Last Updated on: 27th ফেব্রুয়ারি 2022, 08:04 পূর্বাহ্ন
হ্যালো বন্ধুরা আজকের আর্টিকেল এ আমরা আসল কনটেন্ট কি ভাবে চিনবো তার জন্য ৭ টি ফ্রি অনলাইন Plagiarism checker টুল এর কথা আলোচনা করবো।কনটেন্ট মার্কেটিং তথা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে আসল অরিজিনাল কনটেন্ট এর গুরুত্ব অপরিসীম।
যদি ওয়েবসাইট বা ব্লগ এ ভালো অরজিনাল কনটেন্ট থাকে তবে সহজেই সার্চ ইঞ্জিন তথা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এর প্রতি আকর্ষিত হয়। কিন্তু মুশকিল হলো সকলেই তাড়াতাড়ি সাফল্য এর জন্য অন্যের ডুপ্লিকেট কনটেন্ট ব্যাবহার করে যার ফলে সকলের অসুবিধা হয়।
Statista এর ২০২০ এর হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন প্রায় ৪.৪ মিলিয়ন ব্লগ পোস্ট পাবলিশ বা প্রকাশিত হয়। কিন্তু এর সবই কি আসল কনটেন্ট?
এর সহজ উত্তর হলো না। এই কনটেন্ট এর প্রায় ২৫-৩০ শতাংশই হলো নকল বা ডুপ্লিকেট কনটেন্ট যা সার্চ ইঞ্জিন এর কাজ কে আরো জটিল করে তোলে।কিন্তু এতো কনটেন্ট ডুপ্লিকেট বা নকল কিনা চেক করা কি সম্ভব?
কাজটি জটিল। সৌভাগ্যবসত এর জন্য কিছু অনলাইন অনলাইন Plagiarism checker টুল আছে যেগুলো ব্যাবহার করে আমরা জেনে নিতে পারি কনটেন্ট গুলো আসল কিনা।
তবে এই সব Plagiarism checker টুল গুলো সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আসুন জেনে নেয়া যাক,গুগল এর ডুপ্লিকেট কনটেন্ট সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি কি?
ডুপ্লিকেট কনটেন্ট কি SEO এর পক্ষে ভালো না খারাপ?
ডুপ্লিকেট কনটেন্ট সম্পর্কে গুগল এর দৃষ্টিভঙ্গি খুব স্পষ্ট। ডুপ্লিকেট কনটেন্ট আসলে কি আগে এই সম্পর্কে জানা যাক। ধরুন আপনি আপনার ওয়েবসাইট এ একটি ব্লগ পোস্ট করলেন।
এর পর আপনি নিজে বা অন্য কেউ যদি আপনার ওয়েবসাইট থেকে এই কনটেন্ট অন্য কোনো ওয়েবসাইট এ পাবলিশ করে তবে সেটি ডুপ্লিকেট কনটেন্ট রূপে গণ্য হবে যা গুগল একেবারেই পছন্দ করে না।
যদিও অনেকে মনে করেন যে ডুপ্লিকেট কনটেন্ট থাকলে ওয়েবসাইট এ পেনাল্টি আসতে পারে। ব্যাপারটি কিন্তু সেটা না। গুগল ডুপ্লিকেট কনটেন্ট কে গুরুত্ব দেয় না ও সার্চ ইঞ্জিন এ তা দেখায় না।
গুগল ওয়েবমাস্টার ট্রেন্ড এনালিস্ট জন মুলার এর বক্তব্য এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য :
We don’t have a duplicate content penalty. It’s not that we would demote a site for having a lot of duplicate content.
এর সারমর্ম হলো যদিও সরাসরি গুগল পেনাল্টি দেয় না তবে ওয়েবসাইট এ বেশি ডুপ্লিকেট কনটেন্ট থাকলে কিছু অসুবিধা হয় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে বিশেষ মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রথম হলো Unfriendly SEO URL স্ট্রাকচার যা গুগল এর ক্রলিং এর ক্ষেত্রে বেশি Crawl Budget ব্যাবহার করে আসল কনটেন্ট গুলি ইনডেক্সিং করতে বাধা দেয়। দ্বিতীয় হলো ব্যাকলিংক diluation এর সমস্যা।
যদি একই কনটেন্ট দুটির বেশি URL এ থাকে তবে অযথা ব্যাকলিংক তৈরী হবার সম্ভাবনা তৈরী করে ফলে আসল কনটেন্ট গুলি মূল্য পায় না। তাই আপনি যদি কোনো ব্লগার বা কনটেন্ট মার্কেটিং প্রফেশনাল হয়ে থাকেন তো এই অনলাইন Plagiarism checker টুল কোনো কনটেন্ট পোস্ট করার আপনাকে তার মৌলিকত্ব সম্পর্কে জানতে অনেক সাহায্য করবে।
চলুন এবার আসল বিষয়ে আসা যাক।
সূচিপত্র
ফ্রি অনলাইন Plagiarism checker টুল
১. Small SEO Tools Plagiarism Checker
অনলাইন ফ্রি Plagiarism checker টুল হিসাবে এটি যথেষ্ট জনপ্রিয়। ওয়েব এর মধ্যে থাকা বিলিয়ন বিলিয়ন ওয়েবসাইট এর কনটেন্ট এটি কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যে এটি তুলনা করে আপনাকে প্রতিটি বাক্য হিসাবে কনটেন্ট টি কতটা আসল আর কতটা নকল তা বলে দেয়।
প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ এটি ব্যাবহার করেন।শুধু ডুপ্লিকেট কনটেন্ট চেক করেই শেষ নয়, আপনি চাইলে ডুপ্লিকেট পাওয়া কনটেন্ট গুলো নতুন ভাবে Re-write করে নিতে পারেন সম্পর্ণ বিনামূল্যেই।
সরাসরি ডকুমেন্ট চেক এর সাথে আপনি চাইলে doc, .docx, .txt, .tex, .rtf, .odt, .pdf ফরমেট এ থাকা ডকুমেন্ট ও এখানে আপলোড করে চেক করে নিতে পারেন।তাছাড়া কোনো URL ইনপুট করে কোনো ওয়েবপেজ এ থাকা কনটেন্ট ডুপ্লিকেট কিনা চেক করতে পারেন অনায়াসেই।
ইংলিশ ছাড়াও русский, 日本語, italiano, français, Português, Español, Deutsche, 中文 ভাষা এই টুলটি সাপোর্ট করে। এছাড়া ডকুমেন্ট চেক করার পর আপনি রিপোর্টটি সরাসরি সহজ শেয়ারিং অপশন এর সাহায্যে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করে নিতেও পারবেন।
আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যাবহার করে থাকেন তবে Small SEO Tools Plagiarism Checker এর ফ্রি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ইনস্টল করে আপনি সরাসরি ওয়ার্ডপ্রেস প্লাটফর্ম থেকেই ডকুমেন্ট চেক করে নিতে পারবেন। আপনাকে আর ওয়েবসাইট এ আসতে হবে না বারবার। এককথায় ফ্রি অনলাইন Plagiarism checker টুল হিসাবে Small SEO Tools Plagiarism Checker দারুন।
২. DupliChecker.com
DupliChecker.com আরো একটি দারুন অনলাইন Plagiarism checker.এটিও সেকেন্ড এর মধ্যে আপনার সমস্ত ডকুমেন্ট চেক করে বলে দিতে পারে ডকুমেন্টই কতটা আসল। ফ্রি ভার্সনটিতে আপনি প্রতিবার ১০০০ ওয়ার্ড চেক করতে পারবেন। টুলটি খুবই নির্ভুল ভাবে ডকুমেন্ট চেক করে তাই আপনি একাডেমিক রাইটিং এর জন্য টুলটি ব্যাবহার করতে পারেন।
৩. quetext
আপনি যদি বাংলা ব্লগার হন তবে quetext আপনার জন্য সত্যি একটি দারুন অনলাইন Plagiarism checker হিসাবে কাজে দেবে। বেশিরভাগ ডুপ্লিকেট চেকার ইংলিশ ভাষাতে ভালো কাজ করলেও বাংলাতে টোটো ভালো কাজ করে না। তবে quetext এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি বেশ অন্যরকম।
এটি বাংলাতেও সমান ভাবে কাজ করে। টুলটির ইন্টারফেস দারুন। টুলটি DeepSearch™ technology কাজে লাগিয়ে সেকেন্ড এর মধ্যে ডুপ্লিকেট কনটেন্ট চেক করতে পারে। এছাড়া quetext, Fuzzy matching ব্যাবহার করে শব্দের স্ট্যাটিসটিকাল এনালাইসিস এর মাধ্যমে নির্ভুলভাবে ডুপ্লিকেট কনটেন্ট চেক করতে সাহায্য করে।
৪. Plagiarism Detector
Plagiarism Detector টুলটি ব্যাবহার করে সত্যি আমি খুবই আশ্চর্য হয়েছি। অতটা জনপ্রিয় না হলেও বাংলা ব্লোগ্গিং এর জন্য বেশ ভালো একটি টুল। এটিও দ্রুত আপনাকে বলে দেয় ডকুমেন্ট ডুপ্লিকেট কিনা।এর সাথে কোন সোর্স থেকে এটি কপি করা হয়েছে তও বলে দেয়। এটি মূলত lexical frequencies,word-choice,matching phrases এর উপর ভিত্তি করে কাজ করে।
৫. Search Engine Reports
এটি একটি দারুন অনলাইন Plagiarism checker.এই টুলটি ব্যাবহার করে আপনি ১৫০০ শব্দ একবারে চেক করতে পারেন ফ্রি তে। অন্য অনলাইন Plagiarism checker যেখানে ১০০০ ওয়ার্ড চেক করতে দেয় এটি আপনাকে একটু বেশি ওয়ার্ড করতে দেয়। তাছাড়া URL থেকে সার্চ করার অপশন ও এটি দিয়ে থাকে। ইংলিশ ছাড়াও আরো প্রায় ২০টি ভাষা এটি সাপোর্ট করে।
৬. Copyleaks
Copyleaks আরো একটি অনলাইন ফ্রি Plagiarism checker. হিসাবে ব্যাবহার করা হয়। ফ্রি ভার্শনটিতে আপনি মাসে ২০টি সার্চ করতে পারবেন।টুলটি খুবই ভালো আর আধুনিক AI (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যাবহার করে আর Duplicate File Finder Tool ব্যাবহার করে একসাথে পাশাপাশি দুটি ডকুমেন্ট এর তুলনা করতে পারে। এছাড়া doc, docx, ppt, pdf ফরমেট ও টুলটি সাপোর্ট করে। এছাড়া API ব্যাবহার করে যেকোনো ওয়েবসাইট এর সাথে টুলটি ব্যাবহার করা যায়।
৭. Prepostseo plagiarism checker
Prepostseo plagiarism checker একটি জনপ্রিয় ডুপ্লিকেট কনটেন্ট চেকার। এটিও ফ্রীতে প্রতিবার ১০০০ ওয়ার্ড সাজেক করতে দেয়। অন্যান্য plagiarism checker এর সাথে এর তুলনা করতে গেলে বলতে হয় যে এটি অনলাইন ডাটাবেস চেক করার সাথে সাথে ,ডুপ্লিকেট কনটেন্ট চেক করার জন্য offline ডকুমেন্ট ও সার্চ করে। অসাধারণ!
এটি doc, docx, pdf, txt ফরমেট সাপোর্ট করে। এছাড়া ব্যাবহার এর সুভিদার জন্য এটি একটি ক্রোম এক্সটেনশন হিসাবেও ব্যাবহার করা যায়।
যে ওয়েবসাইট এর ডকুমেন্ট চেক করতে চান দেয় ডকুমেন্ট এ এসে ‘Check Plagiarism of Selected Text’ অপশন ব্যাবহার করে আপনি সহজেই plagiarism চেক করতে পারেন।এছাড়া এন্ড্রয়েড বা iOS APP ডাউনলোড করে মোবাইল এ আপনি এটি ব্যাবহার করতে পারেন।
অতিরিক্ত টিপস: আর একটি সহজ পদ্ধতির কথা বলবো যেটা আসলে কোনো টুল নয় তবে এটির সাহায্যে আপনি বাংলা বা ইংলিশ বা যে কোনো ভাষার কনটেন্ট হোক না কেন তা যদি গুগল এ ইনডেক্স হয়ে থেকে থাকে তবে সহজেই আপনারা গুগল এর সার্চ ব্যাবহার কনটেন্ট এর কিছু অংশ ডুপ্লিকেট কি না তা দ্রুত তা হলো গুগল সার্চ এ QUOTES সার্চ।
ধরুন আপনি কোনো কনটেন্ট এর একটা লাইন চেক করতে চাইছেন তা ডুপ্লিকেট কিনা তার জন্য আপনি গুগল এ গিয়ে “আপনার কনটেন্ট” সার্চ করলেই ডুপ্লিকেট কিনা।ডুপ্লিকেট হলে সার্চ এ ওই লাইন অন্য ওয়েবসাইট এর সার্চ রেজাল্ট এ বোল্ড হয়ে দেখাবে আর ডুপ্লিকেট না হলে কোনো রেজাল্ট দেখাবে না।
উদহারণ হিসাবে আমি আমার ব্লগ এর এই পোস্ট এর “যে ওয়েবসাইট এর ডকুমেন্ট চেক করতে চান দেয় ডকুমেন্ট এ এসে ‘Check Plagiarism of Selected Text’ অপশন ব্যাবহার করে আপনি সহজেই plagiarism চেক করতে পারেন।” চেক করলাম। যেহেতু এটি আগেই আমার ব্লগ এ পাবলিশ হয়েছে তাই এটি কে অন্য কোনো ভাবে ব্যাবহার করলে ডুপ্লিকেট দেখাবে।
শেষ কথা :
আশা করছি ফ্রি অনলাইন Plagiarism checker পোস্টটি আপনাদের কাজে আসবে।আপনারা ডুপ্লিকেট কনটেন্ট চেক করার জন্য কি টুল ব্যাবহার করেন ?কমেন্ট করে জানান। পোস্ট ভালো লাগলে দয়া করে শেয়ার করুন।