জিমেইল এর সুবিধা: আজকে আমরা ইমেইল মানেই জিমেইল বুঝি। কিন্তু এরকমটা সবসময় ছিল না। আপনার কি মনে আছে সেই দিনগুলোর কথা যখন ইমেইল পাঠানো বা রিসিভ করা ছিল অনেক ঝামেলার? জিমেইল ডট কম ২০০৪ সালে সেই সমস্যাগুলো দূর করার জন্য একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে।
এটি ব্যবহার করা সহজ, বিনামূল্যে ওয়েবমেইল, এবং এতে এমন কিছু ফিচার রয়েছে যা অনেক কাজকে সহজ করে তোলে। তাই নানা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট পাঠানোর জন্য আজ জিমেইল এর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। আসুন জানা যাক জিমেইল আইডি কি এবং জিমেইলের সুবিধাগুলো।
স্ট্যাটিসটিকস বলছে:
২০২৪ সালের মধ্যে, বিশ্বজুড়ে জিমেইলের বাজার শেয়ার ২৯.৫%। দিনে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ইমেইল গ্রহণ ও পাঠানো হয়, যার বড় অংশই জিমেইলের মাধ্যমে।
চলুন জেনে নিই জিমেইলের সুবিধাগুলো (ইমেইল এর সুবিধা):
১. বিনামূল্যে ওয়েবমেইল এবং খুবই সহজে ব্যাবহার করা যায়
জিমেইল কি? এটি একটি বিনামূল্যে ওয়েবমেইল যা খুবই সহজে ব্যবহার করা যায়। আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে কোনো টাকা লাগে না। এমনকি এটি চালানোও খুব সহজ। আপনি যদি প্রযুক্তি সম্পর্কে খুব একটা জানেন না, তবুও জিমেইল সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারবেন। উদাহরণ হিসেবে: ভাবুন, আপনাকে প্রতিদিন ১০-১৫টি ইমেইল গ্রহণ ও পাঠাতে হয়। জিমেইল মোবাইল এর ইন্টারফেস এবং সোয়াইপ সুবিধা আপনার সময় বাঁচাবে।
২. আনলিমিটেড ক্লাউড স্টোরেজ (গুগল ড্রাইভ)
স্পেস নিয়ে চিন্তা নেই। জিমেইল অ্যাকাউন্ট-এর সাথে আপনি ১৫ জিবি ফ্রি স্পেস পাবেন। শুধু ইমেইল পাঠানো নয়, ছবি, ভিডিও, ফাইল ইত্যাদি রাখা যায়। আরও স্টোরেজ চাইলে কিনে নেয়া যায়।
মজার তথ্য:
প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১,০০০টি ফাইল গুগল ড্রাইভে আপলোড হয়। ফ্রি স্টোরেজ এর কারণে, জিমেইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৭৫% মানুষ গুগল বাজ ও ড্রাইভ ব্যবহার করেন।
৩. স্মার্ট ইনবক্স এবং স্প্যাম ফিল্টার
জিমেইল-এর AI স্প্যাম ফিল্টারিং, ৯৯.৯% স্প্যাম প্রতিরোধ করতে পারে। স্প্যাম ফিল্টার এবং কনফিডেনশিয়াল মোড আপনার গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল এর সুবিধা আরও বাড়ায়।

আপনার কি কখনো এমন হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল খুঁজে পেতে সময় লেগে গেছে? Gmail-এর “Primary, Social, Promotions” ট্যাব সেগুলোকে আলাদা রাখে।
৪. মাল্টি-ডিভাইস সাপোর্ট
আপনার জিমেইল আইডি মোবাইল, ট্যাবলেট, আইপ্যাড অ্যাপ, এমনকি স্মার্টওয়াচেও কাজ করে। স্মার্টফোন অ্যাপ হিসেবে জিমেইল মোবাইল খুবই জনপ্রিয়।
স্ট্যাটিসটিকস বলছে:
৬৩% জিমেইল ব্যবহারকারী মোবাইল থেকে ইমেইল চেক করেন। দিনে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইমেইল পাঠানো হয় শুধু মোবাইল থেকেই।
৫. সিকিউরিটি ফিচার
টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (2FA), মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন, এবং কনফিডেনশিয়াল মোড দিয়ে আপনার জিমেইল সফটওয়্যার সুরক্ষিত থাকে।
মজার তথ্য:
প্রতিদিন ১০০ মিলিয়ন ফিশিং অ্যাটাক Google ব্লক করে।
জিমেইল এর স্মার্ট কনফিডেনটিয়াল মোড এর সুরক্ষা আরো যেকুন বাড়িয়ে দেয়। আপনি চাইলে এই কনফিডেনটিয়াল মোড অন করে দিলে যাকে আপনি জিমেইল থেকে মেইল করলেন সে চাইলেও কাউকে সেই ইমেইল ফরওয়ার্ড ,প্রিন্ট বা কপি করতে পারবে না।

৬. ইন্টিগ্রেশন উইথ গুগল সার্ভিসেস
জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকলেই Google Docs, Sheets, Calendar ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। Google ইকোসিস্টেমের এই সুবিধা top email providers প্রতিষ্ঠান হিসাবে জিমেইলকেই এগিয়ে রাখে।
৭. গুগল মিট এবং ভিডিও কনফারেন্সিং
ভিডিও চ্যাট এর জন্য Google Meet আছে যা জিমেইল আইডি থেকে সরাসরি চালু হয়।

স্ট্যাটিসটিকস:
২০২৪ সালের মধ্যে Google Meet-এ প্রতি মিনিটে ১০ লাখ মিটিং হচ্ছে। ছোট অফিস এবং শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বাজেট-ফ্রেন্ডলি অপশন।
৮. ইমেইল অর্গানাইজেশন এবং সার্চ ফিচার
জিমেইল সার্চ এবং অ্যাডভান্স সার্চ ব্যবহার করে পুরোনো ইমেইল এর ব্যবহার খুব সহজ হয়। সার্চ অপশন ও লেবেলিং-এর মাধ্যমে ইমেইল অর্গানাইজেশন আরও উন্নত হয়।
৯. ইমেইল অফলাইন মোড ব্যবহার
ইন্টারনেট ছাড়াও ড্রাফট লেখা ও ইমেইল পড়া সম্ভব, যা ইমেইল এর সুবিধা বাড়ায়।

১০. সহজ অ্যাকাউন্ট রিকভারি
জিমেইল সফটওয়্যার এর রিপোর্টিভ সাপোর্ট এবং রিকভারি টুলস দ্রুত সমাধান দেয়।
আমাদের চারপাশে হাজারো ইমেইল প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেমন Outlook, Yahoo, এবং Zoho। কিন্তু জিমেইল মোবাইল এর সোয়াইপ সুবিধা, অ্যাডভান্সড ফিচার, এবং Google ইকোসিস্টেমের সাথে সংযুক্ত হওয়ার কারণে top email provider প্রতিষ্ঠান হিসাবে জিমেইল হলো সেরা।
আপনি যদি এখনও জিমেইল ব্যবহার না করে থাকেন, তাহলে আজই একটি জিমেইল আইডি খুলে দেখুন। আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন ইমেইল এর সুবিধা অসুবিধা কেমন।
জিমেইল সফটওয়্যার এর আরও কিছু ফিচার যা একে আলাদা করে তোলে:
- জিমেইল ল্যাবস: নতুন ফিচার এক্সপেরিমেন্টের জন্য।
- কি-বোর্ড শর্টকাট: দ্রুত কমান্ড এক্সিকিউশনের জন্য।
- শিডিউলড ই-মেইল: ভবিষ্যতের নির্দিষ্ট সময়ে ইমেইল পাঠানো যায়।
- মোবাইল নাম্বার ভেরিফিকেশন: অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য।
- মেইলট্রেক, POP3, IMAP, মেইলটুক্লাউড – এসব ইন্টিগ্রেশনের সুবিধা।
FAQ
ইমেইল এর জনক কে? Ray Tomlinson, যিনি ১৯৭১ সালে প্রথম ইমেইল পাঠানো শুরু করেন। ইমেইল কত সালে আবিষ্কার হয় জানলে আপনি বুঝতে পারবেন প্রযুক্তি কতটা এগিয়েছে।
gmail এর পূর্ণরূপ কি? Google Mail” — যা আজ বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ইমেইল সফটওয়্যার।