জিমেইল এর সুবিধা কি?

জিমেইল এর সুবিধা কি

Last Updated on: 14th ডিসেম্বর 2024, 01:44 অপরাহ্ন

জিমেইল এর সুবিধা : আজকে আমরা ইমেইল মানেই জিমেইল বুঝি। কিন্তু এরকমটা সবসময় ছিল না। আপনার কি মনে আছে সেই দিনগুলোর কথা যখন ইমেইল পাঠানো বা রিসিভ করা ছিল অনেক ঝামেলার?

জিমেইল ২০০৪ সালে সেই সমস্যাগুলো দূর করার জন্য একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। এটি ব্যবহার করা সহজ, ফ্রি, এবং এতে এমন কিছু ফিচার রয়েছে যা অনেক কাজকে সহজ করে তোলে। তাই নানা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট পাঠানোর জন্য আজ জিমেইল এই ব্যাবহার করা হয় সবচেয়ে বেশি।

স্ট্যাটিসটিকস বলছে:

২০২৪ সালের মধ্যে, বিশ্বজুড়ে জিমেইলের বাজার শেয়ার ২৯.৫%। দিনে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ইমেইল আদান-প্রদান হয়, যার বড় অংশই জিমেইলের মাধ্যমে।

চলুন জেনে নি জিমেইলের সুবিধাগুলো :

১. ফ্রি এবং খুবই সহজে ব্যাবহার করা যায় 

আপনার Gmail অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে কোনো টাকা লাগে না। এমনকি এটি চালানোও খুব সহজ। আপনি যদি প্রযুক্তি সম্পর্কে খুব একটা জানেন না, তবুও Gmail ব্যবহার করতে পারবেন।

উদাহরণ হিসেবে: ভাবুন, আপনাকে প্রতিদিন ১০-১৫টি ইমেইল চেক করতে হয়। Gmail এর সহজ ন্যাভিগেশন সিস্টেম আপনার সময় বাঁচাবে।

২. আনলিমিটেড ক্লাউড স্টোরেজ (গুগল ড্রাইভ)

Gmail-এর সাথে আপনি ১৫ জিবি ফ্রি স্টোরেজ পাবেন। এই স্টোরেজে আপনি শুধু ইমেইলই নয়, ফাইল, ছবি, এবং ভিডিও রাখতে পারবেন। যদি আরো জায়গার প্রয়োজন হয়, খুব অল্প খরচে বাড়তি স্টোরেজ কেনা সম্ভব।

মজার তথ্য:

প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১,০০০টি ফাইল গুগল ড্রাইভে আপলোড হয়।

ফ্রি স্টোরেজের কারণে, জিমেইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৭৫% মানুষ গুগল ড্রাইভ ব্যবহার করেন।

৩. স্মার্ট ইনবক্স এবং স্প্যাম ফিল্টার

Gmail-এর AI স্প্যাম ফিল্টারিং অত্যন্ত কার্যকর। এটি ৯৯.৯% স্প্যাম ইমেইল ব্লক করতে পারে। ফলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই।

জিমেইল এর স্মার্ট ইনবক্স
জিমেইল এর স্মার্ট ইনবক্স

আপনার কি কখনো এমন হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল খুঁজে পেতে সময় লেগে গেছে? Gmail-এর “Primary, Social, Promotions” ট্যাব সেগুলোকে আলাদা রাখে।

৪. মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট

আপনার ইমেইল শুধু কম্পিউটারে নয়, মোবাইল, ট্যাবলেট, এমনকি স্মার্টওয়াচেও ব্যবহার করা যায়। Gmail অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ও iOS ডিভাইসের জন্য উপযুক্ত।

স্ট্যাটিসটিকস বলছে:

৬৩% Gmail ব্যবহারকারী মোবাইল ডিভাইস থেকে ইমেইল চেক করেন। দিনে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইমেইল শুধুমাত্র মোবাইল থেকে পাঠানো হয়।

৫. সিকিউরিটি ফিচার

আপনার তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য Gmail-এ রয়েছে টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA), যা আপনার অ্যাকাউন্টে অন্য কারো প্রবেশ রোধ করে।
আপনি যদি পাসওয়ার্ড ভুলে যান, তবুও রিকভার করার সহজ অপশন রয়েছে।

মজার তথ্য:
Google-এর সিকিউরিটি ফিচারের কারণে, প্রতিদিন প্রায় ১০০ মিলিয়ন ফিশিং অ্যাটাক বন্ধ করা হয়।

জিমেইল এর স্মার্ট কনফিডেনটিয়াল মোড এর সুরক্ষা আরো যেকুন বাড়িয়ে দেয়। আপনি চাইলে এই কনফিডেনটিয়াল মোড অন করে দিলে যাকে আপনি জিমেইল থেকে মেইল করলেন সে চাইলেও কাউকে সেই ইমেইল ফরওয়ার্ড ,প্রিন্ট বা কপি করতে পারবে না।

জিমেইল এর স্মার্ট কনফিডেনটিয়াল মোড
জিমেইল এর স্মার্ট কনফিডেনটিয়াল মোড

৬. ইন্টিগ্রেশন উইথ গুগল সার্ভিসেস

Gmail অ্যাকাউন্ট থাকলেই আপনি Google Docs, Sheets, Meet, Calendar, এবং আরও অনেক পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে, এক প্ল্যাটফর্মেই আপনার কাজের জন্য সবকিছু পাওয়া যায়।

ভাবুন, আপনি একটি ইমেইলে কাজের ডকুমেন্ট পেলেন। সেটি ডাউনলোড না করেই Google Docs-এ খুলে এডিট করতে পারবেন।

৭. গুগল মিট এবং ভিডিও কনফারেন্সিং

COVID-19 মহামারির সময়ে ভিডিও কনফারেন্সিং কতটা জরুরি হয়ে উঠেছিল তা আমরা সবাই জানি। Gmail-এর মাধ্যমে Google Meet-এ সরাসরি জয়েন করা যায়।

গুগল মিট
গুগল মিট

স্ট্যাটিসটিকস:

২০২৪ সালের মধ্যে Google Meet-এ প্রতি মিনিটে ১০ লাখ মিটিং হচ্ছে। ছোট অফিস এবং শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বাজেট-ফ্রেন্ডলি অপশন।

৮. ইমেইল অর্গানাইজেশন এবং সার্চ ফিচার

আপনার কি পুরোনো ইমেইল খুঁজতে সময় লাগে? Gmail-এর শক্তিশালী সার্চ অপশন আপনাকে সেকেন্ডের মধ্যে যেকোনো ইমেইল খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।

আপনি ইমেইলগুলো লেবেল এবং ফোল্ডারে বিভক্ত করে আরও অর্গানাইজ রাখতে পারবেন।

৯. ইমেইল অফলাইন মোড ব্যবহার

আপনি যদি ইন্টারনেট ছাড়া থাকেন, তবুও Gmail-এর অফলাইন মোডে ইমেইল পড়তে এবং ড্রাফট করতে পারবেন।
এটি এমন লোকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেয় যারা রেগুলার ইন্টারনেট অ্যাক্সেস পান না।

ইমেইল অফলাইন মোড ব্যবহার
ইমেইল অফলাইন মোড ব্যবহার

১০. সহজ অ্যাকাউন্ট রিকভারি

আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে বা পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে Gmail আপনার পরিচয় যাচাই করে দ্রুত সমাধান দেয়। এই ফিচারটি অন্য যেকোনো ইমেইল প্ল্যাটফর্মের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত।

আমাদের চারপাশে হাজারো ইমেইল প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেমন Outlook, Yahoo, এবং Zoho। কিন্তু Gmail-এর সহজ ইন্টারফেস, অ্যাডভান্সড ফিচার, এবং Google ইকোসিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেশন এটি একটি সেরা চয়েস করে তুলেছে।

আপনি যদি Gmail ব্যবহার না করে থাকেন, তাহলে আজই এটি ব্যবহার শুরু করুন। আমি নিশ্চিত, একবার ব্যবহার করলেই এর সুবিধাগুলো উপভোগ করবেন।

সৌমিক ঘোষ

About সৌমিক ঘোষ

সৌমিক ঘোষ একজন ইন্টারনেট মার্কেটিং প্রফেশনাল, ব্লগার। তিনি ইন্টারনেট মার্কেটিং এ প্রায় ১৪ বছর ধরে কাজ করছেন ।ব্লগিং ছাড়াও অবসর সময় এ গান শোনা তার একটি নেশা। | দেখুন LinkedIn প্রোফাইল

View all posts by সৌমিক ঘোষ →

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।