আউটসোর্সিং হল একটা ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া। এটা দিয়ে একটা সংস্থা তাদের কাজ অন্য সংস্থার কাছে দেয়। এটা কোম্পানিকে খরচ কমাতে সাহায্য করে। আউটসোর্সিং এর ফলে যে কাজগুলি আগে নিজের করতে হতো সেগুলি অন্য কোম্পানিকে দিয়ে করিয়ে নেয়া হয়। তথ্য প্রযুক্তি তথা নানা ব্যাবসা ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং আজ বহুল ভাবে ব্যাবহার হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়াটি কোম্পানিকে তাদের প্রধান কাজে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে। তবে সঠিক ভাবে আউটসোর্সিং করতে গেলে একদিকে যেমন দক্ষ ভাবে সেটি পরিচালন করা দরকার তেমনি আউটসোর্সিং এর ফলে আসল কাজের গুণমান ও সব সময় লক্ষ রাখা উচিত। আউটসোর্সিং এর সুবিধা, অসুবিধা, প্রকারভেদ এবং বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা সম্পর্কে আজ আম্ররা এই পোস্ট এ আলোচনা করবো।
যেকোনো কাজ ই আউটসোর্সিং করা যেতে পারে তবে নিচে বর্ণিত কাজগুলি সবচেয়ে বেশি আউটসোর্সিং করা হয়।
আউটসোর্সিং এর নানা সুবিধা অসুবিধা আছে। সঠিক ভাবে আউটসোর্সিং করলে সেটি যেমন একদিকে কোম্পানি এর খরচ বাঁচায়, কম দামে দক্ষ মানবসম্পদ ব্যাবহার করতে দেয় ,অল্প দামে ভালো প্রযুক্তি আর কাজের ঝুঁকি কমায়।
অন্যদিকে আউটসোর্সিং ঠিক ভাবে করতে না পারলে সঠিক কাজের হিসাব পায় যায় না। এছাড়া সঠিক কাজ হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য অতিরিক্ত দেখাশোনা করতে হয়.তাছাড়া অতিরিক্ত আউটসোর্সিং নির্ভর হয়ে গেলে সবসময় নিজের কাজ অন্য কারোর ভরসায় রাখতে হয় কার ফলে অযথা নির্ভরতা তৈরী হয় যেটা কখনই কাম্য নয়।
আউটসোর্সিং সুবিধা | আউটসোর্সিং অসুবিধা |
---|---|
খরচ কমানো | নিয়ন্ত্রণ হারানো |
দক্ষতা বৃদ্ধি | গোপনীয়তা রক্ষা |
ঝুঁকি কমানো | তথ্য নিরাপত্তা |
আউটসোর্সিং এর মূল ধরণ তিনটি। এগুলো হল আন্তর্জাতিক, দেশীয় এবং অভ্যন্তরীণ আউটসোর্সিং।
আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং: এক দেশের সংস্থা অন্য দেশের সংস্থার কাজ করে। এতে সময় এবং খরচ কমে যায়।
দেশীয় আউটসোর্সিং: একই দেশের সংস্থাগুলো একে অন্যের সাথে কাজ করে। এটা উন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
অভ্যন্তরীণ আউটসোর্সিং: একটি সংস্থার একটি বিভাগ অন্য বিভাগের কাজ করে। এটা দক্ষতা এবং সময় সাশ্রয় করে।
ধরণ | বর্ণনা | সুবিধা |
---|---|---|
আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং | একটি দেশের সংস্থা অন্য দেশের সংস্থাকে কার্যক্রম পরিচালনা করে | সময় ও খরচ কমে যায় |
দেশীয় আউটসোর্সিং | একই দেশের সংস্থাগুলো পরস্পরের মধ্যে কার্যক্রম বণ্টন করে | উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধি |
অভ্যন্তরীণ আউটসোর্সিং | একটি সংস্থার একটি বিভাগ অন্য একটি বিভাগের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে | দক্ষতা ও সময় সাশ্রয় |
এই তিনটি ধরণের আউটসোর্সিং এর ধরণ-কে একসাথে দেখলে একটি সংস্থা তাদের কাজ এবং খরচ কমাতে পারে।
প্রধান দুটি কারণে প্রতিষ্ঠানগুলি আউটসোর্সিংয়ের আশ্রয় নেয় – সময় ও অর্থ সাশ্রয় এবং দক্ষতা বৃদ্ধি।
আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের মূল কাজ সহজেই পরিচালনা করতে পারে। তারা খরচ কমাতে এবং সময় সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়।
দক্ষতা বৃদ্ধি হলো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে তারা বাজারের শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করতে পারে। এতে তারা উচ্চমানের পণ্য ও সেবা দিতে সক্ষম হয়।
অপেক্ষাকৃত দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীদের দ্বারা সম্পাদিত কার্যক্রমগুলি সাধারণত আউটসোর্স করা যায়। এগুলির মধ্যে রয়েছে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এবং গ্রাফিক্স ও মাল্টিমিডিয়া ডিজাইন। এছাড়াও, অন্যান্য ক্ষেত্রে যেমন বিপণন, অংশীদারি অভিযোজন, অ্যাকাউন্টিং, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কাজগুলোকেও আউটসোর্স করা যেতে পারে।
ওয়েবসাইট তৈরি, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কার্যক্রমগুলি আউটসোর্স করা যায়। এগুলির মধ্যে রয়েছে:
গ্রাফিকস, ভিডিও, অ্যানিমেশন এবং অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া উপাদানগুলিও আউটসোর্স করা যায়। এর উদাহরণ হল:
আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং হলো বিদেশী মুদ্রা আমদানির একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশ এ প্রতিবছর আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং এর ফলে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলদেশ। ডেইলি ষ্টার এর রিসার্চ অনুযায়ী।
আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং একটা সুবিধাজনক ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া। এটা খরচ কমায়, দক্ষ জনবল পায়, এবং বিশ্বব্যাপী গ্রাহক পরিসেবা দেয়।
সংক্ষেপে, আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া। এটা খরচ কমায়, দক্ষতা বৃদ্ধি করে, এবং বিশ্বব্যাপী গ্রাহক পরিসেবা দেয়। যদিও এতে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে, তবুও এর সুবিধাগুলি অনেক সংস্থার জন্য অনুপ্রেরণামূলক।
দেশীয় আউটসোর্সিং একটা দেশীয় ব্যাবসায়িক প্রক্রিয়া। এটা ব্যবসাকে দ্রুত এবং প্রতিযোগিতামূলক করে তোলে। একই দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের কাজগুলো একটা সাথে সাথে করে।
দেশীয় আউটসোর্সিং এর লক্ষ্য খরচ কমানো, নতুন নতুন কর্মসংন্থান তৈরী করা, আর ছোট বড়ো নানা শিল্পের প্রসার করা । এটা একটি প্রতিষ্ঠানকে তার মূল কাজে ফোকাস করতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে অন্য কাজগুলো অন্য প্রতিষ্ঠানে করে দেয়।
দেশীয় আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নানাভাবে উন্নতি করছে বিশেষ করে বিসনেস প্রসেস আউটসোর্সিং ,নলেজ প্রসেস আউটসোর্সিং এই সব ক্ষেত্রে। বাংলদেশ বর্তমানে ভারতের পরে একটি অন্যতম দক্ষিণ এশিয়ার নলেজ হাব এ পরিণত হয়েছে যেখানে সরকার এর অবদান রয়েছে। সঠিক আর দ্রুত পরিকাঠামো তৈরী থেকে শুরু করে নানা কর এর ব্যাপারে কর ছাড় দেওয়া হচ্ছে। নানা স্পেশালইজেড ইকোনমিক জোনে নানা রকম কর্পোরেট ট্যাক্স থেকে শুরু করে আরো নানা রকম সুবিধা দিচ্ছে সরকার।
“দেশীয় আউটসোর্সিং হচ্ছে ব্যবসায়িক স্বচ্ছলতা এবং দক্ষতার একটি বড় উৎস।”
অ্যাউটসোর্সিং একটা উপায় যা সংস্থাকে অর্থ এবং সময় সাশ্রয় করে। এই পদ্ধতি সাফল্যপূর্ণ হতে হলে কিছু বিষয় দেখতে হবে। যেমন গোপনীয়তা রক্ষা এবং সঠিক জনবল নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
যদি কোন সংস্থা গোপনীয়তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাহা নিরাপত্তা এবং নৈতিকতার দৃষ্টিতে ক্ষতি করতে পারে। সংবেদনশীল তথ্য অন্য কোম্পানির হাতে যাওয়া এই বিষয়টি খুবই সতর্কতার সাথে সামলানো উচিত।
সঠিক জনবল নির্বাচন হল আউটসোর্সিং এর অপরিহার্য অংশ। যদি দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মীদের বাছাই করতে ব্যর্থ হয়, তাহা সাফল্যপূর্ণ হতে পারে না। অযোগ্য জনবল দ্বারা কাজ সম্পাদিত হলে কর্মক্ষমতা এবং ক্ষতিমূল্য বৃদ্ধি পায়।
“গোপনীয়তা বজায় রাখা এবং সঠিক জনবল নির্বাচন হল আউটসোর্সিং এর ক্ষেত্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
এই দুটি বিষয় সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করলে, প্রতিষ্ঠানের আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া আরও কার্যকর ও সফল হতে পারে।
সারা বিশ্বে আউটসোর্সিং এর ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি সংস্থা এটা করতে চাইছে। এটা তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতি, আন্তর্জাতিক ব্যবসা এবং গ্রাহকদের চাহিদা পরিবর্তনের কারণে।
আউটসোর্সিং এর ভবিষৎ বিশেষ করে Business Process Outsourcing (BPO) বাংলাদেশ এ খুবই উজ্জ্বল। ২০২৪ এ বাংলাদেশ এর Business Process Outsourcing (BPO) এর রেভিনিউ বা আয় ছিল প্রায় ০.৫৯ বিলিয়ন ডলার যা মনে করা হয়েছে ২০২৯ এ হয়ে যাবে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার।
প্রযুক্তির উন্নতি এবং বিশ্বায়নের প্রভাবে, আউটসোর্সিং আরও প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে। এটা সহজে পাওয়া মানবসম্পদ, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং খরচ কমানোর সুবিধা দিচ্ছে।
ভবিষ্যতে, আউটসোর্সিং একটি মূল উপকরণ হবে। এটা কোম্পানিগুলির প্রতিযোগিতামূলক অবস্থা রাখবে। এটা নতুন বাজার এবং গ্রাহকসহ বিস্তৃত হতে সাহায্য করবে। তবে, গোপনীয়তা এবং সুরক্ষা বিষয়গুলি মোকাবেলা করতে হবে।
আউটসোর্সিং হল একটি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া। এটা একটি সংস্থা তাদের কিছু কাজ অন্য সংস্থার কাছে দেয়। এটা কোম্পানিকে খরচ কমায় এবং তাদের মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।
প্রযুক্তি, আইটি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, কলকেন্দ্র পরিচালনা এবং হিসাব প্রস্তুত করা আউটসোর্স করা যায়।
আউটসোর্সিংয়ের সুবিধা হল খরচ কমানো, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি কমানো। অপরদিকে, নিয়ন্ত্রণ হারানো, গোপনীয়তা রক্ষা এবং তথ্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত ঝুঁকি এই অসুবিধা।
আউটসোর্সিংয়ের মূল ধরণ তিনটি রয়েছে। এগুলো হল আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং, দেশীয় আউটসোর্সিং এবং অভ্যন্তরীণ আউটসোর্সিং।
কোম্পানি আউটসোর্সিং করে সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে। এটা দক্ষতা বৃদ্ধি এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সাহায্য করে।
ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, প্রযুক্তি সমর্থন, প্রোগ্রামিং এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজ আউটসোর্স করা যায়।
একটি দেশের সংস্থা অন্য দেশের সংস্থার কাজ করে আন্তর্জাতিক আউটসোর্সিং। এটা খরচ কমায়, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং গ্রাহক পরিসেবা দেয়।
দেশীয় আউটসোর্সিংয়ে একই দেশের সংস্থাগুলো কাজ বণ্টন করে। এটা খরচ কমায়, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ঝুঁকি কমায়।
আউটসোর্সিংয়ে গোপনীয়তা রাখা এবং সঠিক জনবল নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ভবিষ্যতে আরও বেশি সংস্থা আউটসোর্সিং করবে। তথ্য প্রযুক্তির অগ্রগতি, আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং গ্রাহক চাহিদা এই ব্যবহার বৃদ্ধি করবে।
ব্রাউজার এক্সটেনশন কী? ব্রাউজার এক্সটেনশন হলো এক ধরনের modular software component যা ব্রাউজারের অভ্যন্তরীণ ফিচারগুলোকে…
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য কখনও কখনও ভুল করে মেসেজ ডিলিট হয়ে যেতে পারে। কিন্তু চিন্তার কিছু…
কীভাবে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে আয় করবেন? ইনস্টাগ্রামে কত ফলোয়ার হলে টাকা পাওয়া যায়? ইনস্টাগ্রাম এখন…
ফেসবুক প্রোফাইলের নাম কোন ফর্মুলায় লিখতে হয়: ফেসবুক আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে…
MySQL কি: এক সহজ ব্যাখ্যা যেকোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে ডেটা ব্যবস্থাপনা খুবই প্রয়োজন। MySQL…
মাইক্রোকন্ট্রোলার কি? মাইক্রোকন্ট্রোলার (Microcontroller) হল একটি ছোট ইলেকট্রনিক চিপ যা একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে…