রথম ঐতিহাসিক narrative .হেরোডোটাস কে অনেকে এথেন্স এর বাসিন্দা মনে করেন। হেরোডোটাস প্রাচীন পারস্য সাম্রাজ্য এর অনেক জায়গাতে ভ্রমণ করেন। তিনি মিশরে যান বলে মনে করা হয়। এছাড়া ব্যাবিলন,সিরিয়া ,ম্যাসিডোনিয়া ভ্রমণ করেন। তার কথিত ইতিহাস এর মধ্যে ছিল একটি দারুন ছন্দ যার মাধ্যমে তিনি গল্প বলার মতো করে ইতিহাস কে বর্ণনা করতেন।

৪.অর্থনীতির জনক কে?

এডাম স্মিথ কে আধুনিক অর্থনীতির জনক বলা হয়।

এডাম স্মিথ ছিলেন একজন স্কটিশ দার্শনিক ,অর্থনীতিবিদ। এডাম স্মিথ তার ‘The Theory of Moral Sentiments’ বই তে প্রথম মুক্ত মার্কেট এর কথা বলেন যেগুলি যোগান ,চাহিদা,যোগান এর মতো অর্থনীতির মূল কথাগুলি বলে। এডাম স্মিথ কে জিডিপি এর প্রবক্তা বলে অনেকে মনে করেন। স্মিথ এর সবচেয়ে বিখ্যাত বই হলো ‘An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations’ যেটি ১৭৭৬ সালে প্রকাশিত হয়।

৫.বাংলা সাহিত্যের জনক কে ?

বাংলা সাহিত্যের জনক লুই পাদ।

তিনি ও আরো অনেক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী প্রথম বাংলা সাহিত্য এর জনক বলে ধরা হয়। চর্যাপদ হলো প্রথম বাংলা সাহিত্য এর লিখিত দলিল।
চর্যাপদ প্রথমে দশম আর দ্বাদশ শতকে লেখা হয় বলে মনে করা হয়। চর্যাপদ এর প্রথম লিখিত খসড়া প্রথম তাল পাতা তে নেপাল রায় এর কোর্ট লাইব্রেরি থেকে ১৯০৭ সালে বাংলা ভাষা তাত্ত্বিক হারাপ্ৰসাদ শাস্ত্রী আবিষ্কার করেন।

৬.ইংরেজি সাহিত্যের জনক কে?

জিওফ্রে চসার কে ইংরেজি সাহিত্যের জনক বলা হয়

জিওফ্রে চসার আনুমানিক ১৩৪০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। জিওফ্রে চসার ছিলেন একজন ইংলিশ কবি ,লেখক। তার বিখ্যাত বই এর মধ্যে হলো ক্যান্টারবেরি টেলস। জিওফ্রে চসার কে ইংরেজি কবিতার ও জনক বলা হয়। জিওফ্রে চসার এই ছিলাম প্রথম লেখক যাকে ওয়েস্ট মিনিস্টার আবে তে সমাধিস্থ করা হয় যা হলো পোয়েট’স কর্নার। কবি ছাড়া তিনি ছিলেন একজন বহুমুখী প্রতিভার মালিক। তিনি ছিলেন একাধারে কবি,সিভিল সারভেন্ট ,কূটনীতিক আর মেম্বার অফ পার্লামেন্ট।

৭.বিজ্ঞানের জনক কে?

আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় গ্যালিলিও কে।

স্বয়ং আইনস্টাইন তাকে আধুনিক বিজ্ঞান এর জনক বলে মনে করেন। গ্যালিলিও সর্বপ্রথম রেফরেস্টিঙ টেলিস্কোপ এর মাধ্যমে বহু মহাজাগতিক বিষয় আবিষ্কার করেন। গ্যালিলিও কে আধুনিক মহাকাশবিজ্ঞান এর জনক ও বলা হয়ে থাকে। গ্যালিলিও ১৫৬৪ সালে ১৫ ফেব্ররুয়ারী পিসা তে ভূমিষ্ট হন।

গ্যালিলিও এক আশ্চর্য সময়ে জন্মেছিলেন যেখানে প্রায় ১০০০ বছরের পুরানো এক ধ্যান ধারণার অবসান ঘটান। সেই সময়ে মনে করা হতো যে সূর্য্য ,তারা সবই পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে। পৃথিবী স্থির। এটি ছিল জিও -সেন্ট্রিক মডেল যা টলেমি টোরি করেছিলেন।

কিন্তু মেধাবী গ্যালিলিও ঠিক ই বুজেছিলেন এই ভুল। বরং সব কিছু সূর্য্য এর চারপাশে ঘরে যাকে হেলিও -সেন্ট্রিক মডেল বলে। গ্যালিলিও ,নিকোলাস কোপার্নিকাস এর রিসার্চ পেপার ১৫৪৩ সালে পড়ে বুজতে পারেন আসল সত্য।

কিন্তু এর ফলে প্রথাগত ধারণ অবসান এর ভয়ে তিনি চার্চ এর কোপে পড়েন আর তাকে তার হেলিও সেন্ট্রিক মডেল ভুল বলে মেনে নেবার জন্য চাপ আসতে থাকে নানা মহল থেকে। এর পর তাকে গৃহ বন্দি এর আদেশ করা হয় যেখানে তিনি ১৬৪২ সালে মৃত্যবরণ করেন।

গ্যালিলিও মনে করতেন গণিত হলো ঈশ্বর এর ভাষা আর এই মহাবিশ্ব কে একমাত্র যদি বুঝতে হয় তা একমাত্র সম্ভব গণিত এর দ্বারা।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১২ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা।

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।