মহাকাশ স্পেস স্টেশন কাকে বলে ?

স্পেস স্টেশন

Last Updated on: 16th ফেব্রুয়ারি 2021, 03:50 অপরাহ্ন

হ্যালো বন্ধুরা আজকে আমাদের এই পোস্টে আমরা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন কি সেই সম্পর্কে আলোচনা করব।

স্পেস স্টেশন বা মহাকাশ স্পেস স্টেশন(ISS (international Space Station )যারা মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহী তাদের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুন্তপূর্ণ বিষয়।

সূচিপত্র

স্পেস স্টেশন বা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন কি?

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা স্পেস স্টেশন হল মূলত একটি বড় স্পেস ক্রাফট যেটি পৃথিবীর চারিদিকে প্রদিক্ষন করে এবং এটি এমন একটি জায়গা যেখানে মহাকাশচারীরা বসবাস করতে পারে।

নানা স্পেস এজেন্সি ,নাসা মূলত বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ট্রেনিং পরীক্ষা-নিরীক্ষা ইত্যাদির জন্য এটি তৈরী করে। এটি কোনো একটি নিদির্ষ্ট দেশের সম্পত্তি নয়। সকল দেশের মিলিত প্রচেষ্টার ফল আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন।

প্রাথমিকভাবে স্পেস স্টেশন মহাকাশে নানান পরীক্ষার জন্য একটি তৈরি করা হলেও অনেক সময় সামরিক গবেষণার প্রয়োজনেও স্পেস স্টেশন ব্যবহার করা হয়।

বর্তমানে মহাকাশ স্পেস স্টেশন কয়টি?

বর্তমানে কার্যকরী একমাত্র স্পেস স্টেশনটি হলো আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS (international Space Station )

বর্তমান সময়ের প্রযুক্তি ও মহাকাশ বিজ্ঞান এর দুনিয়াতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন একটি অন্যতম আধুনিক প্রযুক্তির নিদর্শন।

এবার আসুন জেনে নেয়া যাক আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

ISS (international Space Station ) আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটি কোথায় অবস্থান করছে ?কোথায় স্পেস স্টেশন স্থাপিত হয়েছে?

বর্তমানে আইএসএস বা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন পৃথিবীর নিচের অরবিট অবস্থান করছে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৫০ মাইল উপরে।মানবদেহে স্পেস যাত্রার ফলাফল কি হয় এটি সম্পর্কে আলোচনা করাই ISS (international Space Station ) বর্তমান লক্ষ্য।

স্পেস স্টেশনটি কত পুরানো ?আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন তৈরির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন প্রথম সূচনা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে রাশিয়ান বৈজ্ঞানিকদের দ্বারা। এর দুই বছর পর এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস ২০০০ সালের নভেম্বরের ২ তারিখে এখানে প্রথম crew আসে।

এর আরো ১০ বছর পর ২০১১ সালে নাসা এটির নির্মাণ সম্পূর্ণ করে এবং সেই থেকে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনটি তাই মহাকাশচারীদের কাছে পরিচিত।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন এর গঠন ও পরিবেশ

এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন বেশ বড় এবং এটি একটি পাঁচ রুমের বাড়ি হিসাবে মনে করা যেতে পারে। এর মধ্যে দুটি বাথরুম রয়েছে একটি জিমন্যাসিয়াম রয়েছে ও একসঙ্গে ছয় জন মানুষ থাকার পক্ষে এটি উপযুক্ত।

এটির ওজন এক মিলিয়ন পাউন্ডের উপরে। এটির মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া, জাপান এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বৈজ্ঞানিক সহ তাদের রিসার্চ ল্যাব রয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন অনেকগুলি ভাগে বিভক্ত প্রতিটি অংশকে একটি মডিউল বলা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ যোগ্য এই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন স্থাপন এর আগে নানা সময়ে নানা দেশ নিজের জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু স্পেস স্টেশন করতে শুরু করেছিল।

এর মধ্যে প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য হলো Mir যেটি সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি একটি প্রথম একটি মডিউলার স্পেস স্টেশনযেটি মূলত অন্যান্য মহাকাশচারীদের মহাকাশ যাত্রার সময় প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সরবরাহের জন্য তৈরী হয়েছিল। এছাড়াও চীনের তৈরি প্রথম স্পেস এলিভেটর নাম ছিল Tiangong 1 .

কিন্তু এর কোনটি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারেনি।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন সম্পর্কে আরো কিছু মজার তথ্য :

স্পেস স্টেশনে মহাকাশচারীরা ওজনহীন কেন?

স্পেস স্টেশনে মহাকাশচারীরা শরীরে কোন ওজন অনুভব করেন না এই পিছনে রয়েছে নির্দিষ্ট কারণ।

মহাকাশে সাধারণভাবে বলতে গেলে কোনো মধ্যাকর্ষণ থাকে না। পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ মহাকাশে না থাকায় মাইক্রো গ্রাভিটি (Micro Gravity )কারণে মহাকাশচারীরা নিজেদের ওজনহীন মনে করেন। কিন্তু অনেকে এই মাইক্রো গ্রাভিটি কে জিরো গ্রাভিটি (Zero Gravity )বলে মনে করেন যেটা ঠিক নয়।

সাধারণভাবে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ মাইল উপরে অবস্থান করে। এত উচ্চতায় থাকাতে পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণের শুধু ৯০% ওই সময় কাজ করে।

তাই মহাকাশচারীরা নিজেকে অনেক হালকা বোধ করেন।

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে কোন মানুষও যদি ১০০ পাউন্ড হয় পৃথিবীতে তখন এই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন তার ওজন মাত্র ৯০ পাউন্ড হবে। তাই এই কারণেই তিনি হালকা বোধ করেন।

আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন কি পৃথিবী থেকে দেখা যায় ?

এই উত্তর দিতে গেলে বলতে হবে হ্যাঁ। মহাকাশ স্টেশন পৃথিবী থেকে দেখা যায় আপনার পৃথিবী অবস্থানের উপর নির্ভর করে দিনের কোন সময় এই মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে দেখা যাবে এর জন্য নাসা তাদের Spot The Station বলে একটি কটি সার্ভিস চালু করেছে যার সাহায্যে আপনি সহজেই এই আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনটির অবস্থান বুঝে এটি দেখতে পারেন।

এই স্পেস স্টেশনটির রাতের আকাশে একটি খুবই উজ্জ্বল তারার মতো মনে হয়। এটি তারাদের মতো জলে নেবে না বরং একটি স্থির আলো রূপে মনে হয়। রাতের আকাশে চাঁদের পর এটিই সবচেয়ে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হিসেবে মনে হয়।

আইএসএসবি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে পৃথিবীকে দেখতে কেমন লাগে?

আইএসএসবি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে পৃথিবীকে দেখতে অসাধারণ লাগে। সবচেয়ে সুন্দর লাগে যখন পৃথিবীর সারফেস এর উপর অরোরা লাইট খেলে যায়।

এই অরোরা মূলত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সাথে সৌর ঝড় থেকে আসা নানা কণার আদান প্রদানের ফলে রাসায়নিক ভাবে সৃষ্টি হয়। এছাড়াও আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকে পৃথিবীর নানা দেশের যেমন অস্ট্রেলিয়া আফ্রিকা আলোকমালা চোখে পড়ে।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন এর গুরুত্ব কতখানি?

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন এর গুরুত্ব কিন্তু অপরিসীম। প্রায় শূন্য মাধ্যকর্ষণে করা নানা পরীক্ষা মহাকাশ স্টেশন ছাড়া সম্ভব হঠাৎ না। এর ফলেই নাসা সহ নানা দেশ আজ মহাকাশ বিজ্ঞান এ অনেক এগিয়ে গেছে যা ভবিষতের আরো বেশি গবেষণার জন্য একটি ভিত্তিসপান।

পোস্টটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১৪ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা। | দেখুন LinkedIn প্রোফাইল

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।