Last Updated on: 18th সেপ্টেম্বর 2021, 03:49 অপরাহ্ন
হ্যালো বন্ধুরা আজ আমরা মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি সেই সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করব। বর্তমান যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এটি খুবই চর্চিত বিষয়। বিজ্ঞান থেকে গবেষণা চিকিৎসাশাস্ত্র থেকে খেলাধুলা কিংবা রোবটিক্স থেকে মহাকাশ সবক্ষেত্রেই আজ এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যাপক ব্যাবহার দেখা যাচ্ছে।
আজকে তাই আমরা এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এই আকর্ষণীয় বিষয় গুলি একটু জেনে নেব।
সূচিপত্র
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি ? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সংজ্ঞা :
বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন সময়ে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংজ্ঞা দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ২০০৪ সালে জন ম্যাকার্থি সংজ্ঞাটি বেশ যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়।
জন ম্যাকার্থি এর মতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো সেই বিজ্ঞান যাতে করে অত্যাধুনিক কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা অত্যাধুনিক মেশিন তৈরি করা যায় যেগুলি মানব মস্তিষ্ক কে অনুসরণ করে ,সেই ভাবে যন্ত্র গুলিকে ভাবতে শেখায় যার ফলে কোন একটি পরিস্থিতিতে বা বিশেষ সমাধান সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে একটি মানুষের মস্তিষ্ক যেরকম ভাবে কাজ করে সেই সমস্যাটির সমাধান করে সেই বিষয়টি যন্ত্রকে দিয়ে করানোই ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মূল বিবেচ্য বিষয় বলে মনে করা হয়।
সোজা কথায় বলতে গেলে মানব বুদ্ধিমত্তাকে যন্ত্রের মাধ্যমে বাস্তবিক ভাবে প্রকাশ করে তার ব্যাবহারিক প্রয়োগ করা কেই বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যাপারে এখানে উল্লেখযোগ্য যে ম্যাকার্থির মতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কে শুধুমাত্র বায়োলজিক্যাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা না বলে এর চেয়ে আরো বেশি কিছু ভাবা উচিত কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিধি বায়োলজিক্যাল পর্যবেক্ষণের সীমানার থেকেও অনেক বেশি পরিমাণ হতে পারে।
তবে সাধারণ কথায় বলতে গেলে উন্নত ধরণের কম্পিউটিং যেগুলি নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বা নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করে সেগুলি আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মূল বিবেচ্য বিষয় বলে মনে করতে পারা যায়।
বর্তমানে এরমধ্যে অ্যাডভান্স রোবট, সুপার কম্পিউটার ,মেইনফ্রেম কম্পিউটার, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারকারী ইন্টারনেট অফ থিংস ,ডাটা এনালিস্ট এর জন্য ব্যবহারকারী টুল অনেক ক্ষেত্রেই এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কে আজকাল ব্যবহার করে হচ্ছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি আরো ভালোভাবে বুঝতে গেলে এর সহজ ভাবে একটি সমীকরণ মাথায় রাখতে হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো সেই বিষয় সম্পর্কে গবেষণা যেগুলি মানব মস্তিষ্কের মধ্যে ভাবে এবং মানব মস্তিষ্কের মত কাজ করার চেষ্টা করে। .
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা/ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সক্ষিপ্ত ইতিহাস
এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইন্টেলিজেন্সের কিছু সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সম্পর্কে জেনে নি .আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ইতিহাস কিন্তু সুদুরপ্রসারী এবং সুপ্রাচীন ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে খুব প্রাচীন কালেও গ্রিক এবং রোবট অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এই সমস্ত বিষয়গুলি উল্লেখ পাওয়া যায় বর্তমানকালে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সূচনা ১৯৫৬ সালে হয়েছিল বলে মনে করা হয়।
১৯৫৬ সালে ডর্ট মৌথ কলেজে একটি কনফারেন্স হলে প্রথমেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্পর্কে কথাটি উল্লেখ করা হয়।
এরপর নানা সময়ের হাত ধরে অবশেষে ১৯৯৭ সালে যখন আইবিএম ডিপ BLUE নামের সুপারকম্পিউটার প্রথম বাজারে আনল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহারের গতি পায়। উল্লেখ্য আইবিএমের ডিপ ব্লু হল সর্বপ্রথম কম্পিউটার যেটি তৎকাল রাশিয়ান গ্র্যান্ডমাস্টার গ্যারি কাসপারভ কে দাবায় হারিয়ে দেয় আর এরপর থেকেই ধীরে ধীরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আজ এক মহীরুহে হয়েছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রকারভেদ
মূলত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে দুইটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায় কি হলো Weak AI ও অপরটি হলো স্ট্রং AI .
Weak AI
Weak AI হলো সেই সমস্ত প্রযুক্তি যেগুলি বর্তমানে আমরা আমাদের আশেপাশে বেশিরভাগ সময় দেখে থাকি এই উইক এ আই পরিচালিত যন্ত্র গুলিকে একটিমাত্র নির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে। যা হতে পারে আইবিএম ওয়াটসন ,আমাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট যেমন অ্যাপেল সিরি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট ,অ্যামাজন অ্যালেক্সা এই সমস্ত। তবে বর্তমানকালে বিভিন্ন অটোমোবাইল ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এই উইক এ আই এর মধ্যে ধরা যেতে পারে।
স্ট্রং AI
স্ট্রং AI হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সব থেকে জটিল একটি বিষয় এবং খুবই অ্যাডভান্স বিজ্ঞান যাতে করে একটি রোবট, মেশিন মানুষ যেভাবে চিন্তা করে মানুষের চিন্তাশক্তিকে অনুসরণ করে নিজেকে সেই ভাবে নিয়োজিত করার চেষ্টা করে। অনেকেই মনে করেন অদূর ভবিষ্যতে হয়তো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানব বুদ্ধিমত্তার থেকেও আরো বেশি উন্নত হয়ে যাবে যেমন আমাদের দেখা যায় বিভিন্ন হলিউড মুভি তে যেখানে উন্নত রোবট শ্রেণীর সম্পূর্ণ নতুন জেনারেশন তৈরি হয়ে যায় যা মানব জাতির উপর কৃতিত্ব করতে চায়। এক্ষেত্রে গবেষণাও অনেক এগিয়ে গিয়েছে এবং বর্তমানে বহু বিজ্ঞানী উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন।
ডিপ লার্নিং ও মেশিন লার্নিং
এবারে আসি ডিপ লার্নিং কাকে বলে সেই সম্পর্কে। অনেকেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে ডিপ লার্নিং এবং মেশিন লার্নিং কি সেই সম্পর্কে একটু গুলিয়ে ফেলেন। তবে এ ক্ষেত্রে এদের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম সীমানা রেখা রয়েছে। ডিপ লার্নিং আর মেশিন লার্নিং এই দুটি হল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর একটি শাখা।
ডিপ লার্নিং হলো মূলত নিউরাল নেটওয়ার্ক এ বিষয়ে গবেষণা আর মেশিন লার্নিং হলো মূলত কম্পিউটার বিষয়ক গবেষণা যেখানে একটি কম্পিউটারকে মানব বুদ্ধিমত্তার মতো প্রতিদিন হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয় এবং এটাও দেখা হয় যে যেখানে এই মেশিনটি মানুষের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে ব্যাপারটি খুবই আকর্ষণীয় তাই নয় কি ?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশিষ্ট্য
এবারে আসুন একটু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশিষ্ট্যগুলি রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো অটোমেশন। এই অটোমেশন এর মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেকোনো কাজ যেগুলি প্রতিনিয়ত করা হয় সেগুলি অ্যাডভান্স টেকনোলজি কাজে লাগিয়ে নির্ভুল ভাবে করিতে নেয়া যেতে পারে তা সে কোন ফ্যাক্টরিতে জিনিস প্রস্তুতি হোক কিংবা প্যাকেজিং এর ক্ষেত্রে লেবেলিং হোক।
দুই নম্বর হলো ডাটা এনালাইসিস। যেকোনো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রে ডাটা এনালাইসিস এর জন্য এটি বিশেষ মডিউল থাকেন যার ফলে কোন ডাটা এনালাইসিস বা বিশ্লেষণ এর কাজ সহজেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে করা সম্ভব। এছাড়াও ফেসিয়াল রিকোগনিজশন , চ্যাট বট তৈরি ,মেইনফ্রেম কম্পিউটিং, ক্লাউড কম্পিউটিং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বৈশিষ্ট্য ও অঙ্গ বলে মনে করা যেতে পারে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার
এবারে আসছি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রধানত কোথায় ব্যবহৃত হয় বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার সম্পর্কে। বর্তমান যুগে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বহুল ব্যবহূত।
Tractica এ একটি রিসার্চ অনুসারে ২০২৫ সালের মধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর গ্লোবাল মার্কেট প্রায় ১.১৮ বিলিয়ন ডলার হতে যাচ্ছে। গার্টনারের মতে এখনো ৩৭ শতাংশ কম্পানি কোনো না কোনো ক্ষেত্রে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিজেদের ক্ষেত্রে করে প্রয়োগ করে ফেলেছে। এবার আসি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যাবহার তালিকাতে।
ই-কমার্স ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার
বর্তমান ক্ষেত্রে ই-কমার্স বা অনলাইন স্টোর খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমরা আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস তা সে জামাকাপড় হোক বা খাদ্যদ্রব্য অ্যামাজন ,ফ্লিপকার্ট এর মতো বিভিন্ন অনলাইন ই কমার্স থেকে অর্ডার করতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি ।
আর এই জন্যেই এই ই-কমার্স ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার বেড়েছে যখন আমরা কোনো ই-কমার্স শপিং করি তখন আমাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় পার্সোনাল রিকমেন্ডেশন যা আমাদের বিগত অ্যাডভান্স ব্রাউজিং হিস্ট্রি ,রুচি ইন্টারেস্ট এই সমস্ত বিশ্লেষণ করে আমাদের ই-কমার্স ব্যাবহার আরো ভালোভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে।
এছাড়া ই-কমার্স এর মধ্যেই রয়েছে AI পাওয়ার্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট যেগুলি কাস্টমারদের চাহিদা অনুযায়ী তাদেরকে মানুষের মতোই চ্যাট এর মাধ্যমে কেনাকাটা কে আরো ভালোভাবে করতে সাহায্য করে। এছাড়াও জালিয়াতি রুখতে অনেক সময়ই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কে ব্যবহার করা হয়।
অনেক সময়ই আমরা ই-কমার্স সাইটে কিছু কেনাকাটার আগে তার অনলাইন রিভিউ বা কাস্টমার রিভিউ সম্পর্কে আমরা জেনে নিয়ে তারপর শপিং করতে ভালোবাসি এক্ষেত্রে এই আর্টিফিশিয়াল আর্টিফিশিয়াল সেই সমস্ত ভুয়া রিভিউ গুলি কে চিহ্নিত করে সেগুলি সরিয়ে ফেলার কাজেও আজকাল করছে। গুগল মাই বিজনেস বা গুগল প্লে সম্পর্কে জানি তারা বর্তমানে দেখছি যে গুগল বিভিন্ন সময়ে আজ কাল ভুয়ো রিভিউ সেকশন থেকে সরিয়ে ফেলেছে যার ফলে সেটি সকল ক্ষেত্রেই বিশ্বাসযোগ্য পরিকাঠামো করে উঠছে।
রোবটিক্স এর ক্ষেত্রে এ আই এর প্রয়োগ
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রয়োগ রোবটিক্স ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নানা ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত ড্রন ,ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, অফিস ক্লিনিং থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে আজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার হচ্ছে।
মানব সম্পদ বা হিউমান রিসোর্স এর ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রয়োগ
একটি কোম্পানিতে যখন কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পদ্ধতি চলে তখন ওই প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুসারে কোন প্রার্থী যোগ্য সেগুলির প্রোফাইল বিশ্লেষণ করে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যোগ্যতম ব্যক্তির সন্ধান দেয় যার ফলে আজ বিভিন্ন কোম্পানি অনেক সহজেই এবং অল্প সময়ের মধ্যে ভালো ভালো জব পোর্টাল থেকে ভালো কর্মপ্রার্থী নিয়ে নিতে পারছে যার ফলে কর্মী এবং প্রতিষ্ঠান দুজনেরই লাভ হচ্ছে।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার
বর্তমানকালে চিকিৎসা ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বেশ ভাল ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন জটিল অপেরেশন এ আজকাল অনেক জায়গাতেই রোবট ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়াও কোন জটিল অপারেশনের সময় আজকাল অনেক অপারেশন লোকেশন এ দেখা যাচ্ছে সঠিক সময়ে সঠিক ডাটা ব্যাবহার করে আজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অনেক ভাবে ডাক্তার দেড় সাহায্য করছে। কোন সময় কোন ট্রিটমেন্ট দেয়া প্রয়োজন এর ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অনেক সাহায্য করছে। উদাহারণ হিসাবে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি এর কথা বলা যেতে পারে।
ডাটা এনালাইসিস
আজ তথ্যপ্রযুক্তি দুনিয়াতে ডাটা এনালাইসিস একটি অন্যতম ভূমিকা পালন করছে। সঠিক ডাটা এনালাইসিস এর ফলে যে কোন বিজনেস ডিসিশন ,মার্কেটিং ডিসিশান আজ সাফল্যের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এর হাত ধরেই বিভিন্ন ওয়েব এন্ড এনালিটিক্স প্ল্যাটফর্ম যেমন গুগল এনালিটিক্স ,ওয়াটসন আজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে কি দারুন ভাবে ব্যবহার করছে।
আপনি যদি অনলাইন মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত থাকেন তাহলে আপনারা দেখতে পাবেন গুগল এনালাইটিক্স কত সুন্দর ভাবে কোন ডাটা ভবিষ্যৎবাণী করতে পারে।
আপনার বিগত মোদির ব্যবহার তাদের কিনাকাটা ধরুন বিচার করে ভবিষ্যতে কত সংখ্যক অনলাইন ক্রেতা এর মধ্যে আপনার কোন প্রোডাক্টটি কিনবে বা কিনতে চলেছে তার সম্পর্কেও আজকাল সুস্পষ্ট আভাস দেয় যার ফলে সেই সমস্ত কাস্টমারদের কাছে নিজেদের ব্র্যান্ড বা কোম্পানির প্রোডাক্ট গুলো অনলাইন বিপণন করা অনেক সহজ হয়ে যায়। এছাড়াও বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স এর মাধ্যমেও আজ বহুল ব্যবহার হচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়াতেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অনেক ভালোভাবে হচ্ছে। আপনার ইনস্টাগ্রাম ,ফেসবুক বা টুইটার প্রোফাইলে কোন পোস্টগুলি আপনার নিউজ ফিডে আসবে বা কাদের আপনার ফলো করা উচিত সেগুলি আগাম আভাস আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করেই আপনাকে আগেভাগে জানিয়ে দিচ্ছে ।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ফেসবুকের ডিপ টেক্সট টেকনোলজি এখন মানৰ কথোপকথনকে আরো অনেক ভালোভাবে বুঝতে পারে। আবার আমার আপনারা আপনাদের অতিপরিচিত জিমেইল যখন আপনার ব্যবহার করেন তখন স্মার্ট কম্পজ বলে যে অপশনটিই আজকাল দেখা যাচ্ছে সেগুলি টাইপিং এর ধরন দেখেই আগেভাগে বলে দেয় কোন শব্দবন্ধটি প্রয়োগ করতে পারেন। সত্যিই কী আশ্চর্য তাই না ?
কৃষিক্ষেত্রে ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার হচ্ছে
আজকাল কৃষিক্ষেত্রে ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার হচ্ছে সয়েল টেস্ট শুরু করে বিভিন্ন উন্নত মানের কিছু চাষ পদ্ধতি আজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার এর উপর নির্ভর করছে।
গেমিং এর ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার
আজকাল গেমি এক্ষেত্রেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার বেশ লক্ষণীয়। বর্তমানে গেমিং এ স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট তৈরি হচ্ছে যেগুলি হুবহু মানুষের মধ্যেই আপনার সাথে গেম খেলতে সক্ষম।
অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি তে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
অন্য সমস্ত ক্ষেত্রের মতোই অটোমোবাইলের ক্ষেত্রে ও আজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যাবহার হচ্ছে। ক্যামেরার ডিটেল , ভিশন কন্ট্রোল ,সিগন্যাল এ সমস্ত গুলি আজকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। এ আই এর মাধ্যমে বর্তমানে ইমারজেন্সি ব্রেকিং থেকে শুরু মনিটরিং ড্রাইভার অ্যাসিস্টিং ও হয়ে যাচ্ছে।
এবারে আসি একটি মৌলিক প্রশ্ন নিয়ে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে মৌলিক গবেষণা করা সম্ভব ?
এ প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয় উত্তর বেশ জটিল। মৌলিক গবেষণা করতে গেলে দরকার মৌলিক তথ্য তাই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কে ব্যবহার করে কোন মৌলিক গবেষণা করতে গেলে আগে কম্পিউটারকে সেই সম্পর্কে ট্রেনিং দিতে হবে। তাই ব্যাপারটি সময় সাপেক্ষ এবং ব্যয় সাপেক্ষ বটে।
তাইমৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে বর্তমানকালে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা যেতে পারে তবে সীমিত পরিমাণে যেমন উদাহরণস্বরূপ কোন ডাটা বিশ্লেষণ করে বিশ্লেষণ করে তার ভবিষ্যৎ, প্যাটার্ন এনালাইসিস এই বিষয়গুলি। মৌলিক মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স পুরোপরি ব্যাবহার এখনই সম্ভব নয় বলে মনে হয়।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সুবিধা : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বুদ্ধিমত্তার প্রভাব
এবারে আসি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বুদ্ধিমত্তার প্রভাব সম্পর্কে। বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারপ্রয়োগের ফলে আমাদের গবেষণা থেকে শুরু করে, টেকনোলজি ক্ষেত্রেও অনেক জটিল বিষয় সহজ হয়ে গিয়েছে যার মধ্যে যার মধ্যে ভয়েসে রিকোগনিজশন ,আবহাওয়া বিজ্ঞান ,স্মার্ট বট, স্পেস টেকনোলজি অনেক ক্ষেত্রেই আজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সাহায্য করছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর অসুবিধা
তবে তবে ও সুবিধার সাথে সাথে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর অসুবিধা কিছু আছে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স খরচ সাপেক্ষ
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স একটি ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর দ্বারা তৈরি রোবট মেশিন তৈরি করতে অনেক বেশি খরচ লাগে যদি সবসময় সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না।
কর্মক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যাবহার এর ফলে কাজ হারানোর ভয়
কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব আর্টফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যাবহারে ফলে কিছু ক্ষেত্রে হচ্ছে। সব কাজ যদি মেশিন করে দেয় তবে মানুষ আর করবে কি ? দিনের দিন রোবোটিক্স উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উন্নত মেশিন জন্ম হয়েছে যার ফলে যে সমস্ত কাজগুলি মানুষ একসময় করে করত এই সমস্ত ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় রোবট তাদের জায়গা দখল করে নিচ্ছে যার ফলে কর্মক্ষেত্রে মানুষের নজরদারি অনেকটা কম হচ্ছে এবং এর ফলে মানুষের চাহিদা কমছে এবং কর্মক্ষেত্রে কিছুটা হলেও মেশিন মানুষের জায়গা দখল করে নিয়েছে রোবট যার ফলে অনেক মানুষ কাজ হারাচ্ছে এটা তো বলাই বাহুল্য।
মৌলিক চিন্তা ধারার অভাব
বর্তমানে যতই উন্নতি হোক প্রোগ্রাম করে করা একটি রোবট আর মানব মস্তিষ্কের মধ্যে আজ বিস্তার ফারাক। মানুষের যেমন চিন্তাধারা করার একটি মৌলিক মস্তিস্ক কাছে ,রোবট এর তা নেই কারণ তাকে আগে থেকে প্রোগ্রাম করে মানুষ। তাই সেই পর্যায়ের মৌলিক চিন্তা ধারা করার বিষয়টি এখনো পর্যন্ত অধরাই থেকে গেছে যার ফলে মানব মস্তিষ্কের তুলনায় এখনো বহু যোজন পিছিয়ে কাছে রোবট।
যদিও আশা করা যায় যে পরিমাণে কাজ তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে গবেষণা হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতেই মানব বুদ্ধিমত্তার প্রায় সমান সমান হয়ে উঠবে। বা তাকে ছাপিয়েও যেতে পারে।
শেষ কথা : আশা করি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি এই সম্পর্কে পোস্ট আপনাদের ভালো লাগলো। ভালো লাগলে পোস্ট শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর নিচে কমেন্ট বাক্স এ কমেন্ট করে জানবেন পোস্ট কেমন লাগলো। ধন্যবাদ।