Last Updated on: 17th জুলাই 2022, 06:47 পূর্বাহ্ন
হ্যালো বন্ধুরা আজকের এই পোস্টে আমরা জানবো সার্চ ইঞ্জিন কি ও বিশ্বের জনপ্রিয় ১৯ টি সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে কথা বলব। আমরা সবাই জানি ইন্টারনেটে দুনিয়াতে সার্চ ইঞ্জিন এর গুরুত্ব কতখানি ! সার্চ ইঞ্জিন আর ইন্টারনেট আজ প্রায় সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
StatCounter ২০২২ হিসাবে ,সার্চ ইঞ্জিন এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে গুগল (মার্কেট শেয়ার প্রায় ৯১%),এর পর আছে বিং (মার্কেট শেয়ার প্রায় ৩.১%),বাইদু (১.৫%),ইয়াহু (১.৪%) রাশিয়ান সার্চ ইঞ্জিন ইয়ানডেক্স (১.০৭),ডাক ডাক গো (০.৬৯%) .
ইন্টারনেটে দুনিয়াতে তথ্য আহরণ করতে গেলে আমাদের কোন না কোন সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্য নিতে হয় কারণ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি তথ্যের মধ্যে আমাদের প্রয়োজনীয় অংশটি খুঁজে বের করা সার্চ ইঞ্জিনের দ্বারা একমাত্র সম্ভব।
খুব কম সময়ে এবং দারুন নির্ভুলতার সাথে সার্চ ইঞ্জিন আমাদের আমাদের কাঙ্ক্ষিত প্রয়োজনীয় তথ্য গুলি আমাদের কাছে এনে দেয়।
তো সার্চ ইঞ্জিন মানে আমরা সকলেই গুগোল এ কথা জানি গুগোল হলো দুনিয়াতে সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন ও অনেকের প্রিয় বটে।
কোন কিছু তথ্য ইন্টারনেটে খুঁজতে গেলে গুগোল এর জুড়ি মেলা ভার কম সময়ে এবং নির্ভুল ভাবে আপনাকে আপনার কাংখিত তথ্য গুগল সার্চ ইঞ্জিন উপহার দেয় তা সে ভিডিও ই হোক কোন টেক্সট লেখাই হোক কোন ছবি হোক বা অন্য কিছু।
গুগল একটি অসাধারণ সার্চ ইঞ্জিন এবং যা তার বিশ্বমানের প্রযুক্তি এর উপর ভর করে ইন্টারনেটের কোটি-কোটি ওয়েবসাইট এর মধ্যে সবচেয়ে উপযোগী তথ্যটি খুবই কম সময়ের মধ্যে উপহার দেয় সম্পূর্ণ নিখরচায়।
কিন্তু বর্তমানে মানে গুগলের মতো আরো অনেক সার্চ ইঞ্জিন বাজারে এসেছে যেগুলি বিষয়ে আমাদের জেনে রাখা উচিত। গুগলের মত না হলেও এগুলি অনেক কাজে আস্তে পারে নানা প্রয়োজনে। তো আজ আমাদের এই পোষ্টের সেই রকমই নীচু ভালো সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে আমরা আলোচনা করব।
সার্চ ইঞ্জিন এর লিস্ট সম্পর্কে আলোচনা করার আগে চলুন একটু জেনে নিন কোন সার্চ ইঞ্জিন সংক্ষেপে কিভাবে কাজ করে।
সূচিপত্র
সার্চ ইঞ্জিন কি?
সার্চ ইঞ্জিন মূলত একটি অটোমেটিক সফটওয়্যার যা নানা ওয়েবসাইট ভিজিট করে সমস্ত তথ্য নিজের ইন্ডেক্স বা ডাটাবেস এ জমা রাখে এরপর সেই সমস্ত তথ্য গুলি সার্চ ইঞ্জিনগুলো তাদের নিজস্ব অ্যালগরিদম এর মত সাজিয়ে ইউজারের কাছে পেশ করে।
গুগল সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে এটি বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য আমার অন্য এই পোস্টটি দেখতে পারেন।
তো চলুন শুরু করি।
১.গুগল
গুগোল ইন্টারনেটের দুনিয়াতে সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন প্রায় ৯০% মার্কেট শেয়ার নিয়ে গুগল বিশ্বের বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে আমাদের কাছে বিরাজ করছে। গুগলের জনপ্রিয়তার অনেক কারণ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো তার নির্ভুলভাবে সবচেয়ে উপযুক্ত তত্ত্ব হাজির করার ক্ষমতা।
গুগলের হাজার হাজার এমপ্লয়ি, ইঞ্জিনিয়ার ডাটা সাইন্টিস্ট দিনরাত গুগল সার্চ কে আরও উন্নত করার পেছনে কাজ করছেন। আজ যার ফলস্বরূপ আমরা মুহূর্তের মধ্যে এতো সুন্দর এবং এত নির্ভুলভাবে তথ্য আমরা পাই।
গুগোল সময় সময় নিজস্ব সার্চ অ্যালগরিদম কে পরিবর্তন করে সবচেয়ে উপযুক্ত রেজাল্ট আমাদের কাছে পেশ করে,যাতে অবান্তর এবং লো কোয়ালিটি কনটেন্ট ওয়েবসাইটগুলি আমাদের সার্চ রেজাল্ট এ না আসে সেটি নিশ্চিত করে।
নিজের মানের বিষয়ে গুগল সদা সর্বদায় খেয়াল রাখে অ্যাডভান্স মেশিন লার্নিং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়মিত এই সমস্ত ওয়েবসাইট গুলি ক্রল করে ওদের কাছে সবচেয়ে উপযুক্ত রেজাল্ট পৌঁছে দিচ্ছে। গুগোল কে বাহবা দিতেই হবে এর জন্য। সার্চ ইঞ্জিন এর রেজাল্ট পৌঁছে দেয়া
শুধু নয় গুগল আজকাল সার্চ ইঞ্জিনে সুজাসুজি প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে কোন ইউজারকে ওয়েবসাইটে যেতে হচ্ছে না সরাসরি ওই গুগল সার্চ থেকেই ইউজার তার তথ্য পেয়ে যাচ্ছে একে অনেকে রিচ স্নিপেট বলে। এছাড়া স্ট্রাকচার্ড মার্কআপ , গুগল ম্যাপ, এই সমস্ত বিষয় এর মাধ্যমে গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে প্রতিদিন নতুন ভাবে উপস্থাপিত করছি যাতে ইউজারের কাছে সবচেয়ে ভালো তথ্য পৌঁছায়।
সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে google এর প্রয়োজনীয়তা:
শুধু সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে তথ্য দেওয়াই নয় গুগোল বিভিন্ন ওয়েবসাইট পাবলিশার বা ওয়েবসাইট ওনার কে তাদের তথ্যের বিনিময় মনিটাইজেশন এর সুযোগ দেয় যার ফলে প্রচুর ওয়েব পূবালিশের নিজেদের ওয়েবসাইটে গুগলের অ্যাড লাগিয়ে ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে পারেন গুগোল আজ কোটি কোটি মানুষের রুজি রোজগারের ও একটি ভালো ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।
এছাড়াও গুগলের ওপর নির্ভর করেই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠেছে যার ফলে প্রচুর সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন প্রফেশনাল প্রফেশনালরা আজ কাজ করে তাদের দৈনন্দিন পেশা উপার্জন করছেন।
তাই গুগল সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও গুগোল কে ঘিরে একটি বড় ইকোসিস্টেম তৈরি হয়েছে মধ্যে আজ সার্চ থেকে আরম্ভ করে গুগল এনালিটিক্স,গুগল ডাটা ষ্টুডিও ,গুগল এডস বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত আছে যার ফলে গুগোল ইন্টারনেট এর জগতে আজ মহীরুহতে পরিণত হয়েছে।
কিন্তু মজার ব্যাপার এই যে গুগল এর প্রতিঠাতা ল্যারি পেজ এবং সার্গেই ব্রিন গুগলের এই অভূতপূর্ব সাফল্য সম্পর্কে প্রথমে কিছু আঁচ করতে পারেননি। একটি ইউনিভার্সিটি প্রজেক্ট থেকে শুরু করে গুগল আজ বিশ্বের অন্যতম বড় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি তে পরিণত হয়েছে এবং এর জন্য সমস্ত কৃতিত্ব গুগোল টিমের প্রাপ্য।
গুগলের বিকল্প সার্চ ইন্জিনের তালিকা
২.মাইক্রোসফট বিং
চলুন এবার মাইক্রোসফট বিং সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। এটি মাইক্রোসফট এর একটি সার্চ ইঞ্জিন পৃথিবীর দ্বিতীয় জনপ্রিয়তম সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে মনে করা হয়। যদিও মাত্র ২.৩৯% মার্কেট শেয়ার আছে তবুও এ সার্চ অনেক মানুষ মাইক্রোসফট বিং ব্যবহার করেন, বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা থেকে বিংয়ের সাহায্যের পরিমাণ অনেক বেশি। অনেকের মতে গুগলের থেকে আরও ভালো রেজাল্ট ইউজারদের কাছে প্রেজেন্ট করে বিং। কিন্তু ব্যাপারটি তর্ক সাপেক্ষ।
মাইক্রোসফট সার্চিং দুনিয়াতে প্রথম আসে ১৯৯৮ সালে MSN নাম। কিন্তু এমএসএন প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়লেও কিন্তু মাইক্রোসফট কখনোই সার্চ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় নি এই তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়েও মাইক্রোসফ্ট চেষ্টা করে গেছে গুগলের সঙ্গে প্রতিযোগিতার করার যা আজও সমান তালে চলছে। ২০০৬ সালে এমএসএন লাইভ নতুন সাজে পরিণত হল। সাথে মাইক্রোসফট এর ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার যা আগে থেকে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে ছিল সেটিও বেশ জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার হয়েছিল।
এরপর সময়ের হাত ধরে ২০০৯ সালে লাইভ সার্চ থেকে বিংয়ের নতুনভাবে রি-ব্রান্ডিং হল মাইক্রোসফট বিং এর সার্চের। গুগলের মত তাদের সার্চ ইঞ্জিন কে সময়োপযোগী এবং কার্যকরী রাখার জন্য প্রচুর গবেষণা করে। এবং এই বিষয়ে প্রচুর খরচ করে তাদের এখন আলাদা ক্রলিং এবং ইনডেক্সিং সিস্টেম রয়েছে যার ফলে সমস্ত তথ্য ডেটাবেসে ইধরে রাখে এবং ইউজার এর কাছে তার প্রয়োজন মতো সার্চ করে সেগুলি পেশ করে।
গুগলের থেকে আলাদা করে মাইক্রোসফট সার্চের একটি বিষয় আমার চোখে পড়েছে যেটি হল তাদের সার্চ হোম পেজ। সময়ে সময়ে হোমপেজে ডিজাইন পরিবর্তন করে।
গুগল এর মতো বিং এর নিজস্ব monetization প্লাটফর্ম media net আছে যা ব্যবহার করে publisher অর্থ উপার্জন করতে পারে। তবে গুগোল এডসেন্স এর সাথে media net এর একটি বাস্তবিক এটি একটি বাস্তবিক পার্থক্য রয়েছে। আপনার আপনার ওয়েবসাইট যদি ইংরেজি ভাষায় না হয় এবং আপনার ভিজিটর যদি উত্তর আমেরিকা এবং ইংলিশ ইংলিশ স্পিকিং কান্ট্রি থেকে না আসে। উদহারণ রোপ আপনি যদি বাংলা ভাষায় ব্লোগ্গিং করেন সে ক্ষেত্রে আপনার উপার্জন অনেক কম হবে গুগোল এডসেন্স এর তুলনায়। তবুও অনেকে media net এর তাদের ওয়েবসাইট এড এর মাধ্যমে ব্যবহার করেন লক্ষ লক্ষ ডলার ইনকাম করেন। এছাড়াও এছাড়াও Microsoft-এর এর ইমেজ সার্চ ,ভিডিও সার্চ এই সার্ভিসগুলো দারুন ভালোভাবে কাজ করে।
সমস্ত মিইয়ে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটে বিং এর শেয়ার রয়েছে প্রায় ৭% এবং এটি প্রতিদিনই ভিডিও গুগল এর বিকল্প সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অদূর ভবিষৎতে গুগল কে কেউ যদি ভালো ভাবে প্রতিযোগিতা দিতে পারে তা সেটা মাইক্রোসফট বিং।
৩.ইয়াহু সার্চ
এবারে আসি লিস্ট এর ৩ নম্বর এ থাকে ইয়াহু এর কোথায়। ইয়াহু বিং এর আগে শুরু করলেও বর্তমানে বর্তমানে ইয়াহু সার্চ ইঞ্জিনের মার্কেট শেয়ার প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। একময় ২০০১ সালে ইয়াহু এর সোনালী সময়ে ইয়াহু এর মার্কেট শেয়ার ছিল পারে ৩৬% যা আজ কমে ১.৬৭% হয়েছে। অতীতের গৌরব আজ অস্তমিত।
তবুও বহু মানুষ এখনো ইয়াহু ব্যাবহার করে। বর্তমানে ইয়াহু বিং এ সাথে হাত মিলিয়ে নিজের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০২ সালে একটা সময় ইয়াহু, গুগলকে অধিগ্রহণ করবে ঠিক ছিল কিন্তু কোনো কারণে ১ বিলিয়ন ডলার এর সেই ডিল বাতিল হয়ে যায় জেক ২১ শতকের সবচেয়ে বড় হারানো সুযোগ বলে অনেকে মনে করেন। দেয়ালটি হলে আজ ইন্টারনেট এর দুনিয়াতে ইয়াহু এর অবস্থান অন্য হতো। যাইহোক ইয়াহু সার্চিং এর থেকেও বর্তমানে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল হিসেবে পরিচিত এখন। আপনি ইয়াহু সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে গিয়েএকসাথে ক্রিকেট ,নিউজ, লাইভ স্টাইল,সব তথ্য পাবেন।
৪.বাইদু
এইবারে আসি ৪ নম্বর এ থাকা বাইদু এর কথায়। বাইদু মূলত একটি চীনা সার্চ ইঞ্জিন এবং এটি Robin Li প্রতিষ্ঠা করেন। চীন দেশে গুগোল এর প্রায় সমস্ত সার্ভিস রায় বন্ধ বা ব্লক করা হয়েছে তাই গুগলের অবর্তমানে সরকারের অধীনে চীনের সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বাইদু।
চিনা মার্কেটে এটি মার্কেট শেয়ার প্রায় ৬৫ শতাংশ। রবিন ১৯৯৬ সালে প্রথম RankDex বলে কি সার্চ ইঞ্জিন চীনে নিয়ে আসেন। বাইদু ,গুগোল এর মতই প্রায় সব সার্ভিস দেয় এবং নিজস্ব এড নেটওয়ার্ক চালায় এবং ভয়েজ বেস সার্চ হিসেবে বাইদু প্রতিমাসে ২.৩৭ বিলিয়ান ভয়েস সার্চ করে সম্পাদনা করে যেটি অনেক। বাইদুর ভয়েস এসিসট্যান্ট এর DuerOS . সারা পৃথিবীতে বাইদুর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১.৫ বিলিয়ন যার মধ্যে 90% লোকের চীন দেশে। বাইদু প্রথম পেজ RANK এর ধারণা নিয়ে আসে.গুগল এর ও আগে।
বর্তমান হিসেবে প্রায় প্রতিদিন বাইদু এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭৪ মিলিয়ন।
৫.ডাকডাকগো
৫ নম্বরে আছে ডাকডাকগো। 2008 সালে প্রতিষ্ঠিত ডাকডাকগো। non-profitসার্চ ইঞ্জিন হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিত হয়। ডাকডাকগো প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি প্রাইভেসি। বর্তমানে প্রাইভেসি নিয়ে গুগোল ,বিং ,ফেসবুক এর মত তাবড় সংস্থাগুলি বেশ বিপাকে সেই ক্ষেত্রেই জোর দিয়ে নিজেদের ১০০% প্রাইভেসি সচেতন সার্চিং হিসেবে মানুষের কাছে উপস্থাপন করছে যার ফলে বর্তমানে ধীরে ধীরে ডাকডাকগো একটি গুগল এর বিকল্প সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিতি পাচ্ছে।
ডাকডাকগো এর অফিশিয়াল সোর্স বা সূত্র অনুযায়ী ডাকডাকগো প্রায় ৪০০ টি আলাদা সোর্স থেকে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে যার মধ্যে আছে ইয়াহু, ইয়ানডেক্স , উইকিপিডিয়া আরো অনেকে। ২০০৯ সালে ডাকডাকগো ৫০ মিলিয়ন সার্চ প্রতিদিনের হিসাব ছুঁয়ে ফেলে অনেকে এই ডাকডাকগো কে সম্ভাব্য গুগলের প্রতিযোগী হিসেবে মনে করেছেন। বর্তমানে ডাকডাকগো এর প্রায় ৮৬ জন কর্মী রয়েছে এবং যারা মূলত ইউজারদের অর্গানিক সার্চের উপর বেশি জোর দেয়। ২০২০ এর হিসাব অনুযায়ী ডাকডাকগো এর মার্কেট শেয়ার ০.৫% আর প্রতিদিন এটি ৫ কোটির বেশি সার্চ সম্পাদনা করে।
৬. ইয়ানডেক্স
ইয়ান্ডেক্স আছে তালিকার ৬ নম্বর এ। সার্চ ইঞ্জিন ইয়ান্ডেক্স হলো রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন।রাশিয়া তে ইয়ান্ডেক্স এর মাকেট শেয়ার গুগল এর চেয়ে বেশি। Arkady Volozh ও Arkady Borkovsky ১৯৯৩ সালে ইয়ান্ডেক্স তৈরি করেন। ইয়ান্ডেক্স হলো প্রথম সার্চ ইঞ্জিন যা কন্টেক্সচুয়াল টেক্সট এড সর্বপ্রথম শুরু করে সেই ১৯৯৮ সাল থেকেই। তবে বর্তমানে গুগল এর থেকে এটি তীব্র প্রতিযোগিতা পাচ্ছে। বর্তমানে
ইয়ান্ডেক্স এর রাশিয়া তে মার্কেট শেয়ার প্রায় ৪৬% আর গুগল এর ৫০ %.
ইয়ানডেক্স এর গ্লোবাল সার্চ মার্কেট শেয়ার ০.৪৪%.
৭. Ask.com
Ask.com তালিকা সাত নম্বরে আছে। Ask.com হলো একটি কোশ্চেন অ্যানসার,বা প্রশ্ন উত্তর ভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন। Ask.com ইঞ্জিনটি প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। আজকের হেডকোয়ার্টার রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া অকল্যান্ডে। Ask.com তৈরী করেন Garret Gruener ও David Warthen.
Ask.com এর সবচেয়ে বড় গুণ হলো আজ কোন ইউজারকে কোন টি ওয়েবসাইট ভিজিট করার আগেই তার প্রিভিউ দেখিয়ে দেয়। দারুন!
৮. Naver
Naver সাউথ কোরিয়া এর সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন। Naver সার্চ ইঞ্জিন প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। নাভের হল পৃথিবীর সবচেয়ে সর্বপ্রথম সার্চ ইঞ্জিন যেটি ক্যাটেগরি হিসেবে ভাগ করে তাদের সার্চ রেজাল্ট দেখানো শুরু করে। বর্তমানে নাভের নিউজ, ইমেইল সার্ভিস দেয়। সাউথ কোরিয়াতে নাভের কে অনেকে সাউথ কোরিয়ার গুগোল এ বলে থাকেন।
৯. AOL
AOL মূলত একটি মার্কিন সার্চ ইঞ্জিন। ১৯৯০ এর দশকে নিউ ইয়র্ক থেকে এটি শুরু হয়। মূলত AOL সার্চ এর মাধ্যমে মধ্যে ইউজাররা সার্চ ,ইমেজ ,মাল্টিমিডিয়া ,শপিং ,নিউজ লোকাল সার্চ সবকিছু পেয়ে থাকেন।AOL সার্চ এর ইন্টারফেস অনেকটা ইয়াহু এর ওয়েবপোর্টাল এর মতো কাজ করে।
১০.Seznam
Seznam মূলত চেক প্রজাতন্ত্র এর একটি সার্চ ইঞ্জিন যা ৯৯৬ সালে Ivo Lukačovič প্রতিষ্ঠা করেন।
১১.Yippy
ডিপ ওয়েব এর ওয়েবসাইট এর জন্য যারা খোঁজ করেন তাদের জন্য Yippy বেশ দারুন সার্চ ইঞ্জিন।গুগল,বিং এর মূলত সারফেস ওয়েব ওই ওয়েবসাইট এর তথ্য আমাদের দেয়। কিন্তু Yippy সে সব ওয়েবসাইট থেকে আমাদের তথ্য আমাদের পেশ করে গুগল বা বিং ক্রল ও ইনডেক্স করতে পারে না। এছাড়া এত একটি মেটা সার্চ ইঞ্জিন হিসাবেও কাজ করে যা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহার করে আমাদের রেজাল্ট দেয়।
১২. CC Search
CC Search কে সার্চ ইঞ্জিন এর থেকে ইমেজ সার্চ ইঞ্জিন বলা ভালো। এটি পাবলিক ডোমেইন এ থাকে ডকুমেন্ট আর ইমেজ সার্চ করে আমাদের দেয় যেটি ব্যাবহার ওরে কপিরাইট ছাড়া ইমেজ আমরা পেতে পারি যা আমাদের নানা কাজে লাগে। এটি চালু হয় ২০০২ সালে।
১৩.Gibiru search engine
Gibiru search engine মূলত একটি প্রাইভেসী সচেতন সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে নিজেকে দাবি করে। ২০০৯ সালে এটি চালু হয়। Gibiru যাবি করে তারা কোনো কুকি আর ট্র্যাকিং,IP রেকর্ড রাখে না ফলে ইউসারদের প্রাইভেসী ১০০% বজায় থাকে।
১৪.Search Encrypt
২০১৬ সালে চালু হয় Search Encrypt আর একটি প্রাইভেসী সচেতন সার্চ ইঞ্জিন যা দাবি করে তাদের সার্চ ১০০% এনক্রিপ্টেড। কোনো ট্র্যাকিং এর নেই তাই ১০০% প্রাইভেসী এরা দেয়।
১৫.StartPage
StartPage ও একটি প্রাইভেসী সচেতন সার্চ ইঞ্জিন যা নিচের পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে সার্চ করতে সাহায্য করে কোনো ট্র্যাকিং ছাড়া।
১৬.Ecosia
ইকোশিয়া একটি দারুন সার্চ ইঞ্জিন যারা নিজেদের পরিবেশবান্ধব বলে দাবি করে। ২০০৯ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতি ৪৫টি সার্চ এ ইকোশিয়া একটি গাছ রোপন করে যা একটি দারুন প্রয়াস। ইকোশিয়া একটি রিভাসি সচেতন সার্চ ইঞ্জিন যা তাদের সার্ভার সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এনার্জি দিয়ে চালায়। এছাড়া Ecosia তাদের প্রতি বছর এ প্রকাশিত ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট প্রকাশ করে সবাইকে জানায় ঠিক তাদের কত ইনকাম হলো আর সেই টাকা কোন খাতে কত খরচ হচ্ছে। কি দারুন তাই না ?
১৭. WolframAlpha
WolframAlpha এমনি একটি সার্চ ইঞ্জিন যেটি ডাটা সাইন্স আর গাণিতিক বিষয়ের উত্তর সরাসরি অংক কষে আপনাকে জানিয়ে দেয়।
রিসার্চ ওয়ার্ক এর জন্য এটি একটি দারুন সার্চ ইঞ্জিন বৈকি।
১৮.Lycos
১৯৯৫ সালে চালু হওয়া Lycos একটি অনেক পুরানো সার্চ ইঞ্জিন। ওয়েবহোস্টিং,সোশ্যাল মিডিয়া ,শপিং থেকে শুরু করে অনেক কিছু আপনি এখানে পাবেন। সাধারণ সার্চ ছাড়াও আপনি নানা অনলাইন গেম এর সার্চ করতে পারবেন।
১৯.Neeva
প্রাক্তন গুগল এমপ্লয়ী Sridhar Ramaswamy এর দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি একটি ফ্রি সার্চ ইঞ্জিন নয় বরং একটি সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক সার্চ ইঞ্জিন যেখানে আপনাকে পরিষেবার জন্য খরচ করতে হবে। এটি বিং এর ডাটা কে কাজে লাগিয়ে কাজ করবে।
সার্চ ইঞ্জিন সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর
বাংলা সার্চ ইঞ্জিন কয়টি?
বর্তমানে বাংলাতে কোনো সার্চ ইঞ্জিন সক্রিয় নেই।
বাংলায় সার্চ ইঞ্জিন বলতে ছিল মূলত ১টি। বিশেষ নাম করা যায় Pipilika (Bengali: পিপীলিকা।শুনতে অবাক লাগলেও পিপীলিকা এটি প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন যা একসাথে বাংলা আর ইংলিশ দুইটি ভাষাতেই কাজ করতে পারে।তবে বর্তমানে এটি আর কাজ করছে না। পিপীলিকা সার্চ ইঞ্জিন আসলে পাঁচটি ক্যাটাগরি বা বিভাগ ছিল। নিউস,ব্লগ ,বাংলা উইকিপেডিয়া ,ন্যাশনাল ekosh যার মধ্যে বেশ জনপ্রিয় ছিল। ২০১৩ সালে Shahjalal University of Science and Technology, Sylhet এর দ্বারা এটি তৈরী হয়ে ছিল।
এর পরে চরকি নাম আর একটি সার্চ ইঞ্জিন বাংলাতে তৈরী হয় তবে বর্তমানে আর সেটি কার্যকরী নয়। চরকি বর্তমানে একটি মুভি এন্টারটেন্টমেন্ট পোর্টাল এ পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে তাদের অফিসিয়াল এড্রেস www.chorki.com তাই বলে।
২০১৫ সালে এপ্রিল এ বাংলাদেশ এ শুরু হয় রাশেদ মোসলেম এর চরকি বর্তমানে আশা জাগিয়েও এগোতে পারেনি।
এই সকল বাংলা সার্চ ইঞ্জিন গুলি সফল না হবার পিছনে আসলে নানা কারণ আছে যার মধ্যে নিয়মিত প্রযুক্তির উন্নতি আর মূলধন এর অভাব বিশেষ ভাবে প্রকট। নির্দিষ্ট মার্কেটিং প্ল্যান না থাকলে কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন মার্কেট এ সোফা হয় অসম্ভব।
গুগল যেখানে প্রতিদিন তাদের প্রযুক্তি উন্নতি করে চলেছে ,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করে চলেছে সেখানে বাংলাতে সেইরকম প্রয়াস এখনো দেখা যাচ্ছে না। তবে অদূর ভবিষ্যতে এটি পাল্টাতে পারে সত্যি।
শেষ কথা : আশা করি সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে এই পোস্ট আপনার ভালো লাগলো। গুগল যদিও বর্তমানে অনেক এগিয়ে তবে এই বিষয়ে শেষ কথা বলা যায় না। প্রযুক্তি রোজ উন্নতি হচ্ছে তাই সব সময় নজর রাখা উচিত। আপনার কোন সার্চ ইঞ্জিন ব্যাবহার করেন? নিচে কমেন্ট বাক্স এ জানাবেন আর পোস্ট ভালো লাগলে শেয়ার করবেন.প্লিজ।