ইলেকট্রিক স্কুটার কি ?ইলেকট্রিক স্কুটার দাম: কম বাজেট এ সেরা ব্যাটারি স্কুটার

Last Updated on: 3rd জুলাই 2022, 04:51 অপরাহ্ন

হ্যালো বন্ধুরা আজকে আমরা আমাদের এই পোস্টে ইলেকট্রিক স্কুটার কি,ইলেকট্রিক স্কুটার দাম এবং কম বাজেট এ সবচেয়ে ভালো ইলেকট্রিক স্কুটার বা ব্যাটারি স্কুটার কোনটি সেই সম্পর্কে আলোচনা করবো।

ইলেকট্রিক স্কুটার কি ?

ইলেকট্রিক স্কুটার হলো একটি ব্যাটারি চালিত স্কুটার যেটি জ্বালানি হিসাবে পেট্রল ব্যাবহার না করে ব্যাটারী তে থাকা ইলেকট্রিক চার্জ থেকে চলে। প্রসঙ্গত আমরা যে হপ ইলেকট্রিক স্কুটার হপ লাইফ এর কথা বলবো সেটি চার্জ হতে মাত্র ১২ টাকার মতো কারেন্ট পোড়ে আর একবার চার্জ করলে গাড়িটি প্রায় ৭০ কিমি চলতে পারে সিঙ্গেল রাইড করলে।

ইলেকট্রিক স্কুটার কেন কিনবেন ?

ইলেকট্রিক স্কুটার বর্তমানকালে খুবই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে বর্তমানে এবং ডিজেলের অত্যাধিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে মানুষ এই স্কুটার ব্যাটারি স্কুটার এর দিকে ঝুঁকছেন। এছাড়াও ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যাটারি স্কুটার নির্ঝঞ্ঝাট পরিবেশবান্ধব এটি চালাতে গেলে কোন পেট্রোল ডিজেল প্রয়োজন হয় না শুধুমাত্র একবার ব্যাটারি চার্জ করে নিলেই আপনি নির্দ্বিধায় স্কুটি চালাতে পারবেন।

অধিকাংশ ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যাটারি স্কুটার গুলি বর্তমানে ৫০ কিলোমিটার বা তার অধিক গতিতে যেতে থাকে প্রতি বার চার্জ এর পর। তো আজকে আমি আমার একটি অন্যতম জনপ্রিয় ইলেকট্রিক স্কুটার হপ লাইফ Hop LYF ম্পর্কে আলোচনা করবো।

বর্তমানে আমি একজন আইটি কর্মী এবং আমার পরিবারে একটি পেট্রোল চালিত মোটরসাইকেল রয়েছে কিন্তু প্রতিদিন যাতায়াত করি এবং পেট্রোলের অত্যধিক হয় আমার একটি এরমধ্যে স্কুটার ব্যাটারি স্কুটার দরকার হয়ে পড়ে এইজন্যে আমার পছন্দ হয় Hop LYF মডেল। HOP Lyf মূলত একটি জয়পুর বেসড কম্পানি আর বর্তমানে হপ এর মডেল গুলি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে যার মধ্যে আছে আরো আছে হপ লিও। তবে আজকে আমি যে মডেলটির কথা তা হলো Hop LYF এবং আপনি ৮০ হাজার টাকার মধ্যেই আপনার কাঙ্খিত ইলেকট্রিক স্কুটার পেয়ে যাবেন।

Hop LYF স্পেসিফিকেশন

এবার আসুন এই Hop LYF সম্পর্কেএকটু ডিটেইলস এ আলোচনা করে নি। প্রথমেই আসি Hop LYF ইলেকট্রিক স্কুটার টি লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে। যেহেতু Hop LYF ইলেকট্রিক স্কুটার টি পরিবেশ বান্ধব তাই লাইসেন্স বা রেজিস্ট্রেশন এর এতে কোন নিয়ম নেই তাই আপনি লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই এই Hop LYF ইলেকট্রিক স্কুটার চালাতে পারেন।

Hop LYF ইলেকট্রিক স্কুটার

তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো যেহেতু ইলেকট্রিক স্কুটার টি গতিবেগ ৫০ কিলোমিটার হতে পারে তাই লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন না থাকলেও আপনি একটি নিজের উদ্যোগে ইন্সুরেন্স প্ল্যান করিয়ে নেবে যাতে আপনার এবং আপনার গাড়ির সুরক্ষা দুটি বজায় থাকে। এবারে আসি এই Hop LYF যন্ত্রাংশ সম্পর্কে।

Hop LYF এর ব্যাটারী

Hop LYF গাড়িটিতে রয়েছে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি যা প্রচলিত লেড অ্যাসিড ব্যাটারি থেকে অনেক বেশি কার্যকরী এবং এর ক্ষমতাবান। সাথে আছে ৭২ ভোল্ট , কুড়ি এম্পিয়ার এর ব্যাটারী যা একবার চার থেকে পাঁচ ঘন্টা ফুল চার্জ দিলেই আপনি প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ কিলোমিটার অনায়াসে চলে যেতে পারবেন।

Hop LYF ফ্রন্ট ব্রেক
ইলেকট্রিক স্কুটার ফ্রন্ট ব্রেক

এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ক্ষমতা ১৬০ মিলিমিটার। এর ফ্রন্ট ব্রেক টি ডিস্ক ব্রেক যুক্ত রিয়ার ব্রেক এ আছে নরমাল ড্রাম ব্রেক। কম বাজেট এর মধ্যে হলেও সুরক্ষার জন্য আপনার কাছে খুবই সুন্দর এরিয়াল সাসপেনশন আর হাইড্রোলিক সাসপেনশন আছে।

Hop LYF এর গতিবেগ

অন্যান্য বৈশিষ্ট এর মধ্যে আছে লেড হেড ল্যাম্প, anti-theft এলার্ম ,রিমোট কন্ট্রোল, তিনটে স্পিড মোড। এবারে এই স্পিড মোটর সম্পর্কে ডিটেইলস কথা বলে নি। তিনটি স্পিড মোড এর মধ্যে যথাক্রমে(১,২,৩) আছে। ১ নম্বর মোড হলো ইকো মোড ,২ নম্বর মোড নরমাল মোড আর তিন নম্বর মোড হলো স্পোর্টস মোড।

সর্বোচ্চ রেঞ্জ আপনি এক মোড এ পাবেন বাকি মোড এ আপনি চললে একটি কম রেঞ্জ পাবেন বলেই কোম্পানি দাবি করে। eco মোড এ সর্বোচ্চ ৩০কিলোমিটার বেগে চলতে পারবেন, নম্বর ২ মোড এ আপনি ৪০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারবেন এরপর তারপর স্পোর্টস মোড এ আপনি সর্বোচ্চ ৫০ কিমি বেগে চলতে পারেন।

আপনি ৫০ বা ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হাইওয়েতে চলতে পারেন। আমি আরো একটি ব্যাপার লক্ষ্য করেছি যে এর কন্ট্রোল মোট ধরুন আপনি গাড়িটি একটি নির্দিষ্ট স্পিডে চালাচ্ছেন এবং চাইছেন যে আপনার গাড়িটি একটি নির্দিষ্ট স্পিড বজায় থাকুক তখন আপনি চান অটো কন্ট্রোল এ চলুক।

তাই এই মডেল এর মধ্যে আছে cruise কন্ট্রোল সেটি ব্যবহার করে অটোমেটিক্যালি গাড়িটিকে অটোপাইলট মধ্যে চালু রাখতে পারবেন যাতে আপনাকে কোন থ্রটল না করেই গাড়িটি একই গতিতে এগিয়ে চলতে পারে। ইলেকট্রিক স্কুটারএর এই ফিচারটি একটি দারুন ব্যাপার হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

প্রসঙ্গত আমি যে মডেলটি কিনেছি সেটি হল বেসিক মডেল যার ব্যাটারি কিলোওয়াট ১,৫ এবং তবে আর টপ মডেল ২.৫ কিলোওয়াট এর হয় যাতে আপনি এক চার্জ এ ১২৫কিমি পর্যন্ত যেতে পারবেন।

তবে বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এক্ষেত্রে রেঞ্জ ১০০ কিমি আপনি ধরতে পারেন। গাড়িটির ফ্রন্ট প্রোফাইল বা সামনে থেকে দেখতে খুব সুন্দর এর সামনের এলইডি বাল্ব রয়েছে এবং এর চাকা সিয়েট এবং JK কোম্পানি হয। এছাড়াও এই টায়ার গুলি টিউবলেস টায়ার এবং এর মধ্যে আছে ALLOY ডিসাইন ১০ ইঞ্চি রিম।

Hop LYF এর ড্যাশবোর্ড

এবারে আসি এর ফ্রন্ট ড্যাশবোর্ড সম্পর্কে। এর ফ্রন্ট ড্যাশবোর্ডটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল এবং এখানে আপনি ওডোমিটার, পিক মিটার, ব্যাটারি চার্জিং ইনফরমেশন সমস্ত কিছু দেখতে পারবেন।

Hop LYF এর ড্যাশবোর্ড
ইলেকট্রিক স্কুটার Hop LYF এর ড্যাশবোর্ড

একবার ব্যাটারি চার্জ হয়ে গেলে আপনি দেখতে পারবেন যে আপনার ব্যাটারি চার্জিং ৮২ বা ৮৩ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করে এবং আপনার এই চার্জিং যখন ৬৫এর নিচে নেমে যাবে তখন আপনাকে নতুন করে চার্জ করতে হবে।

Hop LYF অন্যান্য ফীচার

এছাড়াও আপনি একবার চাবিটি ঢুকিয়ে অন করলেই আপনার ওডোমিটার আপনাকে জানিয়ে দেবেগাড়িটি মোট কত কিলোমিটার চলেছে এছাড়াও গাড়িটির ডান দিক এবং বাম দিকে রয়েছে আরও অনেক কন্ট্রোল সুইচ।

যেমন এতে বামদিকে আপনি পার্কিং মোট সুইচ পেয়ে যাবেন আপনি যখন কোন ভিড়ভাট্টা বা রাস্তার মোড়ে দাঁড়াবে তখন সহজেই পার্কিং মোড ও করে নিতে পারবেন তারপর গাড়িটিকে আবার আপনি চালু করতে হলে আপনাকে পার্কিংয়ের ডিএক্টিভেট করতে হবে ওই পার্কিং সুইচ টিপে কিংবা আপনাকে আপনার ডানদিক বাঁদিক একটি ব্রেক আলাদা করে ছেড়ে দিলেও আপনার পার্কিং থেকে এবার ড্রাইভিং মোডে চলে আসবেন।

এছাড়া আছে কিছু আরো আকর্ষণীয় সিকিউরিটি ফীচার। এর একটি উল্লেখযোগ্য সিকিউরিটি বিচার হলো রাইট স্ট্যান্ড সেন্সর। যখন আপনার গাড়ি স্ট্যান্ডিং এ থাকে তখন এই স্ট্যান্ড না তোলা পর্যন্ত এটি চলবে না। স্ট্যান্ড তুললেই তারপর চাকা গড়াবে। এছাড়া আপনি রিমোট কী দিয়েও আপনি গাড়িটিকে লক আনলক করতে পারেন । গাড়ি রিমোট কীয় দিয়ে লক করা থাকলে পিছনের চাকা লক হয়ে যায়। তখন জোর করে চালাতে গেলে আন্টি থেফট অ্যালার্ম বেজে ওঠে আপনাকে সতর্ক করে দেয়।

এর আরো কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য কথা বলতে গেলে মধ্যে আপনার বামদিকে আছে USB চার্জিং পোর্ট যার সাহায্যে আপনি সহজেই আপনার মোবাইল চার্জ করতে পারবেন এছাড়াও এর দুদিকে থাকার ছোট ছোট খাপ আছে যেখানে আপনি ছোটোখাটো জিনিস জেম ওয়াটার বোতল ,মোবাইল রাখতে পারবেন।

এছাড়া এর একটি হুক আছে যেগুলিতে আপনি হালকা জিনিস ,বাজার এর কিছু মাল ৫ কেজি পর্যন্ত জুলিয়ে আন্তে পারবেন যা খুবই কাজের জিনিস। এছাড়া গাড়িটিতে আছে যথেষ্ট ভালো ফুটরেস্ট আর ফ্রন্ট স্পেস যাতে করে দুইজন খুব ভালো ভাবে যেতে পারে।

এছাড়া ফুট কার্পেট আপনি ফ্রিতে পেয়ে যাবেন যার ফলে আপনাকে আর নতুন করে কোন ফুট কার্পেট কিনতে হয় না। গাড়িটির যে মোটরে ব্যবহার করে সেটি হল পি এম এস এম মোটর এই পি এম এস এম মোটর গুলি অন্যান্য ইলেকট্রিক স্কুটার বিএল ডিসি মোটর এর থেকে অনেক বেশি energy-efficient এবং কার্যকরী।

এবার গাড়িটি আপনারা মোটামুটি চারটি কালার মডেল পেয়ে যাবেন একটি হল ব্ল্যাক ম্যাট ফিনিশ, CYAN , গ্রে ,রেড এন্ড ব্ল্যাক এই আপনি আপনার পছন্দ মত যে কোন কালারের মডেলই সংগ্রহ করতে পারেন। শেষে আসি দামের কথায়।

ইলেকট্রিক স্কুটার দাম

আমার কাছে গাড়িটির দাম নেওয়া হয়েছিল ৭৬ হাজার ৮৯৯ টাকা এবং আপনি এই পেমেন্ট সহজেই গুগল পে, নেট ব্যাঙ্কিং বা নগদ ক্যাশে শোরুম থেকে করতে পারেন।

শেষ কথা :আশা করি ইলেকট্রিক স্কুটার সম্পর্কে আজকের পোস্ট আপনার ভালো লাগলো। এই সম্পর্কে আরো জানতে চলে কমেন্ট অর্থে ভুলবেন না। ধন্যবাদ।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১৪ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা। | দেখুন LinkedIn প্রোফাইল

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।