মিউচুয়াল ফান্ড কি? মিউচুয়াল ফান্ডে কিভাবে বিনিয়োগ করব?

মিউচুয়াল ফান্ড কি

Last Updated on: 26th জুন 2022, 03:02 অপরাহ্ন

হ্যালো বন্ধুরা আজকের এই পোস্টে আমরা মিউচুয়াল ফান্ড কি,মিউচুয়াল ফান্ডে কিভাবে বিনিয়োগ করব,মিউচুয়াল ফান্ডের এর সুবিধা কি কি এই সমস্ত বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে সকলের কাছেই ইনভেস্টমেন্ট বা আর্থিক বিনিয়োগ খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সনাতনী ব্যাঙ্ক ,পোস্ট অফিস এর ফিক্সড ডিপোজিট বা স্থায়ী আমানতের উপর সুদের হার কমে যাওয়া আর অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধির জন্য মিউচুয়াল ফান্ড আজকাল অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই মিউচুয়াল ফান্ড এর হাল হকিকত জানাতেই আজকের এই পোস্ট আপনার জন্য। যারা মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করার কথা ভাবছেন তাদের জন্য এই পোস্ট সাহায্য করবে।

তো আসুন শুরু করা যাক।

মিউচুয়াল ফান্ড কি?

মিউচুয়াল ফান্ড হলো একটি এমন বিনিয়োগ ব্যবস্থা যার সাহায্যে একসাথে অনেক মানুষের টাকা জমা করে সেগুলিকে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার মার্কেট স্টক,বন্ড ,অ্যাসেট এবং আরো অন্যান্য বিনিয়োগ উপায়ে সেগুলো কি বিনিয়োগ করা হয়ে থাকে। মিউচুয়াল ফান্ড গুলি মূলত প্রফেশনাল ফান্ড ম্যানেজাররা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন তাই আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন যে আপনার বিনিয়োগ করা টাকাগুলি মিচুয়াল ফান্ডের সঠিক অর্থেই এবং সঠিক জায়গাতেই বিনিয়োগ করা হচ্ছে।

মিউচুয়াল ফান্ড এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিনিয়োগকারীর আর্থিক লক্ষ্য পূরণ করার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী ও স্বল্পমেয়াদী বিনিয়োগ ব্যবস্থা মিউচুয়াল ফান্ড বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু ভারতেই মিউচুয়াল ফান্ডের বাজার ৩৮ ট্রিলিয়ন হয়েছে যা গত ১০ বছরে সাড়ে প্রায় ৫ গুণ বেড়েছে।

এবার আসুন আমরা মিউচুয়াল ফান্ডে আরো কিছু খুঁটিনাটি ব্যাপারে আলোচনা করে নি।

মিউচুয়াল ফান্ড এর সুবিধা:মিউচুয়াল ফান্ড এ ইনভেস্ট বা বিনিয়োগ করা কেন লাভজনক?

মিউচুয়াল ফান্ডগুলি যেকোনো ইনভেস্টর বা বিনিয়োগকারী কাছে ইকুইটি বন্ড দেশি-বিদেশি বিভিন্ন রকম বড় কোম্পানির শেয়ার এইসব এর উপর বিনিয়োগ করার জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ এখানে আপনি যেমন কম বিনিয়োগেও বিভিন্ন রকম কোম্পানিতে আপনার অর্থ বিনিয়োগ করার সুযোগ পান।

যেহেতু আপনার মিউচুয়াল ফান্ডে টাকাগুলি বিভিন্ন রকম ফান্ডে বিনিয়োগ থাকে তাই আপনার ঝুঁকি ব্যাপারটা অনেক কম হয়ে যায় তবে মিউচুয়াল ফান্ডেরসব টাকাই যেহেতু শেয়ার মার্কেটে বিভিন্ন বন্ড এবং নানা সেক্টর এর কোম্পানি শেয়ার ইনভেস্ট করা হয় তাই কমবেশি শেয়ার মার্কেট ওঠাপড়ার সঙ্গে একটু ঝুঁকি তো থাকেই। তাই সঠিক মিউচুয়াল ফান্ড বাছাই করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আর একবার যদি আপনি সঠিক আর ভালো মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করতে পারেন তবে আপনার বিনিয়োগকারী অর্থ কম সময়ে অনেক বেশি আমানত তৈরী করতে পারে। বর্তমানে যেখানে ব্যাঙ্ক ফিক্স ডিপোজিট বা পোস্ট অফিসে স্থায়ী আমানত ,মান্থলি ইনকাম প্ল্যান বা এম আই এস সুদের হার অনেক কমেছে থেকে আজ মিউচুয়াল ফান্ড তা অর্থ বিকল্প বিনিয়োগ করার একটি দারুন মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

মিউচুয়াল ফান্ড কি ভাবে কাজ করে ?

এবারে আসুন মিউচুয়াল ফান্ড কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে একটু ভালো করে জেনে নি। আগেই বলেছি মিউচুয়াল ফান্ড একটি এমন অর্থ বিনিয়োগ ব্যাবস্থা যেখানে অনেক মানুষের থেকে টাকা জমিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি খাতে স্টক ,বন্ড এই সব জায়গাতেজায়গাতে ইনভেস্ট করা হয়। আপনার মিচুয়াল ফান্ডের কেমন লাভ হবে সেটি অনেকাংশে নির্ভর করে আপনি কোন মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করেছেন সেই হিসেবে।

আপনার ইনভেস্ট করা করার মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা কোন বন্ড বা সিকিউরিটি গুলি মার্কেটে এ বিনিয়োগ করা হলো আজকাল তার সমস্ত হিসেব আপনাকে দেয়া হয়ে থাকে আপনার মিউচুয়াল ফান্ড হাউস থেকে যাতে করে আপনার কাছে পরিষ্কার থাকে।

সব মিউচুয়াল ফান্ড হাউস এর কাছেই আপনার মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনার জন্য দক্ষ ফান্ড ম্যানেজার থাকে যাদের এই মানি মার্কেট বা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার অনেক বছরের অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা আছে। তাই আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন ভালো ফান্ড এ আপনার টাকা ঠিক জায়গাতেই বিনিয়োগ হচ্ছে।

নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV )

এবারে মিউচুয়াল ফান্ডে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা যাচ্ছে একে বলা হয়নি আবার নেট অ্যাসেট ভ্যালু কোন মিউচুয়াল ফান্ডে পারফরম্যান্স বাড়িটা কেমন হবে সেটি সম্পূর্ণভাবে এই নেট অ্যাসেট ভালুয়ে এর উপর নির্ভর করে।

এবারে আসুন জেনে নিন এই নেট অ্যাসেট ভ্যালু (NAV ) কি?

আপনি যখন কোনো মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করছেন তখন ওই মিউচুয়াল ফান্ড এর এক একটি ইউনিট প্রাইস হলো তার NAV .এখন শেয়ার মার্কেট এর শেয়ার এর দাম এর মতোই ইন NAV পরিবর্তন হয়।

তবে শেয়ার মার্কেট এ শেয়ার এর দাম যেমন সারাদিন ধরে ওঠানামা করে,এই NAV এর পরিবর্তন যেকোনো মিউচুয়াল ফান্ড এর ক্ষেত্রে শেয়ার বাজার বন্ধ হবার পর বেলা ৩ টা ৩০ মিনিট এ দিনে একবারই পরিবর্তন হয়। এই NAV শেয়ার মার্কেট এর ওঠানামার সাথে যেমন পরিবর্তন হয় তাই আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন NAV ভ্যালু যখন কম তখন সেই মিউচুয়াল ফান্ড এ ইনভেস্ট করার যাতে করে পরে NAV ভ্যালু বাড়লে আপনি ভালো লাভ করতে পারেন।

মিউচুয়াল ফান্ড কাদের জন্য ভালো?

মিউচুয়াল ফান্ড মূলত শেয়ার মার্কেটে ইনভেসমেন্ট একটি বিকল্প পথ। শেয়ার বাজার সম্পর্কে আমাকে সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখতে পারেন না বা যাদের হাতে শেয়ার মার্কেট নিয়ে খুবই সময় থাকে না তাদের জন্য একটি আদর্শ অপশন।এই কারণ মিউচুয়াল ফান্ডে আপনার বিনিয়োগকৃত অর্থ প্রফেশনাল ফান্ড ম্যানেজার ম্যানেজ করে থাকেন যার ফলে কখন কোন ফান্ড কখন উঠবে কখন কোন ফান্ড কখন পড়বে যাবে সেটি ফান্ড ম্যানেজাররা আপনার টাকা ঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করেন।

ইনভেস্টরস বা বিনিয়োগকারীরা মোটামুটি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে তিন ভাবে অর্থ ইনকাম করতে পারেন একটি অনলাইন থেকে যদি কোন কোম্পানীর কোন মার্কেট স্টক ডিভিডেন্ড দেয় এক্ষেত্রে আপনার যদি ওই কোম্পানি সব মিউচুয়াল ফান্ডের পোর্টফোলিও থাকে সেক্ষেত্রে আপনার সে ক্ষেত্রে সরাসরি আপনার ফান্ড এ লাভের অংক পাবেন।

দ্বিতীয় ক্ষেত্রে হল যদি আপনি যদি কোনো ভালো মিউচুয়াল ফান্ড যেমন SBI BLUE চিপ সস্তায় কেনেন তারপর যখন তার NAV ভ্যালু বেড়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপনার আপনি লাভের মুখ দেখতে পারেন পরে।

আপনি মিউচুয়াল ফান্ড এ কোন বিনিয়োগ করেন তখন আপনার এই ফান্ড ম্যানেজ করার জন্য জন্য কিছু চার্জ নেয়া হয় যা এই ফান্ড এর সঠিক পরিচালনা,ফান্ড ম্যানেজার এবং সংশ্লিষ্ট কাজকর্মে ব্যয় করা হয়.এটি কে অনেকে এক্সপেন্স এক্সপেন্স বলে থাকেন।

এছাড়া মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করার সময় আপনি মোটামুটি দুটি বিকল্প পাবেন একটি হলো একসাথে এককালীন টাকা বিনিয়োগ এর সুযোগ আর একটি হলো মাসে মাসে সিপ্ এর মাধ্যমে টাকা বিনিয়োগ যাতে করে আপনি ১০০ টাকা বা ৫০০ টাকা থেকেও বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন মিউচুয়াল ফান্ড এ।

সিপ্ এর মাধ্যমে বিনিয়োগ করলে আপনার ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে টাকা ডেবিট হয়ে যাবে প্রতিমাসে। সিপ্ এর মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করলে আপনি কম বিনিয়োগ করেও বাজার পড়লে বেশি ইউনিট কিনতে পারবেন আবার শেয়ার মার্কেট দামি হলে কম ইউনিট কিনবেন এতে করে আপনার ফান্ড এর রিস্ক বা ঝুঁকি কমবে।

যারা প্রথম বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন মিউচুয়াল ফান্ড এ তাদের জন্য আমার সাজেশন বা পরামর্শ হবে সিপ্ এর মাধ্যমে বিনিয়োগ করা।

মিউচুয়াল ফান্ড এর প্রকারভেদ

এবার আলোচনা করে নেয়া যাক মিউচুয়াল ফান্ড কত রকম এর হয় তার বিষয়ে। সাধারণভাবে মিউচুয়াল ফান্ড তিন রকম এর হতে পারে ওপেন এন্ডেড, ক্লোস্ড ইনন্ডেড, আর ইন্টারভ্যাল।

ওপেন এন্ডেড ফান্ড এর ক্ষেত্রে আপনি যখন খুশি ফান্ড থেকে আপনার টাকা তুলে নিতে পারেন। ওপেনন্ডেড ফান্ড এর মূল সুবিধা হলো আপনার টাকার লিকুইডিটি আর ভারতে মোট মিউচুয়াল ফান্ড এর ৫৯% ওপেন এন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ড।

ক্লোস্ড ইনন্ডেড মিউচুয়াল ফান্ড এর ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্য্যন্ত বিনিয়োগ করা যায় আর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনাকে আপনার টাকা বিনিয়োগ রাখতে হবে নয়তো পেনাল্টি হবার সম্ভবনা থাকে তবে সেবী SEBI বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বজায় রাখতে এই রকম ক্লোস্ড এন্ডেড ফান্ড থেকেও বাড়িয়ে যাবার দুই থেকে তিনটি উপায় নির্ধারণ করেছে।

ইন্টারভ্যাল মিউচুয়াল ফান্ড এর ক্ষেত্রে এটি ওপেন এন্ডেড আর ক্লোস্ড এর মাঝামাঝি হিসাবে কাজ করে। এটি ইনভেস্টরকে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়।

এবার আসি আরো একটি মিউচুয়াল ফান্ড এর সরল প্রকারভেদ এ যা দেখে সাধারণ বিনিয়োগকারী তাদের টাকা বিনিয়োগ করেন। এর হিসাবে আপনার টাকা কোথায় লাগানো হচ্ছে এর উপরে মিউচুয়াল ফান্ড গুলিকে মোটামুটি ৪টি ভাগে ভাগ করা যায়।

১.ইকুইটি ফান্ড

ইকুইটি ফান্ড মিউচুয়াল ফান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি মিউচুয়াল ফান্ডগুলির মধ্যে অন্যতম। মূলত জনপ্রিয় এবং বড় বড় কোম্পানি স্টকে ইনভেস্ট দেড় টাকা বিনিয়োগ করে।

এই সমস্ত কোম্পানি গুলিকে বলা হয় লার্জ ক্যাপ,মিডিয়াম ক্যাপ ,স্মল ক্যাপ কোম্পানি যাদের মার্কেট ভ্যালু বেশ ভালো আর দেশের সেরা কোম্পানি এর মধ্যে অন্যতম। তবে এই সকল ফান্ড যেহেতু সরাসরি শেয়ারমার্কেট এর সাথে যুক্ত তাই এখানে লাভ যেমন ভালো হতে পারে তেমন ক্ষতির পরিমাণ ও বেশ ভালো থাকে।তাই এই ,ইকুইটি ফান্ড একটু ঝুঁকিপূর্ণ তো বটেই।

কয়েকটি ভালো ইকুইটি ফান্ড এর নাম হলো এক্সিস লং টার্ম ইকুইটি ফান্ড,SBI লং টার্ম ইকুইটি ফান্ড। এই সমস্ত ইকুইটি ফান্ড এর রিটার্ন মোটামুটি লং টার্ম বা ৩-৫ বছরের জন্য টাকা রাখলে ১০-১২% আশা করা যায় কমপক্ষে।

২.ডেবিট ফান্ড


ডেবিট ফান্ড হলো সেই রকম মিউচুয়াল ফান্ড ক্যাটাগরি যেখানে আপনার বিনিয়োগ করা টাকা সাধারণ ভাবে সরকারি ঋণপত্র ,কর্পোরেট ঋণপত্র ,এই সমস্ত খাতে বিনিয়ো করা থাকে যে সকল সোর্স থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমান টাকা প্রতিমাসে আসার সম্ভবনা থাকে।

ডেবিট ফান্ড আসলে সেরকম ইনভেস্টর দেড় জন্য ভালো যারা বেশি ঝুঁকি নিতে চান না কিন্তু ব্যাঙ্ক ডিপোজিট বা পোস্ট অফিস এর রিটার্ন এর থেকে বেশি রিটার্ন নিতে চান। কিছু ভালো ডেবিট ফান্ড এর নাম হলো HDFC শর্ট টার্ম ডেবিট ফান্ড,SBI শর্ট টার্ম ডেবিট ফান্ড। ৩-৫ বছরের জন্য টাকা রাখলে ডেবিট ফান্ড এ ৭-৮% রিটার্ন আশা করা যায় কমপক্ষে।

৩.হাইব্রিড স্কিম

হাইব্রিড স্কিম হলো সেই রকম মিউচুয়াল ফান্ড ক্যাটাগরি যা তার মধ্যে টাকা ইকুইটি,ডেবিট মার্কেট ও আরো অন্য খাতে বিনিয়োগ করে। হাইব্রিড স্কিম এর মূল সুবিধা হলো যেহেতু এখানে টাকা সব রকম স্কিম বা সেক্টর এর নানা খাতে বিনিয়োগ করা হয় তাই আপনার রিটার্ন কোনো একটি ফান্ড বা সেক্টর এর উপর নির্ভর করে না।

উদহারণ বলতে গেলে বলতে হয় যদি আপনি ৫০০০০ টাকা আজ হাইব্রিড স্কিম এ বিনিয়োগ করেন তবে একটি সেক্টর যেমন ব্যাঙ্কিং যদি কিছুটা নিচে থাকে তবে আপনার টাকা অন্য সেক্টর যেমন FMGC সেক্টর থেকে টাকা তুলে নেই তার কারণ কোনো সময়েই একসাথে সব সেক্টর খারাপ পারফর্ম করতে পারে না.

তাই এক্ষেত্রে আপনার রিস্ক অনেকটা কমে যায়। কয়েকটি ভালো হাইব্রিড স্কিম এর নাম হলো SBI ইকুইটি হাইব্রিড ফান্ড,সুন্দরম ইকুইটি হাইব্রিড ফান্ড।৩-৫ বছরের জন্য টাকা রাখলে হাইব্রিড স্কিম এ ৬-৮% রিটার্ন আশা করা যায় কমপক্ষে।

৪. সল্যুশন ওরিয়েন্টেড মিউচুয়াল ফান্ড

সল্যুশন ওরিয়েন্টেড মিউচুয়াল ফান্ড সাধারণত একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করার জন্য করা হয়ে থাকে। এই সাধারণত রিটায়ারমেন্ট,বিবাহ,পড়াশোনার জন্য মূলধন যোগান এর জন্যই করা হয়ে থাকে। সাধাৰণভাবে সল্যুশন ওরিয়েন্টেড মাতাল ফান্ড ও আপনি সিপ্ বা এককালীন যেকোন ভাবে টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন।

এটি সাধাৰণভাবে লং টার্ম প্ল্যান হয় এর এই সব প্ল্যান এর জুন সাধাৰণভাবে হাই রিটার্ন আশা করা যায়। যেহেতু এত কম সময় এর জন্য বিনিয়োগ করা হয় না তাই অস্থির শেয়ার মার্কেটের রিস্ক এর থেকে এই সব ফান্ড বেশ সুরক্ষিত। তবে এর থেকে পাওয়া রিটার্ন কিন্তু আয়কর এর আওতায় থাকে লংফে টার্ম ক্যাপিটাল গেইন এর জন্য। ৫ বছরের জন্য টাকা সল্যুশন ওরিয়েন্টেড মিউচুয়াল ফান্ড রাখলে ৭-৮% রিটার্ন আশা করা যায় কমপক্ষে।

কিছু ভালো সল্যুশন ওরিয়েন্টেড মিউচুয়াল ফান্ড হলো টাটা RETIREMENT সেভিংস ফান্ড,ICICI রিটায়ারমেন্ট AGGRESIVE ফান্ড।

মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করবেন কি ভাবে?

এবারে আসি মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ এর ব্যাপারে। আপনি এবং অনেক সহজেই অনলাইন বা অফ লাইন এ মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করতে পারেন যেকোনো সময়। আপনার যে ব্যাঙ্ক এ একাউন্ট সেই ব্যাঙ্ক এর সংশ্লিট শাখায় গিয়ে ফর্ম পূরণ করে আপনি করতে পারেন বা ওই ব্যাঙ্ক এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ মিউচুয়াল ফান্ড এর মধ্যে গিয়ে আপনি ঘরে বসেও বিনিয়োগ করতে পারেন অনলাইন।

তবে এখন অনেক দারুন ট্রেডিং প্লাটফর্ম বাজারে আছে যার মধ্যে আপনি সহজেই প্রায় বিনাখরচে যেকোনো সংস্থার মিউচুয়াল ফান্ড আপনার মোবাইল থেকেই করে নিতে পারবেন কোনো ব্রেকিং চার্জ ছাড়াই।

আমার সবচেয়ে পছন্দের ট্রেডিং প্লাটফর্ম হলো GROWW APP যার সাহায্যে আপনি বিনা খরচে ঘরে বসেই ফিক্সড ডিপোজিট,মিউচুয়াল ফান্ড আর শেয়ার মার্কেট পছন্দের শেয়ার কিনে বিনিয়োগ শুরু করতে পারবেন।

GROWW APP এর ডাউনলোড লিংক হলো https://app.groww.in/v3cO/h3p7f4mv GROWW APP হলো একটি SEBI স্বীকৃত ট্রেডিং APP তাই তকবার কোনো ভয় নাই। শুধুমাত্র আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় KYC ডকুমেন্ট হাতের কাছে রাখতে হবে আর একাউন্ট বানাবার সময় সেইগুলি ঠিক স্টেপ এ আপলোড করে দিলেই আপনি ২ মিনিট এর মধ্যেই বিনিয়োগ শুরু করতে পারবেন। প্রায় ৩ কোটির বেশি মানুষ GROWW ব্যাবহার করছেন।

আপনি এন্ড্রোইড ,IOS সব মোবাইল থেকেই এই GROWW APP ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে পাতায় ৫ বছর এই GROWW APP ব্যাবহার করছি আর আমার সবসময়েই GROWW APP সেরা মনে হয়েছে। শেয়ার কেনা বেচা ,মিউচুয়াল ফান্ড কেনা বেচা সব উইথড্রয়াল খুব সহজেই ব্যাঙ্ক একাউন্ট এ হয়ে যায়। কোনো সমস্যা হলে এদের সাপোর্ট চ্যাট বেশ ভালো আপনাকে সাহায্য করবে। মোবাইল APP এর পাশাপাশি GROWW এর ওয়েব পোর্টাল থেকেও আপনি চাইলে সব বিনিয়োগ করতে পারেন আপনার সুবিধা মতো।

এছাড়া আপনি চাইলে আরো কিছু অন্য ট্রেডিং প্লাটফর্ম যেমন Angel One,5Paisa,Zerodha এই সব প্লাটফর্ম থেকেও মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করতে পারেন। সব কয়টি দারুন ভাবে কাজ করে।

মিউচুয়াল ফান্ড এ ঝুঁকি কতখানি ?

আগেই বলেছি যে মিউচুয়াল ফান্ড সবসময় বাজার বা শেয়ার মার্কেট এর উপর কম বেশি নির্ভরশীল। শেয়ার মার্কেট এর মতো অতটা ঝুঁকি না হলেও কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করলে কম বেশি ঝুঁকি একটু আছেই। তবে যেহেতু মিউচুয়াল ফান্ড প্রফেশনাল ফান্ড ম্যানেজার ম্যানেজ করে থাকেন তাই বাজার সম্পর্কে তাদের জ্ঞান অনেক বেশি আর তাতে করে আপনার ঝুঁকির পরিমান অনেক কমে যায়।

তবে কখনোই সঞ্চয়ের সব টাকা একসাথে মিউচুয়াল ফান্ড এ ইনভেস্ট করা উচিত নয়। আমার মতে আপনার সঞ্চয় এর ৩০-৪০% মিউচুয়াল ফান্ড এ বিনিয়োগ করা উচিত বাকিটা ব্যাঙ্ক ,পোস্ট অফিসে মেয়াদি ঝুঁকিহীন প্রকল্পে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১২ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা।

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।