সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ভবিষ্যৎ কি ?

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ভবিষ্যৎ কি

Last Updated on: 28th ফেব্রুয়ারি 2022, 08:12 অপরাহ্ন

হ্যালো বন্ধুরা আজকের এই পোস্টে আমরা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আলোচনা করব।সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে অনেক পোস্ট আমাদের ব্লগ এ আগেও প্রকাশিত হয়েছে তাই বিষয়টি সম্পর্কে পাঠকরা খুব ভালোভাবে পরিচিত বলেই আমার আশা।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় অনলাইন ওয়েবসাইট বিপণন পদ্ধতি।

ওয়েবসাইট তৈরি করার পর কে সঠিকভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন পদ্ধতির মাধ্যমে উপস্থাপন করলে বড় বড় সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগোল,বিং ইয়াহু ,ইয়ানডেক্স থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়া যায় যার ফলে আমাদের ওয়েবসাইট জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

পাঠকরা আমাদের ওয়েবসাইটে এসে তাদের কাঙ্ক্ষিত তথ্য পেতে পারে কিংবা আমাদের ওয়েবসাইটটি কোন সার্ভিস অরিয়েন্টেড বা ই কমার্স সাইট হলে ভালো পরিমাণ সেল প্রতিদিন শুধুমাত্র অর্গানিক ট্রাফিক বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমেই আমরা পেয়ে থাকি।

নানা অনলাইন গবেষণা থেকে জানা যায় ডেক্সটপে যত সার্চ মানুষ করে তার ৭০% গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে হয়ে থাকে এর পরে আসছে বাইদু যার মার্কেট শেয়ার ১৩% ,আর পর বিং মার্কেট শেয়ার ১২ শতাংশ এবং ইয়াহু মার্কেট শেয়ার ২% .

গুগোল এ প্রতিদিন কয়েক বিলিয়ন সার্চ সংঘটিত হয় বা বলা ভাল প্রতিবছর ৩৬০ বিলিয়ন সার্চ সংঘটিত হয় তাই এই থেকে সহজেই বোঝা যায় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এক্ষেত্রে গুগল এবং অন্যান্য সার্চইঞ্জিন গুলির গুরুত্ব কতখানি।

গুগোল প্রায় ২০০ টিরও বেশী রেংকিং ফ্যাক্টর ব্যবহার করে ওয়েব সাইটগুলি কে রাংক করে ও তা প্রতিদিন পরিবর্তন করে তাই এই অনবরত পরিবর্তন হয়ে চলা গুগল সার্চ ইঞ্জিন অ্যালগোরিদম গুলির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন পদ্ধতিটিও আমাদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করতে হয়।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন একটি খুবই গতিশীল পদ্ধতি। বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে যে সমস্ত কৌশলগুলি চালু রয়েছে সেগুলি ও প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হতে থাকে তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের প্রকৌশল পরিবর্তন করাও একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা সে অফ পেজ বা ও পেজ যেটাই হোক না কেন।

আজকের এই পোস্টে আমরা তেমনি গুরুত্বপূর্ণ কিছু সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করব যেগুলি ভবিষ্যতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কিভাবে কাজ করবে সেগুলি সম্পর্কে অনেকাংশেই বলে দেবে।

আজ আমরা যে সমস্ত বিষয়ে আমরা আলোচনা করব সেগুলো সরাসরি বিভিন্ন গুগোল এমপ্লয়ীদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং যাচাই করে সংগৃহীত।

গুগোল টিমের থাকা জন মুলার ,গারি illyes ,মার্টিন স্প্লিট আগামী দশকে সার্চ ইঞ্জিনে কি কি পরিবর্তন হতে পারে বা কী কী কৌশল আমরা অবলম্বন করতে পারি সেই সম্পর্কে সার্চ অফ দা রেকর্ডে পডকাস্ট এ সাতটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন সেগুলি জানা যেকোন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন স্পেশালিস্ট এর কাছে অত্যন্ত জরুরি।

তো আসুন শুরু করা যাক। এই সার্চ অফ টি রেকর্ড পডকাস্ট এ গুগল এমপ্লয়ী রা নিজেদের মধ্যে মোটামুটি ৭টি এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেইগুলো যথাক্রমে এইচটিএমএল, জাভাস্ক্রিপ্ট, ইউ আর এল ,স্ট্রাকচার্ড ডাটা,কনটেন্ট ,ভয়েস সার্চ এবং আরও কিছু বিষয়।

এবার আসুন একটি একটি বিষয় নিয়ে আমরা বিশদে আলোচনা করি।

১. এইচটিএমএল

গুগোল এর বিশেষজ্ঞ জন মুলার এর মতে, এইচটিএমএল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন জন্য জরুরী। তবে বর্তমানে যেহেতু বর্তমানে যেহেতু সিএমএস বা কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম গুলি বেশ আধুনিক এবং অনেকটা ইউজার ফ্রেন্ডলি তাই ভবিষ্যতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে এইচটিএমএল কোডিং না জানলেও কাজ চলে যেতে পারে। বিভিন্ন রিচ টেক্সট এডিটর আপনার কোডিং এর কাজ সহজেই করে দিতে পারবে।

কিন্তু এই বিষয়ে গ্যারি কিন্তু জন এর সাথে একমত হলেন না। গারি এর মতে সঠিকভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে গেলে লিংক ট্যাগ, মেটা ট্যাগ, টাইটেল ট্যাগ এইগুলি সম্পর্কেও কিছু বেসিক জ্ঞান থাকা জরুরি।

কোনটি আগে কোন কিওয়ার্ড বা কোন মেটা ট্যাগ দিতে হবে সেটি জানার জন্য কিছুটা হলেও এইচটিএমএল এর জ্ঞান থাকা জরুরি। অবশেষে এই বিষয়ে গুগল ইমপ্লোয়ীরা একমত হলেন যে এইচটিএমএল এর গুরুত্ব ভবিষ্যতে সার্চ নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন অংশে কম হবে না।

২. জাভাস্ক্রিপ্ট

জাভাস্ক্রিপ্ট সম্পর্কে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কিছুকাল আগে পর্যন্ত গুগোল ক্রলার সঠিকভাবে জাভাস্ক্রিপ্ট রেন্ডার এবং পড়তে পারতো না যার ফলে জাভাস্ক্রিপ্টে তৈরি করা ওয়েবসাইটগুলি সার্চ ইঞ্জিনে খুব ভালো পারফর্ম করতো না।

কিন্তু গুগল সার্চ ইঞ্জিন অনেক পরিণত হয়েছে যার ফলে নানা রকম জাভাস্ক্রিপ্ট আজকাল গুগল ক্রলার ভালো করে পড়তে এবং বুঝতে পারে তাই জাভাস্ক্রিপ্টে তৈরি করা ওয়েবসাইটগুলো সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি হয়ে থাকে। তাই ভবিষ্যতে জাভাস্ক্রিপ্ট দিয়ে তৈরি করে ওয়েবসাইটগুলি কিংবা প্রগ্রেসিভ ওয়েব app গুলি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

৩.ইউআরএল এর গুরুত্ব

ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইটের মূল ভিত্তি হলো ইউআরএল লিংক। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে গেলে ইউআরএল স্ট্রাকচার খুবই জরুরী। অদূর ভবিষ্যতেও ইউআরএল একটি ভালো এসইও এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে ঠিক যেমন ডোমেইন নেম একটি ভালো ওয়েবসাইটের ভিত্তিপ্রস্তুর হিসাবে পরিগণিত হয়। তাই ডোমেইন নাম আর ইউআরএল দুটি নজরে রাখতে হবে।

৪.মেটা ট্যাগ

বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ক্ষেত্রে টাইটেল ,মেটা ডেসক্রিপশন ট্যাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে আরো কোনো নতুন মেটা ট্যাগ গুগল আনতে পারে কিনা এই সম্পর্কে জন এর প্রশ্ন এর উত্তরে Splitt বলেন গুগল এর এখনই তেমন পরিকল্পনা নেই।

৫.স্ট্রাকচার ডাটা

স্ট্রাকচার ডাটা বর্তমান সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সার্চ ইঞ্জিন ক্ষেত্রে যখন আলোচনা করা হল তখন splitt বললেন যে গুগল বর্তমানে কোন ওয়েবসাইটের কনটেন্টকে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে স্ট্রাকচার্ড ডাটা ছাড়াও। গুগল এর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই এটি নির্ভুল ভাবে করে ফেলছে। তবু আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটের প্রডাক্ট রিভিউজ বা স্ট্রাকচার্ড ডাটা দিয়ে দি গুগোল আমাদের ওয়েবসাইটে কন্টাক্ট দিকে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারে।

তাই স্ট্রাকচার্ড ডাটা থাকলে আমাদের ওয়েবসাইট সার্চইঞ্জিনে ব্যাংকিং করার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায় তাই সেটা এখন যেমন স্ট্রাকচার্ড ডাটা গুরুত্বপূর্ণ তার ভূমিকা ও গুরুত্ব ভবিষৎতেও বজায় থাকবে কিংবা বেড়ে যাবে বলেই গুগোল মনে করে।

৬.কনটেন্ট এর গুরুত্ব

কনটেন্ট মারকেটিং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর অন্যতম একটি ভিত্তিপ্রস্তর। ভাল কনটেন্ট ছাড়া কোন ওয়েবসাইটে ভালো করবে না আপনি যত ভালোই ডিজাইন করুন আপনার ওয়েবসাইট এর টেকনিক্যাল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা টেকনিক্যাল স্ট্রাকচার যতই ভালো হোক না কেন। এটি জলের মত পরিস্কার।

এখন অনেক ভাবেই বর্তমানে অনেকে অটোমেটেড কৃত্রিমভাবে কনটেন্ট কনটেন্ট জেনারেট করে সেগুলো পাবলিশ করা শুরু করেছে। তাই মেশিন জেনারেটেড কনটেন্ট সম্পর্কে গুগল এর অভিমত কি এই সম্পকে জানতে চাইলে গারি বলেন যে গুগল তার ইনডেক্স এ কোন কনটেন্ট রাখবে সেই সম্পর্কে বেশ স্পর্শকাতর।

কনটেন্ট এর কোন ভ্যালু না থাকে বা কোন ইউনিক কন্টেন্ট না থাকে মেশিন জেনারেট কনটেন্ট গুগল এর কাজে অর্থহীন। তবে মেশিন জেনারেটেড কনটেন্ট হলেই সেটি যদি কোনো ভাবে ভালোভাবে এডিট এন্ড মূল্যায়নের পর পাবলিশ করা হয় সেটি কিন্তু ভালো ব্যাপার। তাই এখনই ম্যানুয়াল কনটেন্ট রাইটিং কে সম্পর্ণ মেশিন জেনারেটেড কনটেন্ট এর উপর ভরসা কোনো কাজের কথা নয়।

৭.ভয়েস সার্চ এর গুরুত্ব

ভয়েস সার্চ ,সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর একটি ট্রেন্ডিং বিষয়। ভয়েস সার্চ ভয়েস সার্চ কিন্তু ভবিষ্যতে ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।মাউনস প্রথাগত কীওয়ার্ড ভিত্তিক সার্চ এর বদলে যেকোন নিজের ভয়েস কম্যান্ড এর মাধ্যমে সার্চ করে তখন কিন্তু ব্যাপারটি অনেকটা আলাদা হয়।

মোবাইল এর ব্যাবহার এর সঙ্গে সঙ্গে মানুষ দিনে দিনে ভয়েস সার্চ এ পরিমাণ বাড়ছে। আমাদের কনটেন্ট এ যদি ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ বা খুবই সাধারণ ভাষায় সহজ-সরল ভাবে কনটেন্ট লিখি তবে ভয়েস দিয়ে আমাদের বেবিতে অটোমেটিক উঠে আসবে এজন্য খুব বেশি কিছু দরকার নেই Splitt এর অভিমত। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন দিনে দিনে অনেক পরিবর্তন হচ্ছে এখন চাইলে যে কোনো মানুষই এই পেশায় আসতে পারেন শুধু গুগল সার্চ সম্পর্কে আগ্রহ এবং প্রতিনিয়ত শেখার ইচ্ছা থাকতে হবে।

শেষ কথা :আশা করি সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর এই ৭টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আপনার পোস্টটি ভালো লাগলো।এই সম্পকে আপনার অভিমত কি নিচে কমেন্ট বাক্স এ লিখে জানাতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১২ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা।

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।